Home বিনোদন সারা বাংলা রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতা “গানের ভিতর দিয়ে”

সারা বাংলা রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতা “গানের ভিতর দিয়ে”

by banganews

নব রবি কিরণ এবং নব নালন্দা সঙ্গীত শিক্ষায়তন এর  উদ্যোগে আয়োজিত সারা বাংলা রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতা গানের ভিতর দিয়ে৷এই প্রতিযোগিতার পরিচালকমণ্ডলীর অন্যতম, নব নালন্দা সঙ্গীত শিক্ষায়তনের শিক্ষক, সঙ্গীতশিল্পী শীর্ষ রায়। আমরা কথা বললাম তাঁর সঙ্গে।

এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কী বলবেন?

শীর্ষ রায় – নিঃসন্দেহে খুব ভালো একটি উদ্যোগ৷ বছর তিনেক আগে থেকেই ভাবনা চিন্তা চলছিল। মাঝে করোনা আবহে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এটা কোন রিয়েলিটি শো নয়, একেবারে নির্ভেজাল সঙ্গীত প্রতিযোগিতা৷ প্রতিযোগিতার একটি সুন্দর নামকরণও করা হয়েছে ‘ গানের ভিতরে দিয়ে’।  সারা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিভাদের আলোকবৃত্তে আনার এক অনন্য প্রয়াস৷ এই বিরাট কর্মযজ্ঞের ভাবনা, রূপায়ণ এবং পরিচালনা নব নালন্দার কর্ণধার শ্রী অরিজিৎ মিত্র মহাশয়ের৷

তিনটি পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতা হবে। প্রথম পর্যায় অর্থাৎ প্রাক প্রাথমিক পর্যায়ে অনলাইনের মাধ্যমে প্রতিযোগীদের নির্বাচন করার পর দ্বিতীয় পর্যায় অর্থাৎ প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হবে অফলাইনে৷ দ্বিতীয় পর্যায় থেকে বাছাই করা প্রতিযোগীদের নিয়ে হবে চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় সফল প্রতিযোগীদের পুরস্কারেও রয়েছে বিশেষত্ব। পুরস্কারমূল্য তো রয়েছেই, সঙ্গে মিউজিক ভিডিও করারও সুযোগ থাকছে নব রবি কিরণের মত খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে৷ নব রবি কিরণের তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মিউজিক ভিডিও করার সুযোগ পাবেন তারা। আর তা প্রকাশিত হবে নব রবি কিরণের ইউটিউব চ্যানেলে। পুরস্কারে আরো একটি বিশেষত্ব- ২৫ শে বৈশাখ নব রবি কিরণের রবীন্দ্র স্মরণ অনুষ্ঠান শিল্পী মহলে বিশেষ ভাবে পরিচিত। প্রথিতযশা শিল্পীরা সেই অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। প্রতিযোগিতায় সফল প্রতিভারা এই অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচ হাজার দর্শক শ্রোতার সামনে গান গাওয়ার সুযোগ পাবেন।পরবর্তীকালে হয়ত এমন আরও অনেক পরিকল্পনা নিয়ে আসবে নব রবি কিরণ।

 

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শিল্পীর স্বাধীনতা অনেক বেশি৷ নানারকম এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে৷ এই প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?

শীর্ষ – রবীন্দ্রনাথের গানের বাণী ঠিক রেখে ও স্বরলিপি মেনে যাতে গান গাওয়া হয় সেদিকে অবশ্যই বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে৷ বিচারকের আসনে যাঁরা থাকছেন তাঁরা কিন্তু  প্রত্যেকেই রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী এবং শিক্ষকও বটে।

মিডিয়ায় অনেক সময় বিভিন্ন প্রতিভাদের দেখা যায়। এই প্রতিযোগিতায় কি তেমন কাউকে সুযোগ দেওয়া হবে?

শীর্ষ – এই প্রতিযোগিতা সকলের।তিনটি বিভাগ রয়েছে।  ১০-১৪ বছর , ১৫-১৮ বছর এবং ১৯ বছর ও তার ঊর্ধ্বে।  ফলত যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে৷ এখন গানের অ্যালবাম বা সিডি কেনার চল নেই বললেই চলে৷ আর এখন গান বা মিউজিক মানেই অডিও ভিস্যুয়াল। তাই মানুষ এখন মিউজিক ভিডিও দেখতে বেশি পছন্দ করেন। আর তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া একটি বড় মাধ্যম। তবে যথাযথ ভিডিও বানাবার ক্ষেত্রেও একটা বড় খরচ রয়েছে৷ অনেকে আছেন যাঁরা গান শিখছেন, ভালো গান করছেন, কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে বা যথাযথ সুযোগের অভাবে মিউজিক ভিডিও করে উঠতে পারছেন না, এমন সব প্রতিভারা সেই সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।

 

ভারতের জন্য গর্বের মুহূর্ত, মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে বিচারকের আসনে ভারতীয় অভিনেত্রী

 

প্রশ্ন – রবীন্দ্রনাথের কিছু নির্দিষ্ট গান মানুষের মধ্যে প্রচলিত৷ কিন্তু এর বাইরেও বহু গান রয়েছে যেগুলো অল্পশ্রুত বা প্রায় অশ্রুত।এই গানগুলো কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়?

শীর্ষ – শেখা কিন্তু দুরকম, রেকর্ড শুনে শেখা এবং গুরুর কাছ থেকে শেখা৷ শেখার জন্য একদিকে যেমন শোনা অবশ্যই জরুরি, তেমন গুরুর কাছে শিক্ষালাভ ও তার সঠিক প্রয়োগ না শিখলে শিক্ষা কখনোই সম্পূর্ণ হয়না। অনেকেই কিন্তু রবীন্দ্রসঙ্গীত সেভাবে শেখেননি, রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে হলে রেকর্ড শুনে শিখে নেওয়ার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু প্রথাগত ভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান শেখা সম্পূর্ণ আলাদা৷ সেখানে শুধু গান নয়, গানের ভাবনা, দর্শন সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়৷ এর মানে কিন্তু এই নয় যে, রেকর্ড শুনে গাইলে নোটেশন ভুল করবেন বা খারাপ গাইবেন৷ কিন্তু রবীন্দ্রনাথের গানের কিছুটা গভীরে প্রবেশ করে গানের বক্তব্য, ভাবনা, দর্শনকে অনুভব করে গাইতে পারলে এই গানকে আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করা যায়। রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার আগে গানটিকে ভালোভাবে পড়া খুব প্রয়োজন৷ গানের বক্তব্য বোঝা জরুরি৷ যে কোনো ধারার গানই গুরুর কাছে শেখার বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয়।

রবীন্দ্রনাথ এখনও পর্যন্ত সর্বাধুনিক কবি, গীতিকার৷ তাঁর লেখা এখনও সমান কন্টেম্পোরারি৷ তাঁর লেখা বহু গানে প্রেম এবং পূজা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে৷ পর্যায় না জানলে কিছু কিছু গান প্রেম না পূজা সেটা বোঝা বেশ কঠিন হয়ে যায়৷
রবীন্দ্রনাথের গানে একটা অদ্ভুত শান্তি রয়েছে। এই সময়ের ছেলেমেয়েদের যখন গান শেখাই,  তখন তাদের গানটি পড়তে বলি বারবার, অথবা নিজে পড়ে শোনাই। যথাযথ ভাব, দর্শন যখন তাঁরা বুঝতে পারে তখন কিন্তু তারাও অনেক সুন্দর করে গাইতে পারে৷

 রবীন্দ্রনাথের গান মানেই শাড়ি, পাঞ্জাবি, মাথায় ফুল শান্তিনিকেতনের আবহ কি প্রয়োজন?

শীর্ষ রায় – এটাকে শান্তিনিকেতনের আবহ বলা যায় কিনা তা আমি জানিনা, তবে পোশাক সম্বন্ধীয় বিধি নিষেধ বা ড্রেসকোড খুব প্রয়োজন আছে তা নয়৷ পরিবেশ ও পরিবেশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যে কোনো রুচিসম্মত পোশাক পরা যেতেই পারে৷ সবসময় যে শাড়ি বা পাঞ্জাবিই হতে হবে তেমন নয়৷

You may also like

Leave a Reply!