Home দেশ অষ্টম শ্রেণী ফেল করেছিলেন তিনি কিন্তু শখ যখন পেশা হয়ে যায় তখন কাহিনি হয় অন্যরকম

অষ্টম শ্রেণী ফেল করেছিলেন তিনি কিন্তু শখ যখন পেশা হয়ে যায় তখন কাহিনি হয় অন্যরকম

by banganews

সাধারণত আমরা ভাবি, কর্মজীবনে ব্যাপকভাবে সফল মানুষ তারাই কিংবা ভালো কেরিয়ার তাদেরই হয়ে থাকে, যাদের ছাত্রজীবনে শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়৷

তবে আজ অন্যরকম এক গল্প শোনার পালা৷ পড়াশোনায় দুর্বল হয়েও কম বয়সে এই সাফল্য অবাক বিস্ময়! আজকে আমাদের গল্পের নায়কের নাম ত্রিশ্নিত আরোরা, বয়স মাত্র ২১ বছর কিন্তু এই একুশ বছর বয়সে এসটিডি 8 এ ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও এক মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা তৈরি করেছেন৷ তার আইডিয়া বিশ্বের বড় বড় করপোরেট সংস্থার গাইডলাইন। রিলায়েন্স, আমুল,এ্যাভন সাইকেল এবং আরও অনেক করপোরেট সংস্থা ত্রিশ্নিত অরোরার গাইডলাইন ফলো করছে৷

সমগ্র বিশ্বের কাছে আজ এই যুবক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে৷ ত্রিশ্নিত দেখিয়েছেন যে আপনি যদি আপনার চিন্তাভাবনাকে বড় করে দেখতে পারেন এবং আপনার সমস্ত ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগান তবে যে কোনরকম প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে যায় এবং সাফল্য আপনি এসে ধরা দেয়৷ বর্তমানে তৃষ্ণিতের বয়স ২৩। সে সাইবার সুরক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করে এমন একটি সংস্থা TAC সিকিউরিটির প্রধান কর্মকর্তা । লুধিয়ানায় একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা। শৈশব থেকেই কম্পিউটার ছিল তার অত্যন্ত প্রিয়৷ হ্যাকিং সম্পর্কে প্রতিনিয়ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে উঠেছিল তার নেশা এবং এই কারণেই প্রথাগত পড়াশুনা থেকে তার মন দূরে সরে যেতে থাকে এবং পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়।

আরও পড়ুন টমাস স্টিভেন্স সানফ্রানসিসকো থেকে রওনা হয়ে সাইকেলেই সর্বপ্রথম বিশ্বভ্রমণ করেন৷

তৃষ্ণিত জানিয়েছেন কম্পিউটার আর হ্যাকিং নিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজে তিনি এতই আবিষ্ট ছিলেন যে শিক্ষাবর্ষের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দুটি বিষয় পড়ে উঠতে পারেন নি ফলে পরীক্ষায় অনুপস্থিত হয় এবং এইট স্ট্যান্ডার্ডে ফেল করে।
পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকের রোষ এবং বন্ধুদের উপহাসের পাত্র হন তিনি৷ কিন্তু বাবা-মা’র এই তিরস্কার বা বন্ধুদের উপহাস তৃষ্ণিতকে দমিয়ে রাখতে পারে নি৷ তৃষ্ণিত তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্থির করে ফেলেন৷ প্রথাগত পড়াশুনা,বিদ্যালয় এসবে ইতি টেনে দূরশিক্ষণ শিক্ষাব্যবস্থায় ( correspondence course) পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো সময়টাই ব্যয় করেন নিজের প্যাশন কম্পিউটার হ্যাকিং সংক্রান্ত পড়াশুনায়৷  শুরুতে কেউ তার প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দেন নি৷ কিন্তু তৃষ্ণিত নিজেকে সবসময় হ্যাকিংয়ের বিষয়ে আপডেট করতে থাকেন। সমগ্র বিশ্বে হ্যাকিং নিয়ে কী কী ঘটছে জানতে থাকেন, এসব করতে করতেই তৃষ্ণিত বুঝতে পেরেছিলেন যে বেশ কয়েকটি সংস্থার ডেটা চুরি ও অপব্যবহার হচ্ছে। তার এই উপলব্ধি যখন তিনি তার দক্ষতার সঙ্গে প্রমাণ করলেন, সকলে তাকে গুরুত্ব দিতে শুরু করলেন এবং হ্যাকিং বিশ্বে একটি গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল।

মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি ট্যাক সিকিউরিটি ( TAC security) গঠন করেন এবং নিজের দক্ষতায় রিলায়েন্স, সিবিআই, পাঞ্জাব পুলিশ, গুজরাত পুলিশ, আমুল এবং অ্যাভন সাইকেল ইত্যাদি নামী সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করেন৷ শুধু তাই নয়, হ্যাকিং টক উইথ তৃষ্ণিত অরোরা (Hacking Talk with Trishneet Arora), দ্য হ্যাকিং এরা ( The Hacking Era) এবং হ্যাকিং উইথ স্মার্ট ফোন ( Hacking with Smartphone) নামের তিনটি বইয়ের লেখক এই তরুণ তুর্কি।

 

আরও পড়ুন মালয়ালম নিজে একবর্ণও বলতে পারেন না তবু ছবি বানিয়েছেন সেই ভাষাতেই !! ছবিটি দেখানো হবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে

 

কোনোরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই এই সাফল্য বিস্ময়কর এবং প্রশংসার দাবি রাখে৷ তার ক্লায়েন্টের তালিকায় ফরচুন ৫০০ কোম্পানির মধ্যে ৫০ টি রয়েছে৷ ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য দুবাই এবং যুক্তরাষ্ট্রে অফিস তৈরি হয় যার প্রতি বছর টার্নওভার কোটি কোটি টাকায় চলে।

এমন একটি বয়সে যখন লোকেরা পড়াশোনা শেষ করেই কর্মজীবনে সবেমাত্র প্রবেশ করে, সেই বয়সে তৃষ্ণিত অরোরা একটি মাল্টিমিলিয়ন সংস্থা তৈরি করেছেন এবং তার দক্ষতাপূর্ণ কাজের জন্য বিশ্ববিখ্যাত হয়ে উঠেছেন কেবল হ্যাকিং সম্পর্কে প্রতিনিয়ত অনুশীলন, স্ব-অধ্যয়ন ( self study) এবং আরও আরও জ্ঞান আহরণের প্রচেষ্টা৷

এই গল্প কিং খানের সিনেমার সংলাপের মতই। যদি তুমি সত্যি সত্যি মন থেকে কিছু করতে চাও তাহলে সমস্ত বিশ্বপ্রকৃতি তোমাকে তোমার ইচ্ছেপূরণে সাহায্য করে৷ কেবল ইচ্ছেটা থাকতে হবে। ইচ্ছে-পূরণ হবেই, সাফল্যের কোন বিধিবিদ্ধ নিয়ম বা শর্টকাট হয় না৷

You may also like

Leave a Reply!