Home লাইফস্টাইল করোনার উদ্বেগ বাড়িয়েছে পিরিয়ডের সমস্যা

করোনার উদ্বেগ বাড়িয়েছে পিরিয়ডের সমস্যা

by banganews

পিরিয়ডের সমস্যা একটু বেশি করেই মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনা আবহে । সময়ের হেরফের তো আছেই, রয়েছে পরিমাণগত সমস্যাও। দু’-এক মাস পিছিয়ে গেলে বা না হলে, গর্ভসঞ্চারের ভয় বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। শহরের বেশ কয়েক জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের ক্লিনিকে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে ইদানীং ভিড় বাড়ছে বলে দাবি তাঁদের। কেউ কেউ আবার সংক্রমণের ভয়ে ক্লিনিকে না গেলেও ফোনে যোগাযোগ রাখছেন চিকিৎসকদের সঙ্গে।
সাধারণত প্রতি ২৮ থেকে ৩৫ দিন পর পর একজন নারীর পিরিয়ড হয়ে থাকে। ১২ বছর থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে এমনটিই হয়ে থাকে।প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর নিয়মিত ও সময়মতো পিরিয়ড হওয়াটা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। তা যদি অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তখন শারীরিক সমস্যা হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীদের ঋতুচক্র ( পিরিয়ডকাল সাইকেল) একই থাকে। এক সপ্তাহ দেরি হওয়াটা স্বাভাবিক বলেই ধরা যায়। ডেটের চারদিন আগে বা ছ সাতদিন পরে হওয়া মোটামুটি স্বাভাবিক৷ আটদিন বা তার বেশিদিন দেরি হলে তাকে ‘লেট’ বলে গণ্য করতে পারেন। বেশকিছু কারণে পিরিয়ড সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে বা দেরি হতে পারে। যেমন-
গর্ভাবস্থায় পিরিয়ড বন্ধ থাকে এ কথা আমাদর জানা৷ এছাড়া ,
হরমোনাল সমস্যা – টিনেজ বয়সী ও মধ্যবয়সী নারীদের মাঝে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর পেছনে কারণটা হলো হরমোন।

আরও পড়ুন বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের বাড়িতে করোনা ভাইরাসের থাবা

উদ্বেগ – লম্বা সময় স্ট্রেসে থাকলে অনেকেরই পিরিয়ড লেট হতে পারে।
আর্লি প্রেগনেন্সি লস: একজন নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তা জানতেন না, এরপর নিজে থেকেই তার মিসক্যারিজ বা গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনায় সাধারণ পিরিয়ডের তুলনায় কিছুদিন পর ভারী রক্তপাত হতে পারে, যাকে অনেকেই লেট পিরিয়ড বলে ধরে নেন।
কম ওজন: ওজন কম হলে সময়মতো পিরিয়ড নাও হতে পারে। এমনকি কিছুদিন বন্ধও থাকতে পারে।
ফাইব্রয়েডস: জরায়ুতে টিউমার ধরণের এক ধরণের বৃদ্ধি হলো ফাইব্রয়েডস। এগুলো পিরিয়ডের স্বাভাবিক চক্রকে বাঁধা দিতে পারে।
হরমোনাল বার্থ কন্ট্রোল: জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা, যেমন পিল, প্যাচ, ইনজেকশন, আইইউডি- এগুলো ব্যবহার করলে পিরিয়ড লেট হওয়া বা পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক।
স্বাস্থ্য সমস্যা: মনোনিউক্লিওসিস, ঠাণ্ডা, সর্দি, গলার ইনফেকশন- এ ধরণের সমস্যায় পিরিয়ড লেট হতে পারে। তবে বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণেও পিরিয়ড লেট হতে দেখা যায়।
তবে করোনা পরিস্থিতিতে পিরিয়ডের সামান্য হেরফের নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।কারণ সংক্রমণের ভয়ে সকলেরই মানসিক চাপ বেড়েছে। এমনিতেই লকডাউনের মধ্যে খাওয়া-ঘুম-ব্যায়াম, সব নিয়মেই ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। জীবনেও তার প্রভাব পড়েছে।ডাক্তার বলছেন, মানসিক চাপ বাড়লে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের কাজে কিছুটা ব্যাঘাত হয়। যার হাতে আছে পিটুইটারি গ্রন্থির ভার, যে নিয়ন্ত্রণ করে গর্ভাশয়কে। আর গর্বাশয়ের কার্যকারিতা এলোমেলো হওয়ার অর্থ স্ত্রী হরমোনের তারতম্য। তারই ফলে পিরিয়ডের গোলমাল দেখা যায়। কখনও এর সঙ্গে শুরু হয় চুল পড়া ও ব্রণর উপদ্রবও। কারও আবার ওজনও কমে।

আরও পড়ুন মৃত এক মহিলা পরিযায়ী শ্রমিক – ওড়িশায় কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রের বাইরে মিলল মৃতদেহ

করোনার কারণে মানসিক চাপ আরও বাড়তে থাকলে শুধু পিরিয়ডের গোলমাল নয়, মেয়েদের ক্ষেত্রে আরও অনেক শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। কাজেই নিজেকে স্ট্রেস ফ্রি রিল্যাক্স রাখুন।
• যোগা ও মেডিটেশনে মানসিক চাপ কমে,নিয়মিত মিনিট ২০ অন্তত যোগা অভ্যাস করুন।
• যোগা বা মেডিটেশনের অভ্যেস না থাকলে অন্তত ৩০ মিনিট একটু জোর কদমে হাঁটুন। এতেও মানসিক চাপ কম থাকে।
• পিরিয়ড সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা তৈরি হলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে তাঁর পরামর্শ মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান ও ওষুধ খান।
• ঘরে বানানো সুষম খাবার খান। প্রসেসড খাবার থেকে দূরে থাকুন, রাতে নিয়মিত ৮ ঘণ্টা ঘুমান,
যেসব নারীর মেনোপজের বয়স হয়ে এসেছে তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আরও বেশি জরুরী। কারণ মেনোপজের পর পরই অনেক রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। একবার পিরিয়ড লেট হলে চিন্তিত হবার কিছু নেই। তবে পিরিয়ডের দিকে খেয়াল রাখুন। তিন মাস টানা পিরিয়ড না হলে, বছরে নয়বারের কম পিরিয়ড হলে, বা প্রতিবার পিরিয়ড হবার মাঝে ৩৫ দিনের বেশি বিরতি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।

You may also like

Leave a Reply!