Home দেশ আজ রথযাত্রা – লোকারণ্য ধুমধাম ছাড়াই করোনা আবহে পুরীর রথযাত্রা

আজ রথযাত্রা – লোকারণ্য ধুমধাম ছাড়াই করোনা আবহে পুরীর রথযাত্রা

by banganews
 রথযাত্রা, লোকারণ্য মহা ধুমধাম ‘ না! ‘লোকারণ্য’ শব্দটি অবশ্য ২০২০ সালের রথযাত্রার সঙ্গে খাপ খাবে না! কারণ, করোনার প্রকোপে এই বছর জগন্নাথধাম পুরী ‘লোকারণ্য’ ছাড়াই সোশ্যাল ডিসটেন্সিং মেনে রথযাত্রার আয়োজন করতে বাধ্য হচ্ছে।
কথিত রয়েছে , যদি পুরীর রথের চাকা না ঘোরে, তাহলে সেই বছরের রথের পর আগামী ১২ বছর রথের চাকা ঘুরবে না পুরী ধামে। তাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মন্দির কর্তৃপক্ষ।
রথযাত্রা ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট একাধিক নির্দেশ দিয়েছে। সোশ্যাল ডিসটেন্সিংকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র সেই ৫০০ জন রথযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন যাদের করোনা টেস্ট রেসাল্ট নেগেটিভ এসেছে।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় যে, ১৮-১৯ শতকে রথযাত্রার জেরে কলেরা ও প্লেগের মতো মহামারী ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল ওড়িশায়। সেই ঘটনার পুরনাবৃত্তি যেন ২০২০ সালের ওড়িশা না দেখে।
আজ নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনেই, সকাল ১০ টায় মদনমোহন বিজে অনুষ্ঠান, সাড়ে ১০ টা থেরে ১১ টা নাগাদ চিতা লাগি অনুষ্ঠান, সাড়ে ১১ টা নাগাদ ছেড়া পাহারা অনুষ্ঠান সাড়ম্বরে আয়োজিত হবে পুরীতে। এরপর দুপুর নাগাদ শুরু হবে রথযাত্রা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসার পরই, গোটা পুরীতে শাটডাউন ঘোষিত হয়। কোভিড পরিস্থিতিতে রথযাত্রা আয়োজন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শুক্রবার মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠক করেন ওড়িশার মুখ্যনন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক৷বৈঠকে ঠিক হয়, এবার রথ যাত্রার যাবতীয় অনুষ্ঠান পুরীর মন্দিরের ভেতরেই করার নির্দেশ দিয়েছেন ওড়িশা সরকার৷
প্রতিবছর যেখানে লাখ লাখ ভক্তের সমাগম হয় সেখানে পুরীর বাসিন্দাদেরও রথ যাত্রায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। জগতের কল্যাণ কামনায় এবার তাই পুরীর মন্দিরের ভেতরেই রথযাত্রার সব পুজো করা হবে। রয়েছে মাস্ক, রয়েছে সামাজিক দুরত্ব ৷ তারই মাঝে জগন্নাথ, বলরাম শুভদ্রা চড়লেন রথ ! পুরীর রথে দড়িতে এভাবেই পড়বে টান ৷ রথ টানবেন মন্দিরের দেড় হাজার সেবায়েত। সরকারি ভাবে যদিও ১২০০ সেবায়েতের কথাই বলা হচ্ছে। রথের রশি টানার আগে সেবায়েতদের কোভিড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়েছে৷
জগন্নাথ দেবের পুজো আচারের রীতিনীতি চূড়ান্ত করতে সোমবার দুপুর থেকেই দফায় দফায় বৈঠক করছে মন্দির সোসাইটি। পুরীর মন্দিরের মুখ্য দৈতাপতি রাজেশ দৈতাপতি জানান, “সকাল সাতটায় রথে উঠবেন মহাপ্রভু। তারপর রাজা এসে ঝাড়ু দেবেন। মহাপ্রভুর দর্শন করবেন শঙ্করাচার্য। এই সব রীতি নীতি মিটিয়ে দুপুর বারোটা নাগাদ জগন্নাথ দেবের রথ গুন্ডিচায় মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেবে।” তিন কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করবে মহাপ্রভুর রথ।
পুরীর মন্দিরের দৈতাপতি নিয়োজক কমিটির সভাপতি রবীন্দ্র মহাপাত্র বলেন, “কোভিড পরিস্থিতিতে জগন্নাথ দেবের রথ যাত্রায় কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। ভক্তদের জন্য খারাপ লাগবে। তবে প্রভুর রথযাত্রা সকলের জন্য মঙ্গল বার্তা বয়ে নিয়ে আসবে।”
পুরীর রথযাত্রায় সরকারি সীলমোহর পড়ার পরে পরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেচ্ছা জানান। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে মহাপ্রভুর জগন্নাথ দেবের পুজোও হয়েছে। করোনা মোকাবিলা ও বিশ্ব শান্তির জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে মঙ্গলবার রথযাত্রায় বিশেষ পূজা পাঠ করবেন বলেও জানান  রাজেশ দৈতাপতি।

You may also like

Leave a Reply!