এইচওয়ানবি ভিসা স্থগিত করল আমেরিকা ৷
আমেরিকায় কাজ করার জন্য যে ভিসা দেওয়া হয় তাকে H-1B Visa বলা হয়ে থাকে ৷ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই ভিসা জারি করা হয়ে থাকে ৷ আর এই ভিসা সবচেয়ে বেশি ভারতীয় আইটি প্রোফেশনালরা করে থাকেন ৷ ভিসা বাতিলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে চলেছে ভারতীয়দের।
আরও পড়ুন : আটলান্টিক মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়া সাহারান ধূলিঝড়ের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন নাসার এক মহাকাশচারী
৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷ ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে প্রায় ২ লক্ষের উপর মানুষ যারা আমেরিকায় চাকরি করার স্বপ্ন দেখছেন তাদের বড় ধাক্কা লাগতে চলেছে। কোভিড ১৯ মন্দার কবলে পড়ে চাকরি খুইয়েছেন ৪০ লক্ষেরও বেশি আমেরিকান নাগরিক। তাই দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে এবার মার্কিন ভিসায় কোপ দিল ট্রাম্প প্রশাসন। এর জেরে আপাতত এইচওয়ানবি ভিসা স্থগিত করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : সুদীর্ঘ ৩০ বছর পর ‘ ডব্লিউ ডব্লিউ ই ‘-র রেসলিং দুনিয়া থেকে অবসর নিলেন ‘ দ্য আন্ডারটেকার ‘
H-1B ৩ বছরের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে যা পরে ৬ বছর পর্যন্ত অধিকতম বাড়ানো যেতে পারে ৷ এই ভিসা শেষ হওয়ার পর আমেরিকার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হয় ৷ ভারতে বিপুল সংখ্যাক আইটি কমর্রতরা এই ভিসায় আমেরিকায় কাজ করে থাকেন ৷তবে এই ভিসা বাতিলের জেরে যারা ওয়ার্ক ভিসায় কাজ করছেন তাদের উপরে কোনও প্রভাব পড়বে না ৷ H-1B শেষ হওয়ার পর গ্রিন কার্ড না পেলে আগামী ১ বছর আমেরিকার বাইরে থাকতে হবে ৷ এবং ফের H-1B ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
আরও পড়ুন : চিনের সীমান্তে মিসাইল তাক করল জাপান
দেশএর ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি আনা হচ্ছে তার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই মত চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত আর কোনও রকম এইচ ১ বি, এইচ ৪, এল ১ এবং জে ১ ভিসা দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিল ট্রাম্প প্রশাসন। ভারতীয় সময় সোমবার গভীর রাতে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট প্রশাসনিক ডিক্রি-বলে ভিসায় রাশ টানার সিদ্ধান্ত সাময়িক ভাবে বলবৎ করেছেন। এই বছরের শেষ পর্যন্ত আর কোনও ওয়র্ক ভিসা দেওয়া হবে না।
বর্তমানে এইচ-১ বি, এইচ ৪, এল-১ এবং জে ১— এই চার ধরনের ভিসার ক্ষেত্রে কোপ পড়েছে৷
তবে এইচ-১ বি ভিসায় যাঁরা বর্তমানে আমেরিকায় রয়েছেন, নতুন নীতিতে তাঁদের উপরে কোনও আঁচ পড়বে না বলেই দাবি করা হচ্ছে। মার্কিন অভিবাসন দফতরের পরিসংখ্যানই বলছে, ২০১৯ অর্থবর্ষে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার বিদেশিকে এইচ-১ বি ভিসার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। যাঁদের একটা বড় অংশ চিন ও ভারতের দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। এরআগে করোনা মহামারির শুরুতেই আমেরিকায় ঢোকার জন্য যাবতীয় অভিবাসন নীতি বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করিছিলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প যেসব ভিসা বাতিল করেছেন তারমধ্যে তালিকায় আছে এল১ ভিসা (ইন্টার কোম্পানি ট্রান্সফারদের জন্য) এবং জে১ ভিসাধারীরাও (যা চিকিৎসক ও গবেষকদের দেওয়া হয়) । ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সোমবার সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করছেন। ওই কর্মকর্তার তথ্যমতে, ‘এসব ভিসা বাতিল করায় আমেরিকানদের অস্থায়ী ভিত্তিতে নতুন করে অন্তত ৫ লাখ ২৫ হাজার কর্মহীন মানুষের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি হবে।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা মজুরি ও দক্ষতা স্তর উভয়ই বাড়িয়ে দেবে। এছাড়া এটা একইসঙ্গে এন্ট্রি লেভেল জবের ক্ষেত্রে আমেরিকানদের সঙ্গে চাকরির জন্য প্রতিযোগিতার বিষয়টিকেও দূরীভূত করবে। চাকরির আউটসোর্সিংয়ের সুযোগগুলো বন্ধ করা উচিত বলে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।’
জে১ ভিসা বাতিল করে দেশে চিকিৎসক ও গবেষকদের ভিসা প্রদানে সীমিত করা হয়েছে। তবে যেসব ডাক্তার করোনা রোগীদের চিকিৎসায় লিপ্ত আছেন সেসব ডাক্তারদের জে১ ভিসা দেয়া হবে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নেয়ায় অনেকেই সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশিদের অভিবাসন সীমাবদ্ধ করার জন্য ট্রাম্প তার দীর্ঘদিনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের কাজে মহামারিকে ব্যবহার করছেন। এছাড়া দেশটির অনেক ব্যবসায়িক গোষ্ঠীও অস্থায়ী ভিসা নিষেধাজ্ঞার এই ঘোষণার বিরুদ্ধে তদবিরও করছিল।