আজ জন্মদিন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির শেষতম ‘দিভা’ ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের অজানা কথায় মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
‘ঋতু যখনই বাইরে যাক না কেন, যত ব্যস্তই থাক না কেন, একটা গুণ ওর খুব বড়। কিছুতেই কাছের বন্ধুদের কথা ভোলে না। বাইরে যাবে ঋতু, আর সঙ্গে করে কিছু আনবে না, এ জিনিস হতেই পারে না,‘ বলছিলেন সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে এরকমটাই দেখেছেন তিনি। ভীষণ ব্যস্ত শিডিউলে বাইরে শুটিংয়ে গিয়েও কিছু খুচরো উপহার তাঁর ব্যাগ থেকে বেরোবেই। আর সেই উপহারগুলো পাবেন ঋতুর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা।
আরও পড়ুন অনিশ্চিত কলকাতা বইমেলা
ঋতুপর্ণা টালিগঞ্জের শেষতম ‘দিভা’। কথাটা যিনি বলেছিলেন, মন্দ বলেননি মোটেও। নায়িকা আর গ্ল্যামার কনসেপ্টদুটো ভাঙলে ঠিক যা যা ধারণা বেরোয়, সেগুলো মিলিয়েই ঋতুপর্ণা।
সেই সঙ্গে আরও একটা বাড়তি রসদ যোগ হবে বইকি। অভিনয়। নায়িকা হতে গেলে অভিনয় লাগে না—এ মিথ অতীত। যাঁরা তঅর নেপথ্য কারিগর, ঋতুপর্ণা তাঁদের একজন।
তা এহেন পুরোদস্তুর ‘ইন্ডাস্ট্রি’ হয়েও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জানেন কিন্তু, তাঁর বাড়িতে কী কী রান্না হচ্ছে আজ, কিংবা কোন ফোড়নটা দিতে হবে এদিনের কোনও বিশেষ ব্যাঞ্জনে। শুটিংয়ের সর্বত্র, সর্বদা ছায়াসঙ্গী হয়ে ঘুরে বেড়ানো মানুষজনই বলে থাকেন, টে একটু ফাঁকা সময় হলেই বাড়িতে ফোন করে পুঙ্খানুপুঙ্খ সব খুঁটিয়ে খোঁজ নেন নায়িকা। মেয়ে যখন ছোট, কলকাতায় পড়াশোনা চলত, তখন আবার সারা দিনের শিডিউলের মধ্যেই মেয়ের অঙ্ক ভূগোল বিজ্ঞানের খোঁজটাও রাখতেন ঋতু। বিশেষ কোনও গোলযোগ দেখা দিলে, রাতে মা ফেরা অবধি হোমওয়ার্ক নিয়ে বসেও থাকত মেয়ে।
শুটিং, এনডোর্সমেন্ট, প্রচার, পার্টি, মিটিং সহ আরও অসংখ্য এনগেজমেন্ট সামলেও দিনের শুরু থেকে শেষ অবধি ঋতুর কিন্তু একটিমাত্রই ট্রেডমার্ক। তাঁর হাসি। আর সেটাও একেবারে মন থেকে। কিন্তু সেজন্য তো অসীম প্রাণশক্তি প্রয়োজন। এত প্রাণ ঋতু পান কোথায়? কখনও ক্লান্তি লাগে না? যদি জিজ্ঞাসা করেন, ঋতু বলবেন—‘দুজনের বই সবসময় সঙ্গে থাকে যে। মানুষ তো। একটু মেঘ দেখা দিলেই পাতায় চোখ রাখি। চোখ থেকে মনে ছড়িয়ে পড়ে সূর্যালোক। আবারও সেই উদ্দীপনা নতুন করে ফিরে আসে।’
রবীন্দ্রনাথ আর বিবেকানন্দ। ঋতুপর্ণার সারাদিনের দুই দোসর। ক্লেদ জমলেই এই দুই নামে নিজেকে ফের ‘আলো’ করে ফেলেন বাংলা গ্ল্যামারের মুকুটহীন সাম্রাজ্ঞী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।