Home পুজোর গল্প কোন্নগরের শকুন্তলা কালীবাড়ির পুজো

কোন্নগরের শকুন্তলা কালীবাড়ির পুজো

by banganews

হুগলি জেলার কোন্নগর। এখানে শকুন্তলা কালী বাড়ী মন্দিরের পুজো এবার ১৩২ বছরে পড়ল। করোনার জেরে গত বছর কোনো রকমে ঘট পুজো হয়েছিল। এবার অবশ্য করোনাবিধি মেনে পুজো হবে।

এই বাড়ির এই পুজোর মূল আকর্ষণ হল শুরু হয় সন্ধ্যা রাতে ভোর হওয়ার আগেই মাকে নিরঞ্জন দেওয়া হয়। পাশাপাশি মা কালীকে গা ভর্তি সোনা-রুপোর অলঙ্কার দিয়ে সাজানো হয় কালীপুজোর দিন। এই মন্দির কোন্নগরবাসীর কাছে খুবই গর্বের ।

শকুন্তলা কালী মন্দিরের পুজোর রীতি ও নিয়ম কিন্তু বেশ প্রাচীন। শুধু দীপান্বিতা কালীপুজোর দিন এই মন্দিরে প্রতিমার প্রবেশ ঘটে। একরাতেই বিসর্জন। বাকি সারা বছর শুধু বেদিতেই পুজো হয়। সর্বশক্তিমান মহামায়াকে একই সঙ্গে সাকার ও নিরাকারে পুজো করার এই রীতি বাংলার আর কোথাও দেখা যায় কিনা জানা নেই।

আরো পড়ুন

ভূত চতুর্দশী কেন হয়?

কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথির সন্ধ্যের পর দেবীমূর্তি কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় মন্দিরে। সন্ধ্যে সাড়ে ছটা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে মন্দিরে প্রবেশ করে প্রতিমা। এরপর মূল্যবান সোনা ও রুপোর গয়নায় সাজানো হয় মা রক্ষাকালীকে। শুরু হয় পুজো, চলে সারা রাত। এই সময়ের মধ্যে প্রতি বছর হাজার থেকে দেড় হাজার পাঠা বা ছাগল বলি হয়, রক্ত গঙ্গা বয়ে যায় এই স্থানে। অনেকেই মানত করেন বিভিন্ন মনস্কামনা করে। পূরণ হলে তাঁরাই পাঁঠাবলি দেন।

কেন এই মন্দিরের নামকরণ সেটা নিয়ে এক মজার গল্প রয়েছে। প্রাচীন কালে এই মন্দির চত্বরে এক বিশাল গাছ ছিল। ওই গাছে প্রচুর শকুন এসে বসতো, সেই থেকেই এই মন্দিরের নাম শকুন্তলা কালী বাড়ি হয়ে যায়।

নিতান্ত অনাড়ম্বর একটি মন্দির, সাদামাটা গঠনশৈলী। নাটমন্দিরটি বিরাট বড়, তার মাঝখানে একটি হাঁড়িকাঠ। এখানেই হয় বলি। মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে একটি শ্বেত পাথরের বেদি। তবে এই বেদির নিচে তিনকোনা লাল রঙের আরেকটি বেদি আছে। জানা যায়, একসময় এই মন্দিরে ডাকাতদের আনাগোনা ছিল। তাঁরাই মন্দিরে পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত। আর ডাকাতির পর ফিরে এসে পুজো দিত। তবে এই বিষয়ে কোনও তথ্য প্রমান নেই। যেমন জানা যায় না কে বা কারা এই মন্দির নির্মান করিয়েছেলেন।

শকুন্তলা কালী মন্দিরের পুজো বাংলার কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম।

You may also like

Leave a Reply!