পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে অনেক ঝড় ঝাপ্টা বয়ে গেছে। অনেক দুর্যোগ, মহামারী সহ্য করেছে পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু সব দুর্যোগকেও ছাড়িয়ে গেছে গত তিনদিন আগে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমফান। প্রচুর ক্ষতি হয়ে গিয়েছে রাজ্যের। মাইলের পর মাইল এলাকা জলে ডুবে গেছে। শহর থেকে শহরতলি অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা এখনো বিঘ্নিত। জল নেই, মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ৷ এই ভয়াবহ ঝড়ের প্রভাবে সারা রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে 72 জনের। এর মধ্যে আবার করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ২২ টি বিরোধী দলের বৈঠকে উঠে আসে করোনা ও আমফান নিয়ে নানা কথা। ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যোগ দেন ওই বৈঠকে।
আরো পড়ুনঃ আমফানের দাপটে পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় কত ক্ষতি একনজরে
সম্মিলিত প্রস্তাবে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার দাবি ওঠে। একেই করোনা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ তার উপর এই আমফান তছনছ করে দিয়ে গেল রাজ্যকে। এই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলা এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরাহার জন্য একযোগে বৈঠকে বসে বিরোধীরা। শুক্রবার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ২২টি দলের প্রতিনিধিরা। মমতা ব্যানার্জী এই দূর্যোগকে ন্যাশানাল ডিজাস্টারের থেকেও বেশি বলে উল্লেখ করেছেন ।
সনিয়া, রাহুল ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২২টি বিরোধী দলের বৈঠকে উঠে আসে করোনা আর আমফান প্রসঙ্গ। কিন্তু আইন কী বলছে? ঠিক কোন পরিকাঠামোতে কোনো বিপর্যয়কে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করা যায়? বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে ঘটা দুর্যোগ, দুর্ঘটনা বা অবহেলার কারনে ঘটে যাওয়া ঘটনা যার ফলে পরিবেশের ক্ষতি, প্রাণনাশ, সম্পত্তিনাশ হয় সেই ঘটনাকে জাতীয় বিপর্যয়ের পর্যায়ে ফেলা যায়।
আরো পড়ুনঃ ১৫০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাবাকে গুরুগ্রাম থেকে দ্বারভাঙ্গা নিয়ে এলেন মেয়ে।
দশম ফিনান্স কমিশন জানায় কোনো দুর্যোগ যদি কোনো রাজ্যের এক তৃতীয়াংশকে প্রভাবিত করে তাহলে তাকে “বিরলতম তীব্রতার একটি জাতীয় বিপর্যয়” বলা যেতে পারে। শুক্রবারই রাজ্য পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন আমফানে রাজ্যের অপরিসীম ক্ষতি হয়েছে। ৭২ জন মানুষ মারা গেছেন। ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ। এটি জাতীয় বিপর্যয়ের থেকেও বড় দুর্যোগ। শুধু মমতা বন্দোপাধ্যায়ই নন, সমস্ত বিরোধী দলই আমফানকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করার দাবি তুলেছে।