Home দেশ এক প্রজন্মব্যাপী মহামারী : কর্মক্ষম তরুণদের মুখে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা

এক প্রজন্মব্যাপী মহামারী : কর্মক্ষম তরুণদের মুখে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা

by banganews

অনূর্ধ্ব ত্রিশ বয়সী ভারতীয় যুবকের সংখ্যাগুরুই বর্তমানে কর্মী সংকোচন এবং ছাঁটাইয়ের ফলে কর্মহীন। ভারতের মোট জনসংখ্যার কর্মক্ষম সিংহভাগ হওয়ায় তা ছিল ভারতীয় অর্থনীতির বিশেষ সুবিধাজনক একটি দিক, এদিকে বিশ্বজোড়া মহামারীর কবলে পড়ে ভারত এমন এক পরিস্থিতির সম্মুখীন যেখানে তারা খাতায়-কলমে নাম লিখিয়েছে বেকারের দলে।
বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্র যেমন রিটেল মার্কেট, হসপিটালিটি, ট্যুরিজম ইত্যাদি সেক্টর গুলি বর্তমান পরিস্থিতিতে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিংকে মান্যতা দিতে গিয়ে প্রবলভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে কাজের সুযোগ থেকে একটা বৃহৎ অংশকে বাতিল করে দিতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানিরা। আটলান্টিক কাউন্সিল থিংক ট্যাঙ্ক জানাচ্ছে, গোটা বিশ্ব জুড়ে নূন্যতম পারিশ্রমিকের, স্বল্প কুশলী,কর্মীদের সূচনা স্তরের মাস মাইনে দিয়ে কাজে লাগানো হচ্ছে। এমনকি কর্মীদের ট্রেনিংয়ের পিছনেও অত্যন্ত স্বল্প অর্থ খরচ করছে ফার্ম গুলি। ফলে উচ্চশিক্ষার জন্য যে সকল ছাত্র-যুবরা সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করেছিল তারা এসময় ঘোরতর সংকটে।

আরও পড়ুন কলকাতা সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে বাড়বে কিনা লকডাউন সে নিয়ে আজ বৈঠক নবান্নে

মে মাসে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) সারা বিশ্বকে সতর্ক করেছিল যে কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে একটি বৈশ্বিক স্তরে একটি অর্থনৈতিক ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে, যা যুব শক্তির বিপুল অংশকে স্থায়ীভাবে বেকার করে দিতে সক্ষম, এবং এই ভাইরাসের প্রভাবে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক সংকট আগামী কয়েক দশককে উত্তরাধিকারসূত্রে বহন করতে হবে এই প্রজন্ম কে। আইএলও নিজেদের অনুমান প্রকল্পে জানিয়েছে গোটা পৃথিবীতে নতুন প্রজন্মের কর্মক্ষম যুবশক্তি এই মহামারী দ্বারা আক্রান্ত হয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তরের একটি সামঞ্জস্যহীন ফাঁক তৈরি করছে। যা পূরণ করতে একটা গোটা প্রজন্মকে শিকার হতে হবে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার।
শতকরা হিসেবে তারা জানাচ্ছে ১৭ শতাংশ তরুণ এই লকডাউনের দরুন নিজেদের কাজ হারিয়েছে।
ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল হওয়ায় ভারতে প্রতি ছয়জনের একজন যুবক হারিয়েছে তাদের স্থায়ী উপার্জন।
এ দেশের সমগ্র জনসংখ্যার ৪১ শতাংশ হল ১৫-২৯ বছর বয়সের মধ্যবর্তী। ২০২৮-১৯ সালে সেন্টার ফর মনিটরিং দ্য ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই) জানায় ভারতের ১৭.৩ শতাংশ তরুণ,কর্মক্ষম মানবসম্পদ দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিশেষ হাতিয়ার হবে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিএমআইই থেকে দাখিল হওয়া নোটিশে দেখা যাচ্ছে কেবলমাত্র এপ্রিল মাসেই দেশের ২০-৩০ বছর বয়সী মোট ২৭০ লক্ষ মানুষ নিজেদের কর্মসংস্থান হারিয়ে দিশেহারা।

আরও পড়ুন সংক্রমণ রুখতে কড়া লকডাউনের সিদ্ধান্ত, নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন

ভারতের অর্থনীতিতে এই মহামারী যে শূন্যতার সৃষ্টি করবে তা ভরাট করতে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে মত দেন বিশিষ্ট মহলের। বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু মানুষ অনিশ্চিত বেশকিছু পেশাকে আঁকড়ে ধরে দিন গুজরান করছেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মতে কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ায় এবং একই সঙ্গে ভারতে ইতিমধ্যে উপস্থিত বেকার সমস্যার সমাধান না মেলায় তা আগামীতে লেবার মার্কেট কে প্রবলভাবে বিধ্বস্ত করবে। বহু অর্থনীতিবিদ যদিও আশাবাদী যে করোনাত্তর পৃথিবীতে বাজার অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে চাহিদা বাড়বে এবং তারই সঙ্গে বাড়বে কর্মীর প্রয়োজনীয়তা, ফলে বেকার সমস্যা কমে যাবে বহুলাংশে।

You may also like

Leave a Reply!