[মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়]
‘ভাবো ভাবো। ভাবা প্র্যাক্টিস করো’—সেই যে বলেছিলেন ঋত্বিক ঘটক, তারপর কেটে গেছে বহুযুগ। মানুষের স্বাভাবিক চিন্তা এসে দাঁড়িয়েছে প্রশ্নচিহ্নের মুখে। চিন্তার সত্যিই কি স্বাধীনতা আছে? সেই প্রশ্নই প্রতিফলিত যে ছবিতে, তার পোস্টারে লেখা আছে ‘আ পাওয়ারফুল ড্রামা অফ কোর্টরুম ক্ল্যাশ ওভার রাইট টু থিংক’। চিন্তার স্বাধীনতা নিয়ে আদালতকক্ষের এক শক্তিশালী নাটক।
কতটা শক্তিশালী?
এই প্রথম কোনও ছবিতে একসঙ্গে নাসিরুদ্দিন শাহ এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ছবির নাম ‘হোলি কন্সপিরেসি’। শুরু হয়েছিল ‘দেবতার গ্রাস’ নাম দিয়ে। পরিচালনায় শৈবাল মিত্র। বাংলা হিন্দি ইংরেজি আদিবাসী সব ভাষায় কথা বলেন এ ছবির চরিত্ররা। জেরম লরেন্স এবং রবার্ট ই লি-র উপন্যাস ‘ইনহেরিট দ্য উইন্ড’ অবলম্বনে এই ছবিটি তৈরি হয়েছিল ২০১৯-এই। তবে পোস্ট প্রোডাকশন ইত্যাদি মিটিয়ে মুক্তির মুখে মুখেই লকডাউন।
কবে সিনেমাহল খুলবে, বা এবছর আদৌ খুলবে কিনা, সংশয় আর দ্বিধা বিস্তর। অথচ এমন এক পাওয়ারহাউজ ছবির কোনও প্রিমিয়ারই হবে না!
অবস্থা যখন এমনই শঙ্কাকুল, পরিচালক শৈবাল মিত্রর হাতে যেন তারা খসে পড়ল। সৌমিত্র-নাসিরুদ্দিনের এই প্রথম যুগলবন্দি তার কাঙ্খিত আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ারই পাচ্ছে। আচমকা এল খবর।
১৭তম ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসব, স্টুটগার্ড ২০২০ থেকে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ১৫-২০ জুলাই অবধি চলা তাঁদের চলচ্চিত্রোৎসবে প্রিমিয়ার হবে ‘হোলি কন্সপিরেসি’র। তবে করোনা মহামারীর কারণে এবছর উৎসব হবে অনলাইনে।
নিজের দেশ কবে এই এক বিরল যুগলবন্দিকে দেখতে পাবে, জানেন না। তবু তাঁর কাজের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যে এল, তাতে তৃপ্ত পরিচালক শৈবাল মিত্র তাঁর ছবির কলাকুশলীকে এবং প্রযোজক জয়দীপ রায়চৌধুরী ও শুভ্রসারথী চক্রবর্তীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।