বলিউডের পর সম্প্রতি বাংলা ফিল্ম ইন্ডিস্ট্রিতেও উঠেছে ‘স্বজনপোষণ’-এর অভিযোগ। আর এই অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে যিনি রয়েছেন, তিনি হলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। একেবারে নাম উল্লেখ করে সরাসরি অভিযোগ এনেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র৷
স্বজনপোষণ নিয়ে সরাসরি উত্তর না দিতে চাইলেও নানান আলোচনায় অনেক কথাই জানালেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, তিনি যখন মেইনস্ট্রিম সিনেমা করতেন, তখন অনেক নতুন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন৷ আজ হয়ত তাঁরা স্বনামধন্য। সেই পরিচালকরা প্রথম যখন কাজ শুরু করেছেন, তখন তাঁরা কারোর না কারোর সহযোগী হিসাবে কাজ করতেন। তাঁদের মধ্যে কেউ হয়ত এসে বলেছিলেন, “তুমি যদি ছবিটা করো, তাহলে প্রযোজক পাই। আমি করেছি। সেখান থেকে তাঁরা অনেকে ব্রেকও পেয়েছেন। পরবর্তীকালে তাঁরাই আবার ভালো পরিচালক হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন। যদিও তাঁদের সব ছবিতেই যে আমি কাজ করেছি, তেমনটাও নয়।”
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ”বাংলা ছবিতে তিন ইয়ারি কথা সিনেমার ভাষায় একটা বড় পরিবর্তন এনেছিল। যেখানে পরম, রুদ্র, নীল ছিল। ওরা তখন অনেক ছোট। সেটাও রানা, সুদেষ্ণার ছবি। আমার কেরিয়ারে অটোগ্রাফ অন্যতম ছবি। অথচ যখন অটোগ্রাফ হয়েছিল সৃজিত নতুন। আমার চিত্রনাট্য শুনে মনে হয়েছিল, ও নতুন দর্শক তৈরি করতে চাইছে। তবে ছবিটা যে এতটা ভালো হবে, সেটা হয়ত তখন বুঝিনি। পরবর্তীকাল বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সৃজিতের মতো ভালো পরিচালক পেয়েছেন।
আর এই যে লকডাউন চলছে, তিনি জানান তার কেরিয়ারেও এমন সময় এসেছে যখন টানা ৬ মাস তার কাজ ছিল না৷ ওই ৬ মাস তিনি নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করেছেন৷ তিনি বলেন, যখন টেলিভিশনে কাজ করেছেন, তখনও এক ঝাঁক নতুন মুখ নিয়ে তিনি কাজ করেছেন৷
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু প্রসঙ্গে স্বজনপোষণ মানসিক অবসাদ এসব প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন ”যে মানুষটা চলে গেছে, সে আমার ছেলের মতো। কিছু ঘটনার কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়াটাও কঠিন। কোনও ভাষা নেই। এটা সমস্ত ভাবনার উর্ধ্বে। আর বাকিটা যেটা চারিদিকে চলছে, সেটা নিয়ে আমি সত্যিই কিছু বলতে চাই না। আশা রাখি, একটা সময় মানুষ ঠিক বুঝবেন। যদি আমি কারোর কাছে কোনও অন্যায় করে থাকিও, হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে কোনও অসুবিধা নেই। যদিও আমি জানি, কোনও অন্যায় করিনি। “
যাঁরা অবসাদগ্রস্ত, যাঁরা একটু পিছিয়ে পড়েছেন, তাঁদের পাশে কি প্রসেনজিৎ থাকবেন? এর জবাবে সরাসরি “না” বলে অভিনেতা জানান,
” লক্ষ লক্ষ মানুষের মতো আমরাও একটি অদ্ভুত পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি। জানি না কী হতে চলেছে। আমার হয়ত ৩৫০ ছবি আছে। অভিজ্ঞতা আছে। তবে যদি কিছু হয়, আমাকেও হয়ত শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। প্রত্যেকটা প্রফেশনই মানুষকে আজকের দিনে শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। আর আমিও এর বাইরে নই।”