অষ্টাদশ – ঊনবিংশ শতকের নারীরা লড়াই করে আদায় করেছেন তাদের স্বাধীনতা। পেয়েছেন শিক্ষা ও কর্মের অধিকার, সেখানেই একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তির যুগে এসে আফগান নারীদের স্বাধীনতা নিয়ে আরও একবার উঠছে প্রশ্ন। তাদের সকলেরই চোখে মুখে শঙ্কা। এর কারণ, তালিবানদের কাবুল অধিকার। তালিবান সংগঠন আফগান মেয়েদের স্বধীনতা, শিক্ষা ও কর্মের সিদ্ধান্তে যেন কোন রকম হস্তক্ষেপ না করে, এমনটাই বার্তা দিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জ মানবাধিকার কমিশন।
গত রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল অধিকার করে তালিবান সম্প্রদায়। তাদের দাবী কাবুল সরকার স্বেচ্ছায় নিজের অধিকার তালিবানদের হস্তান্তরিত করুক। তাহলেই আর কোনও সংগ্রাম করবেন না তারা। এমনকি কাউকে দেশ ছেড়েও যেতে হবে না বলে জানিয়েছেন তারা। মহিলাদের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আরও অধিকারও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তালিবান গোষ্ঠী।, কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে উল্টোই ফল। ইতিমধ্যেই কয়েকজন মহিলা ব্যাঙ্ক কর্মীদের কাজে যোগদান না করার নির্দেশ দেন তালিবান সংগঠন।
কাবুল তালিবানদের হাতে আসায় প্রত্যেক মহিলার মুখে উদ্বিগ্নতার ছাপ। ইতিমধ্যেই শহরের রাস্তায় মেয়েদের খোলা মুখের চিত্র ছিঁড়ে নষ্ট করেছে তারা। অঘোষিত ফতোয়া – কেউ যেন বোরখা বা হিজাব না পড়ে রাস্তায় বের হন৷ এছাড়াও কোন মহিলা তার বাবা, স্বামী অথবা নিকটস্থ আত্মীয় ছাড়া অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে গেলে কঠোর শাস্তি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের এই স্বভাবিক চলাফেরায় বাধা তালিবানদের নীচ রুচিসম্মত কাজ, যা নেট দুনিয়ায় ইতিমধ্যেই আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকারের হাইকমিশনার রুপার্ট কলভিল মঙ্গলবার জানান, ‘‘তালিবানকে অবশ্যই মেয়েদের কাজ করার এবং স্কুলে যাওয়ার অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে।’’ কলভিল জানা এ বিষয়ে আফগান জনগোষ্ঠীর সকলেই উদ্বিগ্ন। কলভিলের বক্তব্য , ‘‘এমন পরিস্থিতিতে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দায়বদ্ধতা দেখানো প্রয়োজন তালিবানের।’’ তাদের ভয়ে আফগানবাসী যে কতোটা শঙ্কিত তা উল্লেখ করতে তিনি সোমবারের কাবুল বিমানবন্দরের সকলের পলায়ন তৎপরতার কথা তুলে ধরেন।