Home কলকাতা এবার চিঠি ফেলতে চলুন প্যাণ্ডেলে

এবার চিঠি ফেলতে চলুন প্যাণ্ডেলে

by banganews

“জানা অজানার বোঝা আজ তাঁর কাঁধে / বোঝাই জাহাজ রানার চলেছে চিঠি আর সংবাদে”। খবরের বোঝা হাতে দিক-দিগন্তে ক্লান্তিহীনভাবে ছুটে চলে রানার – চিঠির বোঝা কাঁধে নিয়ে পোস্টম্যান বা পিওন চলেছে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। এ খুব চেনা দৃশ্য ছিল একটা সময়। আজ চিঠি প্রায় হারিয়েই গেছে। চিঠি লেখার সময় কই আর মানুষের হাতে! কিন্তু চিঠি এই ধারণা অবসোলিট হয়ে যাওয়ার আগে ফের একবার মনে করাতে চাইল উত্তর কলকাতার অরবিন্দ সেতু সর্বজনীনের পুজো তাদের থিমের মধ্যে দিয়ে। কলকাতায় থিম পুজো নতুন নয়। এবার কিন্তু থিম পুজোর তালিকাতে একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে এই পুজোমণ্ডপ।

স্মার্ট ফোন, অনলাইন-অফলাইন, ল্যাপটপ-ডেস্কটপ, জুম-গুগল মিট এসব শব্দের ভিড়ে বা বলা যেতে পারে ভার্চুয়াল জগতের ভিড়ে এই চিঠির কনসেপ্ট সত্যিই অন্যরকম। এবারে উত্তর কলকাতার অরবিন্দ সেতু সর্বজনীনের থিম “ডাকযোগ”।

অরবিন্দ সেতু সর্বজনীনের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছে স্বয়ং ডাকবিভাগ। ঘটনাচক্রে এই সময়ই ডাকবিভাগের পোস্টাল সপ্তাহ উদযাপন চলছে। অরবিন্দ সেতুর পুজোর থিমের কথা জানতে পেরে ভারতীয় ডাক বিভাগের উত্তর কলকাতার সদর দপ্তরের তরফে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ডাকবিভাগ পুজো উদ্যোক্তাদের থিম ভাবনার স্বীকৃতি স্বরূপ পুজোর অষ্টমীর দিন প্যান্ডেলেই আস্ত একটি অস্থায়ী পোস্ট অফিস খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেখানে সাধারণ মানুষ এসে চিঠি পোস্ট করতে পারবেন। কিনতে পারবেন ডাকটিকিটও। শুধু তাই নয়, এই পুজোর মণ্ডপের আদলে একটি বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ডাকবিভাগ।

আরো পড়ুন

করোনা যোদ্ধাদের সম্মান জানিয়ে এবার থিমপুজো উত্তর দিনাজপুরে

চিঠি শব্দের সঙ্গে যে আবেগ, আনন্দ লুকিয়ে থাকে, চিঠি পাওয়ার যে আলাদা এক আনন্দ হয়, চিঠির ভাষাও যে কেমন হতে পারে, কেমনভাবে কাছের মানুষের কাছে মনের কথা পৌঁছানো যায় চিঠির মাধ্যমে তা এ প্রজন্ম সেভাবে জানে না। চিঠির সাথে বাঙালীর যে নস্টালজিয়া জুড়ে রয়েছে তা একবার উস্কে দিতেই এই পুজোমণ্ডপের এমন থিম বানানো।

এবার ৪৫ বছরে পদার্পণ করছে অরবিন্দ সেতু সর্বজনীনের পুজো। রাজু সূত্রধরের থিম ভাবনায় পুরো মণ্ডপ সেজে উঠেছে চিঠি, ডাকটিকিট এবং পোস্টকার্ড দিয়ে। মণ্ডপে ঢুকে এক নিমেষের জন্য মনে হতে পারে, আপনি হয়তো কোনও পোস্ট অফিস বা ডাকবিভাগের (Indian Post) কোনও পুরনো কিন্তু সুসজ্জিত অফিসে ঢুকে পড়েছেন। গোটা মণ্ডপজুড়ে ছোট ছোট চিঠি ফেরাবে ছেলেবেলার স্মৃতি। সেই সঙ্গে থাকছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রকাশিত ডাকটিকিট। যা একেকটি ঐতিহাসিক ঘটনার স্মারক। ডাকটিকিটের আদলে তৈরি হচ্ছে মাতৃমূর্তিও। এক লহমায় তাকালে মনে হতে পারে মা যেন স্বয়ং ডাকটিকিটের মধ্যেই বসে আছেন। অরবিন্দ সেতু সর্বজনীনের মাত্র প্রতিমা তৈরি করেছেন শিল্পী গোপাল পাল।

শিল্পীর ছোঁয়ায় ভাবনায় থিম পুজো এগিয়ে চলুক। দুর্গাপূজার থিমে এবার উত্তর কলকাতার অরবিন্দ সর্বজনীন অন্য থিম পুজোর থেকে কিছুমাত্র পিছিয়ে নেই।

You may also like

Leave a Reply!