কলকাতা, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০: আর ঠিক মাস পেরোলেই দুর্গাপুজো। অন্য বছর এই সময়ে সারা শহর জুড়ে পুজো পুজো গন্ধ ম‘ ম‘ করে। কিন্তু এ বছরটা বিশেষ। করোনাকাল। এই সময়ে দুর্গাপুজোও অন্য বছরের মতো হবে না। সেটাই স্বাভাবিক। তাহলে কেমন হবে করোনা পর্বের পুজো?
এ কথাটা সত্যি, সারা শহর জুড়ে পুজোর বাজেট কমছে। এক তো অর্থনীতির ভরাডুবি। সেই সঙ্গে কোভিডবিধি মেনে পুজো করতে হলে, সেখানে বাহুল্য বাড়ালে চলবে না। যতটা সম্ভব ছিমছাম পুজো করতে হবে।
আরও পড়ুন এই প্রথম পরিচালনায় রুদ্রনীল
এই যেমন সমাজসেবী সংঘের কথাই ধরুন না। ভাবনাচিন্তায় তাক লাগিয়ে দেওয়াটাই এই পুজোর নতুন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এ বছর কোনও নতুনত্ব রাখা হবে না। ভিড় জমে যায়, এমন কিচ্ছু করা হবে না। বরং তিনদিক খোলা মণ্ডপের সামনেই আসতে দেওয়া হবে না কাউকে। দূর থেকে যাতে দশ ফুট উচ্চতার প্রতিমা দর্শন করা যায়, সেই ব্যবস্থাই করছে সমাজসেবী। বাজেটে কাটছাঁট করে বেঁচে যাওয়া অর্থ পাঠানো হচ্ছে কাজহারা পরিবারদের ভরণপোষণে।
বিরাটত্বের নিদর্শন মহম্মদ আলি পার্কের প্রতিমা এবছর মোটে আট ফিট। মণ্ডপও ছোট। আলোর কাজ একেবারে সাধারণ। বিশেষ কিছু থাকবেই না। যতটা সম্ভব ছিমছাম করার চেষ্টা করছে এই পুজো কমিটি।
কোভিডবিধি মেনে ভবানীপুরের ৭৫ পল্লী তার পুজো মণ্ডপের শ্রমিক, কর্মীদের কাজ শুরুর আগেই কোভিড পরীক্ষা করাচ্ছে। এই পুজোয় দর্শকদের জন্য থাকছে স্যানিটাইজার টানেল। রাস্তার দু পাশের ব্যারিকেড তুলে দেওয়া হচ্ছে। দূরত্ব মেনে চলার ওপর জোর দেবেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
ত্রিধারা সম্মিলনী কিন্তু এখনও দোলাচলে। প্রতিমার বরাত দিলেও মণ্ডপের কাজ শুরু হয়নি। তার প্রধান কারণ, গাড়ি থেকে যাঁরা প্রতিমা দর্শন করবেন, শুধু তাঁরাই যে এ পুজোর দর্শক, তা নন। কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যাঁরা দেখতে আসবেন, তাঁদের সংখ্যাই বেশি। এবার এই দর্শনার্থীদের জন্য বিধি বন্দোবস্ত কেমন হবে? ২৫ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরই সিদ্ধান্ত নেবে ত্রিধারা।
সেই একই মত কুমোরটুলি পার্কেরও।
আরও পড়ুন সাতপাক নয়, শুধুই সিঁদুর আর মালায় শুভ পরিণয় মানালির
আর এই কারণে খোদ কুমোরটুলিতেই যেন তাড়া নেই। অন্যবারের চেয়ে কাজ তিরিশ শতাংশ কম। তার ওপর কমেছে বাজেট। মোটে ৮-১০ ফিটের মধ্যে বেঁধে রাখতে হচ্ছে প্রতিমার উচ্চতা। ফলে কমেছে জৌলুসও।
সব মিলিয়ে নিউ নর্মাল দুর্গাপুজো নিয়ে বাংলার চোখ এখনও যেন দিশা খুঁজে পাচ্ছে না।