ভারতীয় রেলের পঞ্চাশ শতাংশ শূন্যপদ বিলোপের জন্য জারি হল নির্দেশ। সবকটি শূন্যপদে আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত। শুধু পূর্ব রেলেই এই মুহূর্তে প্রায় ২১ হাজারের কাছাকাছি শূন্যপদ রয়েছে। ভারতীয় রেলে মোট খালি পদের সংখ্যা এখন ২ লক্ষ ৮৭ হাজার। সুরক্ষা বাদ দিলে ফাঁকাপদের সংখ্যাটা প্রায় ২ লক্ষ। তার ৫০ শতাংশ বাতিল করলে প্রায় ১ লক্ষ পদ অবিলুপ্ত করা হয়। এমন অপরিকল্পিতভাবেই পালন করা হচ্ছে কঠোর ব্যয়সঙ্কোচের নির্দেশ। প্রত্যেকজন জেনারেল ম্যানেজারকে পৃথক চিঠি দিয়েছে রেলবোর্ডে। এমতাবস্থায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ৩ হাজার ৬৮১ টি পদে বিলোপের প্রক্রিয়া শুরু করা হল। চার ডিভিশন ও সদর দফতরের মোট ৩ হাজার ৬৮১ পদ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ৮৮৫ টি পদও অন্য এজিএমের আওতায় আসবে।
আরও পড়ুন ক্যান্সার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এইমসের বাঙালি চিকিৎসকের
ভারতীয় রেলবোর্ডের যুগ্ম অধিকর্তা অজয় ঝা’র স্বাক্ষর সম্বলিত নির্দেশ বিভিন্ন জোনাল অফিসে পৌঁছতেই তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই অন্যায্য নির্দেশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে বিভিন্ন রেলকর্মী ইউনিয়ন। তাদের বদ্ধমূল ধারণা, রেলে ব্যাপক কর্মী সঙ্কোচনের জন্যই গোটা দেশে মোট ১০৯ জোড়া মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক।
ইস্ট রেলওয়ের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার জানান ইচ্ছাকৃতভাবে রেলকে বেসরকারি হাতে তুলে দিতেই রেলবোর্ড কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে আনছে। ট্রেনের পরের ধাপে স্টেশনগুলিকে বিক্রি করে দেওয়া হবে, যত কম করে কর্মী থাকবে, ততই প্রাইভেটাইজেশনে সুবিধে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে কর্মী সংগঠনগুলোর সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা করা হয়নি বলে তাদের মত।
তাছাড়াও সব শূন্যপদ বিলুপ্ত হলে বর্তমান কর্মীদের ঘাড়ে বিপুল কাজের বোঝা চাপবে। এবং যাত্রী পরিষেবাও ব্যাহত হবে। রেলে কর্মী সঙ্কোচনের প্রক্রিয়া অবশ্য এর আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। একটি বিশেষ সার্কুলার জারি করে জানানো হয়েছে, যারা ৩০ বছরের বেশি চাকরি করে ফেলেছেন, তাদের কর্মদক্ষতা বিবেচনা করে দেখা হবে৷ সেইমতো প্রতিটি জোনেই রেলকর্মীদের কর্মক্ষমতা যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পঞ্চাশোর্ধ বয়েসী লোকেদের কাজের মান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কাজের মান আশাব্যঞ্জক নয় এমন অজুহাতে সম্প্রতি এক স্টেশন মাস্টারকে চাকরি থেকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছে – এমন তথ্যও উঠে আসছে।