কলকাতা, ২৪ অগাস্ট, ২০২০ঃ করোনা সহ রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ নবান্নে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন।
বৈঠকে ৪ জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তাদের অঞ্চলের বিশেষ বিশেষ সমস্যাগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করেন।
গোটা রাজ্যের রাস্তাঘাটের করুণ অবস্থা নিয়ে কথা উঠলে তিনি বলেন “বর্ষায় প্রতিবারই রাস্তার অবস্থা খারাপ হয় তবুও কোন রাস্তা খারাপ, কোথায় জল জমছে দেখতে হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি মেরামতির কাজ করতে হবে।”
আরও পড়ুন গলায় ফাঁস, বাসের সিটে চালকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হুগলিতে
সব রাজ্যে বন্যার সমস্যা নেই কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক একটু বৃষ্টিতেই নদীগুলো ফুলে-ফেঁপে ওঠে, তাই যেসব জেলায় বন্যার সমস্যা রয়েছে, সেইসব এলাকায় সকলকে ২৪ ঘন্টা সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং জল ছাড়া নিয়ে ডিভিসি কে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, “জল ছাড়ার আগে আমাদের অনুমতি নিতে হবে, সাধারণ মানুষকে অন্যত্র সরাবার সময় দিতে হবে। জল ছাড়ার পর শুধু একটা ইউনিট লিখে নোটিশ জারি করলেই হবে না।” পাশাপাশি প্রতি জেলায় জেলাশাসকের কন্ট্রোলরুম তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন। আম্ফানের পরে বাঁধ মেরামতির কাজ হয়েছে কিন্তু সেই বাঁধ ভেঙে ইতিমধ্যেই জল ঢুকছে। আগামী পাঁচ দিনের নিম্নচাপে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে তাই সব জেলা ঘুরে পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি।
“প্রশাসনিক কাজকর্ম যথেষ্ট স্বচ্ছতার সঙ্গে হচ্ছে তা সত্ত্বেও কিছু লোক ঘেউ ঘেউ করছে” নাম না করেই আজ নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে আঙুল তুললেন।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে রাজ্যে স্কুল গুলি তাই সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেল বিতরণও স্থগিত। সে প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্কুল বন্ধ থাকলেও সাইকেল বিতরণ বন্ধ রাখা যাবে না। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সাইকেল বিতরণের কাজ শেষ করতে হবে।”
আরও পড়ুন করোনার উপসর্গ চেনা এখন আরও সহজ, ফলে সুবিধা মিলছে চিকিৎসা এবং গবেষণাতেও
পাশাপাশি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যে সংস্থা বাংলায় কারখানা করতে চায়, তাদের সাইকেল তৈরির বরাত দেওয়া হবে”
বর্তমানে অন্যান্য রাজ্য থেকে সাইকেলের বিভিন্ন অংশ এনে পরে তা বাংলায় জুড়ে সাইকেল তৈরি করা হয় কিন্তু বাংলায় সাইকেল কারখানা থাকলে বেকারত্বের সমস্যা অনেকটা কমবে বলে আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী।
রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর 24 পরগনা এবং হাওড়ায় করোনাতে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সে বিষয়ে চিন্তা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মানুষকে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে আরো বেশি করে সচেতন করতে হবে।”
করোনার ভয়ে কাজ বন্ধ থাকবে না প্রয়োজনে সরকার আরো মাস্ক এবং স্যানিটাইজার দিয়ে সাহায্য করবে। করোনাকে হারিয়ে বাংলা জিতবে এমন বিশ্বাস রেখেই কাজ করতে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।