আবারও এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এলো, এদিনের সাংবাদিক বৈঠকের গোটা সময়টাই প্রশাসনের ওপর আনা রাজ্যপালের অভিযোগ গুলির কৈফিয়ত দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি শুরু থেকেই রাজ্যপালের তরফে আনা যেকোনো অভিযোগকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে খারিজ করে দেন। তার মতে, রাজ্যপালের পদটি অত্যন্ত সম্মানের কোনো একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষপাত দুষ্ট কোনো কথা বলা তার উচিত নয়।
আরও পড়ুন হাইকোর্টের দ্বারস্থ পদ খোয়ানো সচিন পাইলট
কেন্দ্রের সঙ্গে প্রায় প্রতিটি বিষয়ে রাজ্য দ্বিমত পোষণ করায় তা প্রকৃতপক্ষে রাজ্যবাসীদের জন্য ক্ষতিকর সাব্যস্ত হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তারই প্রত্যুত্তরে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন স্টেটের কাজ প্রশাসনিক স্তরে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করা, রাজ্য তাই করছে, একটা সরকার কাজ করবে নাকি কেবল কেন্দ্রকে জবাবদিহি করবে?
২০১৭ সালে পূর্বের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির সময়ে তার অনুমত্যানুসারে শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব প্রশাসনিক পরিবর্তন সাধিত হয় তা সম্পর্কে সঠিক ভাবে অবহিত নন রাজ্যপাল – এমনটাই দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি আরও জানান যে রাজ্যপাল বলছেন মুখ্যমন্ত্রী চিঠির জবাব দেয় না, অথচ প্রতিটি ছোটো-খাটো বিষয় নিয়ে ওনার সাথে কথোপকথন চলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন জননির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি তার ভাষাপ্রয়োগ ‘চাকরবাকরের’ মতো। উওরবঙ্গের কোচবিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ অনেকেই কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রাজ্যপালের ডাকা ভার্চুয়াল কনফারেন্সে কোনো যোগদান না করায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। রাজ্যের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে উপাচার্যদের আচরণে তিনি অপমানিত বোধ করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশিকা মানতে না পারার কথা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী লিখিত দরখাস্তে জানিয়েছেন। শিক্ষা দফতরের বিধি অনুযায়ী প্রতিটি য়ুনিভার্সিটি নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে পরীক্ষা বিষয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান রাজ্যপালের উচিত ভিসিদের সম্মান করা, পরীক্ষা বিষয়ে নিয়ম মেনেই সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি রাজ্যপালের মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন যে উপাচার্যরা নাকি ট্রেড ইয়ুনিয়ন করছেন। একটি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের তরফে এই মন্তব্যে বিরক্ত তিনি।
এদিন সকালে ইয়ুজিসির কথা অমান্য করার ফল ভুগতে হবে এমন হুশিয়ারি দিয়ে টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল, প্রত্যুত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রদের পক্ষ নিয়ে পরীক্ষার সম্ভাবনা এই পরিস্থিতিতে নাকচ করে দেন। তিনি এও জানান রাজ্যের সম্মানিত উপাচার্যের গায়ে আঁচ এলে বাংলা ছেড়ে কথা বলবে না।
আরও পড়ুন কর্মীদের ৫ বছর বেতনহীন ছুটি দিল এয়ার ইন্ডিয়া
অন্যদিকে রাজ্যপালের তরফের বক্তব্যে এই যে, তার ডাকা ভার্চুয়াল কনফারেন্সে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপস্থিত থাকা ভিসিদের জন্য অনুচিত। এছাড়াও পরীক্ষা না নিয়ে পড়ুয়াদের এক বছর সময় নষ্ট করা হলে তাদের ভবিষ্যতের দায় কে নেবে? রাজ্যসরকার তরফে এসব ইস্যুকে অবহেলা করা হচ্ছে – এই তার অভিযোগ।