গত শনিবার ব্যাংককের রাস্তায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও দেখা গেল হাজার প্রতিবাদী তরুণের ভিড়। ব্যাংককের প্রখ্যাত ‘ডেমোক্রেসি মনুমেন্ট’-এর নিচে এদিন তারা জড়ো হয়। সহস্রাধিক আন্দোলনকারী একটি মিছিল করে এসে মনুমেন্টের সামনে বিক্ষোভ দেখায়, তাদের এই গণপ্রতিবাদ ছিল সেদেশের রয়াল ডিফেমেশন ল্য’র বিরুদ্ধে। বিগত কয়েক মাস ধরে সেই দেশের অর্থনীতির রেখাচিত্র ক্রমাগত নিম্নমুখী ধারা অবলম্বন করলে তা পদস্থ সরকারকে সমালোচনার মুখে ফেলে। এরই পাশাপাশি কোভিড-১৯ সংক্রমনের অবস্থা ক্রমাগত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেটিও জনসাধারণের মনে সরকারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগকে উস্কে দেয়। পরিবর্তিত সংকটকালীন পরিস্থিতিতে এই আন্দোলন এই মুহূর্তে বিশ্বে ঘটে চলা বৃহত্তম আন্দোলনের নজির গড়েছে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে থাইল্যান্ড এমন বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রতিবাদী জনসমাবেশ প্রত্যক্ষ করেনি। প্রথমেই নির্ধারিত হয় ডেমোক্রেসি মনুমেন্টেরর নিচেই অনির্দিষ্টকালের অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করবে তারা। পরবর্তীতে রাত বাড়তেই আন্দোলনের নেতৃত্বরা সম্মিলিতভাবে ঠিক করেন জন সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে সেদিনের মত আন্দোলনকে স্থগিত করবেন।
আরও পড়ুন নোত্রেদামের স্মৃতি, ফ্রান্সে আবারও আগুন ঐতিহাসিক গির্জায়
ছাত্র-যুবক ও তরুণ প্রজন্মের ভিড়ে এদিন অচল হয়ে পড়তে শুরু করে ব্যাংককের রাস্তা। বহু মানুষের তাদের সরকারের প্রতি প্রশ্ন ছিল পড়তি অর্থনীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে। নতুন প্রজন্ম, ভবিষ্যতের চিন্তায় ক্ষমতাসীন প্রত্যুৎ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ডাক দেয়। এই অকর্মণ্য প্রশাসনের নিজে থেকেই পদত্যাগ করে সরে যাওয়া উচিত বলে তাদের অভিমত। জমায়েতে হাজির হওয়া সহস্রাধিক আন্দোলন সমর্থক মানুষ সেদেশে নতুন সাধারণ নির্বাচনের দাবি জানায়। তাদের মতে পুরনো ক্ষয়িষ্ণু সংবিধান বর্তমান যুগের অনুপোযোগী, নতুন দায়িত্বশীল সরকার এলে তা সাধারণ মানুষের প্রয়োজন অনুসারে সংবিধানের সংশোধন ও পরিমার্জন করতে সক্ষম হবে। জনসাধারণ সেদেশের সামরিক স্বৈরতন্ত্র নিয়ে নিজেদের বিরক্তি উগরে দেয় এদিন। দেশের যুবশক্তি সেখানকার প্রাক্তন আর্মি চিফ প্রত্যুৎ চান-ও-চা’র অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে খারিজ করে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়, এবং অবিলম্বে মিলিটারি ডিফেমেশনের কালাকানুন বাতিল করার কথা বলে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলন নজর কেড়েছে সারাবিশ্বের।