Home দেশ রঙিন জগতে এবার বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী

রঙিন জগতে এবার বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী

by banganews

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে 1955 সালের 26 শে অগাস্ট মুক্তিপ্রাপ্ত সত্যজিৎ রায়ের প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র হল পথের পাঁচালী।বিংশ শতাব্দীর বাংলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনধারা চিত্রায়িত করা হয়েছে। পথের পাঁচালীর সাথে বাঙালির আবেগ, আনন্দ, দুঃখ জড়িয়ে আছে। অপু-দুর্গার আমচুরি থেকে রেলগাড়ি দেখতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে বাঙালিরা নিজেদের ছেলেবেলা খুঁজে পায়।

সোনাডাঙার মাঠ, ইছামতীর জল, নীলকুঠির মাঠ, মধুখালির বিল, নোনা ফলের সাথে জড়িয়ে থাকা ইন্দির ঠাকরুণ, হরিহর , সর্বজয়া, দুর্গার পুতুলের বাক্স, অপুর পাঠশালা আজও প্রতিটি বাঙালিকে সমানভাবে টানে। সাদাকালো ফ্রেমের দুনিয়ায় বাঙালি প্রথম খুঁজে পেয়েছিল নিজেকে? কিন্তু এই সাদা কালো দুনিয়ায় কেমন ছিল রঙের প্রলেপ? কেমন ছিল নিশ্চিন্দিপুর? অবশেষে রঙিন হয়ে উঠল পথের পাঁচালী আমেরিকার মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির বাঙালি প্রফেসার অনিকেত বেরা এবং বাংলাদেশী ভিডিও এডিটর রাকিব রানার হাতে।

আরো পড়ুন- শুরু হলো জেমস ক্যামেরুনের অবতার ২ – এর শুটিং

একটি ছোটো ভিডিও ক্লিপিংস এর সঙ্গে জুড়ে আছে মূল সিনেমায় ব্যবহৃত রবিশঙ্করের যান্ত্রিক অনুষঙ্গ। রাকিব বলেন ফেব্রুয়ারি মাসে এক রাশিয়ান ইউটিউবার ডেনিস শিরিয়েভ প্রথম যুগের ফরাসী চলচ্চিত্র ” দ্য অ্যারাইভাল অফ আ ট্রেন” এর দৃশ্যপট রঙিন করে তোলেন, এখান থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে তিনি এই ভিডিও টি বানিয়েছেন। যদিও এইসময় অনিকেত বেরার 14 মে বানানো ভিডিওটি দেখে তিনি নিজের ভিডিও টি সরিয়ে নিয়ে একটি নতুন বানানো কোলাজ ভিডিও শেয়ার করেছেন।

আরো পড়ুন- মালয়ালম নিজে একবর্ণও বলতে পারেন না তবু ছবি বানিয়েছেন সেই ভাষাতেই !! ছবিটি দেখানো হবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে

অনিকেত বেরার বানানো 2:14 মিনিটের প্রথম ভিডিওটি যেখানে তিনি রবিশঙ্কর নন নীল দত্তের বানানো অপুর থিম মিউজিকটি ব্যবহার করেছেন যা গোটা বিশ্বের সত্যজিৎ রায়ের অনুগামীদের নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনি বলেন সত্যজিৎ রায়ের অনুগামী হিসেবে তিনি তার ভালোবাসার চলচ্চিত্রটির থেকে এই ভিডিওটি পরীক্ষামূলক ভাবে বানিয়েছেন। যদিও এটি চলচ্চিত্রটি দেখার মাধ্যম নয় খালি একটি পরীক্ষামূলক ভাবনা। আমেরিকার অনেক গবেষক এবং অধ্যাপক অনেক পুরোনো ফুটেজ নিয়ে পরীক্ষা করেছেন তিনি তাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এই ভিডিওটি পরীক্ষামূলক ভাবে বানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন যে এই ভিডিওটি রঙিন করা হয়েছে ডিপ নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স সাধারনত মানুষের মস্তিষ্কের মতো কাজ করে। যদিও এ. আই ছবিটির সত্যিকারের রঙ বা ছবিটা কেমন দেখতে না জানলেও কল্পনা করে নিতে সক্ষম। যদিও এই প্রযুক্তি খুব নতুন যেটা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে নতুন নতুন প্রচেষ্টার দ্বারা।

আরো পড়ুন- প্রথমবার স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতে বিদ্যা ব্যালান

বেরার কলকাতা নিবাসী পরিবার এটা দেখে খুব খুশি। যদিও স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই তবুও নেতিবাচক মন্তব্যও কম নয়। সন্দীপ রায়কে জিজ্ঞাসা করা হে তিনি বলেন,
আমি এই ভিডিওটি খুব বাজে কাজ বলব না। তবে আমি এই ধরনের ট্রেন্ডের সমর্থক নয়। ডিরেক্টর অতনু ঘোষ বলেছেন যে এটি একটি আকর্ষণীয় পরীক্ষা তার বেশি কিছু নয়।
সে যাই হোক তবুও সব বিতর্ক ছাড়িয়ে এই মায়াময় অনুভূতি বাঙালির মনে থেকে যাবে অনেকদিন। ঠিক যেমন বিভূতিভূষণ পথের পাঁচালী তে লিখেছিলেন… ” দিন রাত্রি পার হয়ে, জন্ম, মরন পার হয়ে, মাস, বর্ষ, মন্বন্তর, মহাযুগ পার হয়ে চ’লে যায়…. তোমাদের মর্মর জীবন- স্বপ্ন শেওলা-ছাতার দলে ভ’রে আসে, পথ আমার তখনও ফুরোয় না…. চলে..চলে….চলে….. এগিয়েই চলে….”।

You may also like

Leave a Reply!