Home বিনোদন আবৃত্তিশিল্পী সৌমিত্র ঘোষের কন্ঠে নারীশক্তির অশুভ বিনাশের কাহিনী

আবৃত্তিশিল্পী সৌমিত্র ঘোষের কন্ঠে নারীশক্তির অশুভ বিনাশের কাহিনী

by banganews

বঙ্গ নিউস, ১০ অক্টোবর, ২০২০ঃ   কবি দীধিতি চক্রবর্তীর কবিতা অভিযোজন সম্প্রতি পাঠ করেছেন আবৃত্তিশিল্পী সৌমিত্র ঘোষ। সেই কবিতায় ধ্বনিত হয়েছে নারীশক্তির জাগরণের কথা। সেই জাগরণের পথে নিত্যব্যবহার্য সবকিছুই হয়ে উঠুক নারীর অস্ত্র। নারী যেন নিজেই হয়ে উঠতে পারে নিজের রক্ষাকবচ৷ সেই শক্তিরূপিণী নারীর কথাই এসেছে কবিতাটিতে বারবার।

আরও পড়ুন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য সঙ্কটে, কাতর বাংলা ইন্ডাস্ট্রি

কবিতার নাম অভিযোজন। কবিতায় বলা হয়েছে পুতুল খেলে কাজ নেই আর, খোপার কাঁটা লোক কিংবা জুতার নিচে পেরেক এই সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এই সমাজের অসুখের জন্য অভিযোজিত হয়ে উঠুক নারী। হয়ে উঠুক সংহারক।

মা আসছেন। দুর্গাপুজো নারী শক্তির জাগরণের সময়, আরাধনার সময়, কিন্তু ঐতিহাসিক বা পৌরাণিক সময় থেকে আজকের ডিজিটাল পৃথিবীতে একটা বিষয় অপরিবর্তনীয়। নারীকে বারবার নির্যাতিতা হতে হয়েছে। মুখে নিজেদের আধুনিক বলে পরিচয় দিলেও নারী নির্যাতনের দিক থেকে আমরা এখনো সেই অন্ধকার মধ্যযুগে পড়ে। তাই সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে তাঁর এই আবৃত্তি নারী শক্তির জাগরণের দ্যোতক।

অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির সূচনা করেছিলেন মহামায়া দুর্গা। ঠিক সেই রকমই আজকের নারীরা তাদের অন্তরের শুভ শক্তির দ্বারা অশুভ সমস্ত কালিমা, নিপীড়ন, লাঞ্ছনা, নাশ করে স্বমহিমায় জীবন যাপন করুন । অশুভ শক্তির বিনাশ এবং শুভশক্তির সূচনা হোক। আবৃত্তির প্রতিটি পংক্তিতে এই কথাটাই তুলে ধরতে চেয়েছেন সৌমিত্র ঘোষ।

কবিতার সঙ্গে সৌমিত্র ঘোষের পরিচয় ছেলেবেলা থেকেই। টাকি রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। আর পাঁচটা সাধারণ শিশুর মতোই স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করার মধ্য দিয়েই তাঁর কবিতাকে ভালোবাসা। সেই ভালোবাসাটাই থেকে গেছে চিরকাল। পরবর্তীসময়ে কর্মসূত্রে কলকাতায় আসা। কলকাতা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে তাঁর সেই ছোটবেলার ভালোবাসা নতুন করে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করে৷ বর্তমানে কবিতাকে তিনি বানিয়ে নিতে পেরেছেন নেশা ও পেশা। বহু বিনিদ্র রজনীও কাটিয়েছেন কবিতার কাছে বসে।

সরস্বতীর আরাধনা করার আগে লক্ষ্মীর আরাধনা করা প্রয়োজন, এটিকে সত্য বলে মানেন সৌমিত্রবাবু। তাই কবিতাকে যখন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, বেছে নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন, তখন তাহলে কিছু প্রতিবন্ধকতা এসেছিল বটে, কিন্তু মনের টানে সে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কে পিছনে ফেলে তিনি এগিয়ে চলেছেন কবিতার পথে।

যারা আবৃত্তি করেন তাঁরাই বাচিকশিল্পী এই কথাটিতে সৌমিত্রবাবুর একটু আপত্তি আছে।বাচিকশিল্পী শব্দটার সঙ্গে জুড়ে থাকে একটা বড় জগত। একটা ব্যপ্তি। গান, গল্প সংবাদ ,আবৃত্তি সবই পড়ে তার মধ্যে। তিনি তাই বাচিকশিল্পী না বলে নিজেকে আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেই পরিচয় দিতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। নিজেকে আবৃত্তিশিল্পী বলাটাকে যদিও কিছুটা স্পর্ধা ধৃষ্টতা বলেই তিনি মনে করেন তিনি তবুও নিজেকে আবৃত্তির একনিষ্ঠ কর্মী রূপে পরিচয় দিতে চান সবসময় ।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য লাভ সৌমিত্রবাবুর জীবনের পরম প্রাপ্তি । এছাড়া শ্রীজাত, শঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামী, সুবোধ সরকার এদের সবার লেখার অন্যতম ভক্ত তিনি। প্রিয় কবিদের কথা বলতে গিয়ে সবার প্রথমে অবশ্যই বলেছেন প্রাণের ঠাকুর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কথা।প্রবীণদের সঙ্গে সঙ্গে নবীন কবিদের কবিতাও তিনি পাঠ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবেই দীধিতি চক্রবর্তীর কবিতা পড়ে অনুপ্রাণিত হয়েই অভিযোজন আবৃত্তি করেন সৌমিত্র ঘোষ৷ ভালোলাগা থেকে। কবিতাকে ভালোবেসে আরো অনেকটা পথ চলতে চান তিনি।

You may also like

Leave a Reply!