কাঁথিঃ এই প্রথম মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুহীন মমতার সভা। শুভেন্দুর পাশাপাশি সোমবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে মমতার সভায় অনুপস্থিত ছিলেন কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শিশির অধিকারী ও তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারি। যা একুশের নির্বাচনের আগে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এদিনের সভার জন্য শুভেন্দুর কাছে কোন রকম আমন্ত্রণ আসেনি বলে দাবি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার।
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে শুভেন্দুর অবস্থান নিয়ে জল্পনা ততোই প্রকট হচ্ছে। ইতিমধ্যে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগও করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। গত বেশ কয়েক মাসে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দলের দূরত্ব যে বৃদ্ধি পেয়েছে তা রাজ্য রাজনীতিতে স্পষ্ট। এরইমধ্যে খোদ শুভেন্দুর গড় মেদিনীপুরের মাটি থেকে দাঁড়িয়ে একপ্রকার একুশের নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে মঞ্চে দেখা গেল না অধিকারী পরিবারের কাউকেই। একেবারে অধিকারী হীন এদিন মমতার সভা বলা চলে। প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারী সভায় যোগদানের প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বলেন, “পায়ে অপারেশন হয়েছে। বর্তমানে আমার চিকিৎসা চলছে।”
অসুস্থ শিশির, দিল্লিতে দিব্যেন্দু, মমতার সভা ঘিরে কিসের ইঙ্গিত
সূত্রের খবর, তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারি বিশেষ কাজে দিল্লিতে আছেন। অন্যদিকে প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারী পায়ে চোট পেয়ে বর্তমানে অসুস্থ। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। আর শুভেন্দু অধিকারী তিনি এই সভার জন্য কোনরকম আমন্ত্রণ পাননি বলে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার দাবি। পাশাপাশি এদিনের মমতার সভায় শুভেন্দু অনুগামী কাউকেই দেখা যায়নি। এমনকি সভা থেকে মমতার গলায় একবারও শোনা গেল না অধিকারীদের কারোর নাম। উপরন্তু অধিকারী বিরোধী অখিল গিরির নাম বেশ কয়েকবার নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কি শুভেন্দুর পরিবর্তে এবার অখিল গিরির উপরেই ভরসা করছে দল? বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটাই এখন দেখার বিষয়। মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে অন্যান্যবার মমতার সভাকে কেন্দ্র করে দেখা যেত বিশেষ উন্মাদনা। প্রায় ১০০- ১৫০টি বাস ভাড়া করে কর্মী-সমর্থকেরা যেতেন সভায় যোগ দিতে। কিন্তু সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সোমবার কর্মী-সমর্থকদের উন্মাদনা যেন কোথাও বিলীন। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তথা জেলা তৃণমূলের সম্পাদক কণিষ্ক পন্ডা বলেন, “এই সভায় আমন্ত্রণ পাওয়ার কোন ব্যাপারই নেই। কারণ আমাদের চ্যাপ্টার ক্লোজড করে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে এর প্রভাবে সাইনবোর্ডে পরিণত হয়ে যাবে।”
সবমিলিয়ে মমতার সভায় অধিকারীদের অনুপস্থিতি বর্তমানে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে। এরইমধ্যে শুভেন্দু কবে তার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।