আমেরিকার একটি শীর্ষস্থানীয় ম্যাগাজিনে কোভিড 19 এর পরিস্থিতি বিবেচনা করে 2020 সালে যাঁরা মানুষের জীবন বাঁচাচ্ছেন এবং মানুষের মধ্যে আশার সৃষ্টি করছেন সেইরকম কয়েকজন আদর্শ মানুষের কথা তুলে ধরা হয়েছে যাঁদের মধ্যে একজন হলেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং প্রতিষ্ঠাতা নীতা আম্বানি।
নীতা আম্বানি 2020 সালের শীর্ষ সমাজপতিদের মধ্যে স্বীকৃত যাঁরা কোভিড সঙ্কটের সময়ে অবদান রেখেছেন। ম্যাগাজিনটি তাকে ফ্রন্টলাইন কর্মীদের এবং দরিদ্রদের খাওয়ানো, তার আর্থিক অবদান এবং ভারতের প্রথম কোভিড 19 হাসপাতাল স্থাপনে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের এর তরফে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তুলে ধরেছে। এই তালিকায় তিনিই একমাত্র ভারতীয় আর বাকি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন টিম কুক, অপরাহ উইনফ্রে, লরেন পাওয়েল জবস, লডার ফ্যামিলি, ডোনাটেলা ভার্সেস, মাইকেল ব্লুমবার্গ, লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও এবং আরও অনেকে।
ইউএস ম্যাগাজিন প্রতি বছরে একটি পুরো সংখ্যা জীবনাদর্শীদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে। ম্যাগাজিনটিতে বলা হয়েছে, “এই বছরের তালিকায় একটি অতিরিক্ত বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে কারণ এই ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে কয়েকজন ব্যক্তি আমাদের জীবন বাঁচাচ্ছেন এবং আমাদের মধ্যে আশা তৈরি করছেন।” আরও বলা হয়েছে, “আমরা বারবার দেখেছি সন্ত্রাসবাদ, ট্রাজেডি এবং ট্রমা-পরবর্তী সময়ে উদার ব্যক্তিরা নমনীয়তার সাথে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের সহায়তা করে। এই তৎপরতা এবং প্রতিক্রিয়াশীলতা জনহিতকে অনন্য করে তোলে … ।” নীতা আম্বানি ও ফাউন্ডেশনের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে ম্যাগাজিনে বলা হয়েছিল, আম্বানির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং নেতৃত্বাধীন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর জনহিতকর উদ্যোগে কয়েক লাখ কর্মচারী ও দরিদ্রদের খাবার ও মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে এবং স্থাপন করা হয়েছে ভারতের প্রথম কোভিড হাসপাতাল। কোভিড 19 রোগীদের জন্য একটি জরুরি তহবিলে প্রায় 72 মিলিয়ন দানও করেছে।
আরও পড়ুন : শ্বাসে সঙ্কট, হাসপাতালে সরোজ খান
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের নীতা আম্বানি বলেছিলেন: “সঙ্কট প্রায় সবসময় তাৎক্ষণিক মনোযোগ, ত্রাণ, সম্পদ, দক্ষতা এবং সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সহানুভূতি দাবি করে। কয়েক বছর ধরে আমরা ফাউন্ডেশন এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর তরফে সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে আমাদের প্রয়াসকে কার্যকর করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা যাতে গ্রহণ করা যায় সে ব্যাপারে নিজেদের প্রস্তুত করছি। আমরা খুশি ও বিনীত যে আমাদের উদ্যোগটি বিশ্বস্তরে স্বীকৃতি পেয়েছে।আমরা সমসময় প্রয়োজনে আমাদের সরকার এবং আমাদের দেশকে সমর্থন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” নীতা আম্বানির নেতৃত্বে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন কোভিড -19 মহামারীর কারণে জাতি যে স্বাস্থ্য ও মানবিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছিল সেগুলি মোকাবেলায় সাহায্য করেছিল।
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রথম উদ্যোগ ছিল মুম্বাইয়ের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে মার্চ মাসে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে 100 শয্যাবিশিষ্ট একটি কোভিড হাসপাতাল তৈরি করা। মার্চের শেষে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এই হাসপাতালে কোভিড আক্রান্তদের জন্য আরও 220 টি শয্যা বাড়ানো হয়েছিল। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ মাস্ক এবং পিপিই উৎপাদনও শুরু করে এবং মহামারী বিরোধী লড়াইয়ে এই আইটেমগুলির উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জনে দেশকে সহায়তা করেছে। লক্ষ লক্ষ লোকের জীবিকা হারানোর মতো মানবিক সঙ্কটের প্রতিক্রিয়া হিসাবে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন অন্ন সেবা নামে একটি দেশব্যাপী খাদ্য পরিষেবা শুরু করেছে যা এখন পর্যন্ত 50 মিলিয়ন খাবার পরিবেশন করেছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম কর্পোরেট খাবারের প্রোগ্রামে পরিণত হয়েছে।