Home দেশ নরেন্দ্র মোদিকে ৫ পাতার চিঠি লিখে আত্মহত্যা এক কৃষকের!

নরেন্দ্র মোদিকে ৫ পাতার চিঠি লিখে আত্মহত্যা এক কৃষকের!

by banganews

ভোপাল, ২ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে মোট পাঁচ পাতার একটি চিঠি লিখে আত্মহত্যা করলেন এক কৃষক। বেশ অভিমানের সুরেই চিঠিটি লেখা। যদিও এই কৃষক আত্মহত্যা করেছেন কি না তা প্রমাণ সাপেক্ষ। চিঠিটি কৃষকের নিজের হাতের লেখা কি না সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখন্ডের ছত্তরপুর জেলার। উদ্ধার হওয়া চিঠি থেকে ও কৃষকের পরিবারের তরফে জানা গেছে, দেনার দায়ে আত্মঘাতী হয়েছেন এই কৃষক।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত কৃষক মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের ছত্রপুর জেলার এক গ্রামের বাসিন্দা। মূলত মোটা অঙ্কের বিদ্যুতের বিল বাকি থাকার কারণেই আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে। কৃষক মৃত্যুর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে পাঁচ পাতার একটি চিঠি লিখেছেন। সেখানে অভিমানের সুরে লেখা, তাঁর মৃতদেহ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা উচিত। যাতে বাকি থাকা প্রায় ৮৮,০০০ টাকার বিদ্যুতের বিল মেটাতে সরকার ওই কৃষকের অঙ্গগুলি বিক্রি করে দেয়৷

গত বুধবার অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর এই আত্মহত্যার ঘটনাটি৷ কৃষকের একটি ছোটো আটাকলও ছিল। তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কায়ক্লেশে চলত সংসার৷ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিল দিতে না পারায় বিদ্যুৎ সংস্থা তাঁর আটাকল এবং মোটরবাইকটিও সিজ় করেছিল৷

বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থায় কর্মরত কৃষকের ভাই বলেন , “আমার ভাইকে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা হয়রানি করেছে৷ তাই তাঁর জীবন শেষ হয়ে গেল৷ ভাইয়ের আটাকল এবং মোটর বাইকটি বিদ্যুৎ সংস্থা সিজ় করার পর থেকেই তিনি অত্যন্ত চিন্তিত ও বিচলিত ছিলেন ”

তিনি আরও বলেন, “ এই বছর ভালো ফসল না হওয়ায় আমার ভাই বিদ্যুতের বিল দিতে পারছিলেন না। তাছাড়া আগে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকার বিল আসতো। হঠাৎ করে প্রায় ৮৮,০০০ টাকার বিল পাঠানো হয়। বিল পরিশোধের জন্য কোনও সময় না দিয়েই ছত্তরপুর জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার আধিকারিকরা আমার ভাইকে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে তার আটা কল বন্ধ করে দেয় এবং মোটরবাইকটি সিজ় করে। আমার ভাইকে হয়রানি ও চাপ সৃষ্টি করে বাইকটি কেড়ে নেয় । ভাই বিল মেটানোর জন্য কিছু সময় চেয়েছিল, কিন্তু, সংস্থার কর্মকর্তারা তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেনি৷” সেইসঙ্গে তাঁর ভাইয়ের আত্মহত্যার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

 

BIG BREAKING! আচমকা অসুস্থ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ভর্তি জরুরীবিভাগে

কৃষকের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া চিঠিটিতে লেখা আছে, ““যখন কোনও রাজনৈতিক নেতা বা বড়ো ব্যবসায়ী কেলেঙ্কারি করেন তখন সরকারি কর্মচারীরা কোনও পদক্ষেপ করেন না। সেইসব নেতা বা ব্যবসায়ীরা যখন ঋণ নেয় তখন তা পরিশোধ করার জন্য যথেষ্ট সময়ও পান। কিন্তু, যখন কোনও ছোটো চাষী অল্প পরিমাণ আর্থিক ঋণও নেয় তখন সরকার একবার খোঁজও নিয়ে দেখে না কেন সে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না, উল্টে তাঁকে লোকজনের সামনে অপমান করে”

বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কর্মীদের একহাত নিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন বিধায়ক তথআ মন্ত্রী হর্ষ যাদব। যদিও সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কর্মকর্তাদের থেকে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷

ছত্তরপুর জেলার কালেক্টর, শীলেন্দ্র সিংহ বলেন, “মৃত ব্যক্তির বাবা পেনশন পান এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী কিষাণ কল্যাণ যোজনারও সুবিধা পান। তার ভাই বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থায় চাকরি করেন। প্রশাসন দ্রুত নিহতের পরিবারকে 25,000 টাকা দিয়েছে৷ এই ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং আত্মহত্যার জন্য যদি কেউ বা কারা দোষী প্রমাণিত হয়, তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

You may also like

Leave a Reply!