২০ জন সেনা জওয়ানের হত্যার ঘটনা মনে রাখবে ভারতবাসী। শহিদ সেনাদের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করতে গিয়ে এমনই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ একই সুর শোনা গিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর গলায়৷ এবার সম্ভবত তারই প্রস্তুতি শুরু করে দিল ভারত৷ পাল্টা জবাবের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। লাদাখের সীমান্ত এলাকায় তার কাজ চলছে জোরদার৷ চিনা সীমান্তে ভারতীয় গ্রামগুলি একে একে খালি করা হচ্ছে৷ প্যাংগং লেকের আশেপাশে বসবাসকারীদের মোবাইল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ এমনকী শোনা যাচ্ছে যে, যোগাযোগের জন্য যে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা ব্যবহার করে সেনা, তাও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে৷ শুধুমাত্র অপরেশনের জন্য যেসব ফোন চালু রাখা প্রয়োজন, সেই গুলিই কাজ করছে৷ লেহ শহরে সেনা ছাড়া সাধারণ মানুষের যাতায়াতও বন্ধ করা হয়েছে৷ শ্রীনগর-লে হাইওয়ে বন্ধ হয়েছে সাধারণ নাগরিকদের জন্য৷
আরো পড়ুন – পরিকল্পনা করেই সংঘর্ষ বাধিয়েছে চীন : বিস্ফোরক অভিযোগ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের
ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য ১৯ জুন সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ যেখানে চিন-ভারতের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে এবং কীভাবে চিনকে উত্তর দেওয়া যায়, তারই মতামত চাওয়া হবে সব দলগুলি থেকে৷
তবে এই ছবিটার উল্টো পিঠও আছে বইকি। এই সংঘর্ষের আবহেই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার চিনা বহুজাতিক নির্মাণ সংস্থা -সাংহাই টানেল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ১,১২৬ কোটি টাকার এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ওই চিনা নির্মাণ কোম্পানি ভারতে রেলপথ তৈরির কাজ করবে। জানা যাচ্ছে এর ফলে দিল্লি ওমের আঠের মধ্যেকার দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার পথ মাত্র ৬২ মিনিটের মধ্যে অতিক্রম করা যাবে। এছাড়াও ওই কোম্পানি ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আঞ্চলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম এর প্রকল্পে কাজ করবে। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মারকান্দে কাটজু টুইট করে মোদি সরকারের প্রবল সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, চিনা সেনাবাহিনী লাদাখের পুরো উপত্যকাকে অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে, কিন্তু ভারত সরকার একেবারেই উদাসীন। উটপাখির মতো চোখ বন্ধ করে বসে আছে।
আরো পড়ুন – ভারত চীন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে মধ্যস্থতার কোনো পরিকল্পনা নেই – ডোনাল্ড ট্রাম্প
কাজু তাঁর টুইটে এ দেশের সরকারকে রোমান সম্রাট নেরো কিংবা মুন্সি প্রেমচাঁদের শতরঞ্জ কি খিলাড়ি এবং মির্জা সাহেবের অনভিজ্ঞ খেলার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি লিখছেন, এইরকম একটা পরিস্থিতিতে মোদি সরকার চিনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন, তা স্পষ্ট নয়।