নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে ২০২০ এর শান্তি পুরস্কার দিচ্ছে জার্মান পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স অ্যাসোসিয়েশন। ফাউন্ডেশন ফর দ্য পিস প্রাইজ অফ দ্য জার্মান বুক ট্রেড-এর অছি পরিষদ এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতির জন্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক অমর্ত্য সেনকে বেছে নিয়েছে।
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির আন্তর্জাতিক ন্যায়াধিকারের লড়াইতে তাঁর অবদান ভোলার নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলির অর্থনীতির বিকাশে অমর্ত্য সেনের নির্দেশ আজও অপরিহার্য।
১৯৬০ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভ করার পর থেকে বিশ্বের নানা বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন তিনি। দিল্লি স্কুল অফ ইকোনমিকস থেকে স্ট্যানফোর্ড, বার্কলে, অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ সমস্ত জায়গাতেই অধ্যাপনা করেছেন তিনি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে আসীন। ৮৬ বছর বয়সেও প্রতিটি লেকচার দিয়ে যান একভাবে দাঁড়িয়ে।
আরও পড়ুন বলিউডে নেপোটিজম নিয়ে মারাঠি গান জিঙ্গাতের প্যারডি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল
১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার এবং পরের বছর ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত হন৷ সমাজবিজ্ঞানে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে পেয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিটিজ মেডেল, আইএইচইইউ ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিস্ট অ্যাওয়ার্ড এবং আরও অনেক উল্লেখযোগ্য সম্মান। বুধবার জার্মান বুক ট্রেড সংস্থার ঘোষণা অনুযায়ী সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে আরও একটি শান্তি পুরস্কার। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান হবে ফ্রাঙ্কফার্টে আগামী ১৮ অক্টোবর।
প্রথা অনুযায়ী ১৯৫০ সাল থেকে ফ্রাংকফ্রুট বুক ফেস্টিভ্যালে অনুষ্ঠিত হয় এই পুরস্কার বিতরণ সভা। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে সেই রীতিতে খানিকটা অদলবদল হতে পারে।
অমর্ত্য সেনের কাজ বর্তমান সময়ে আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক বলে উল্লেখ করেছেন সংস্থার কর্ণধাররা। সারা পৃথিবীজুড়েই এখন আন্তর্জাতিক ন্যায় ও সমানাধিকার বিশেষ আলোচনার বিষয়। কালো চামড়ার মানুষদের সামাজিক স্বীকৃতির কথাও উঠে আসছে নানা স্তর থেকে। এই সময় অধ্যাপক সেনের ভাবনাচিন্তা বিশ্বকে পথ দেখাতে পারে বলেই মনে করছেন জার্মান বুক ট্রেড সংস্থা।
আরও পড়ুন হলিউডের পর্দায় আসছেন লেডি ডায়না
এক বিবৃতিতে ফাউন্ডেশনের জুরি জানিয়েছে, এক পথিকৃত্ শিক্ষাবিদকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নির্বাচন করেছে, যিনি দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাঁর কাজ বর্তমানের মতোই চিরদিনের জন্যই প্রাসঙ্গিক।
অমর্ত্য সেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান সামাজিক সম্পদের মূল্যায়ণের ধারণা। যে মূল্যায়ণ সম্পূর্ণভাবে আর্থিক বৃদ্ধির বিভিন্ন সুচক ভিত্তিক নয়, তা সমাজের শরিক সমস্ত ব্যক্তি, বিশেষ করে দুর্বলতম সদস্যদের কাছে উন্নয়নের সুযোগের ওপরও নির্ভরশীল।