Home পুজোর গল্প ঐতিহ্যবাহী নন্দীবাড়ির পুজো

ঐতিহ্যবাহী নন্দীবাড়ির পুজো

by banganews

সময়কাল দেখলে লক্ষ্য করব, ব্রিটিশ সময়কাল। সে সময় আরামবাগের হাটবসন্তপুর গ্রামের জমিদার ছিলো নন্দীরা। তৎকালীন সময়ে নন্দীবাড়ির কোন এক বংশধর দুর্গাপূজার সূচনা করেছিলেন। এ পুজো প্রায় সাড়ে তিনশ বছরের পুরনো। তারপর কেটে গেছে বেশ কয়েক যুগ বলা যেতে পারে। বর্তমানে জমিদারের বংশধরেরা সেই রাজ ঐতিহ্য সেভাবে ধরে রাখতে পারেনি। সেই সময়ের নন্দী বাড়ির দুর্গাপুজো আর এখানের পুজোর মধ্যে ফারাক অনেকটাই চোখে পড়ার মত।

পরিবারের সদস্যরা আগে এই দুর্গা পুজোতে যেভাবে আনন্দ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পুজো উপভোগ করত সেইসব আজ অতীত। পরিবারের বর্তমান সদস্যরা জানান অর্থ অভাবে বেশ কিছুটা হলেও কমেছে পুজোর জৌলুস। খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন আর হয়ে ওঠে না সেই আয়োজন। তবে প্রাচীন জমিদারি প্রথা মেনেই আজও পূজা হয় নন্দিবাড়ী দুর্গা দালানে। নাই বা থাকল সেই নাম যশ জৌলুস , এখনো সেই ঐতিহ্যবাহী নাম কিন্তু রয়ে গেছে নন্দিবাড়ীর। গ্রামের মানুষ এই নন্দী বাড়ী নামেই চেনেন সবাই। তবে অন্যান্য সময়ে কেউ খোঁজ খবর না রাখলেও দুর্গা পুজোতে নন্দীর দালানে দুর্গা প্রতিমা দর্শন করতে একবারের জন্য হলেও আসেন গ্রামের বাসিন্দারা । পুজো ঘিরে চারদিন ধরে চলে বিভিন্ন ছোটখাটো অনুষ্ঠান । সেই প্রাচীন কালের তৈরি জমিদার বাড়ি । বেশিরভাগ অংশই আজ প্রায় ভগ্নদশা ।কোন রকমে টিকে আছে এই দালান টুকু। একসময়ে দুর্গাপূজাতে এই নন্দীবাড়ির জমিদারের বংশধরেরা নিমন্ত্রণ করে গোটা গ্রামের ব্রাহ্মণ ভোজন ও নর নারায়ণ সেবা করতেন, এখন আর তা সম্ভব হয়নি ।

আরো পড়ুন 

অসুরবিহীন দেবী দুর্গার দুটি হাত

পরিবারে সদস্য সংখ্যা বাড়লেও তা ছোট ছোট পরিবারে ভাগ হয়ে গেছে অনেকগুলি পরিবারে। পরিবারের অনেক সদস্যই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বা কলকাতায় কর্মসূত্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন । এছাড়াও কেউ আবার কর্মসূত্রে পাড়ি দিয়েছে বিদেশে । তারা আর সেইভাবে এই জমিদার বাড়িতে যোগাযোগ রাখেনা। বর্তমানে কয়েকজন সদস্য হাটবসন্তপুর গ্রামের নন্দী বাড়িতেই থাকেন তারাই এই পূজোটি কে বাঁচিয়ে রেখেছেন। পরিবারের সদস্য প্রশান্ত কুমার নন্দী জানান, আমার বয়স প্রায় ৮০ বছর বাপ ঠাকুরদার আমল থেকেই দেখে আসছি আমাদের পুজো । নন্দী বাড়িতে দেবী দুর্গার রূপ হর পার্বতী এখানে শিব ও দেবী দুর্গার দুটি করে হাত । সঙ্গে থাকেন কার্তিক, গণেশ ,লক্ষ্মী, সরস্বতী,কলা বউ, জয়া ও বিজয়া তবে কোনো অসুরের মূর্তি থাকে না ।এই তার বিশেষত্ব।
ধুঁকতে ধুঁকতে হলেও জমিদারবাড়ির এ পুজো আজও জেগে আছে আর জাগিয়ে রেখেছে গ্রামবাসীকে।

You may also like

Leave a Reply!