TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

খুলে গেল শ্যাওড়াফুলির নিস্তারিণী কালীমন্দির

লকডাউন এর পর আজ প্রথম মন্দিরের দ্বার ভক্তদের জন্য খোলা হল। বহুদূর থেকে ভক্তসমাগম হয়৷ ট্রেন চলছে না ফলে মানুষজন তেমন আসতে পারেন নি৷ চার পাঁচ জন এসেছিলেন৷ মন্দির সংলগ্ন স্থানে পুজোর সামগ্রী বিক্রি থেকে খাবারের দোকান এসবের পসরা সাজিয়ে বসেন যেসব মানুষ, মন্দির এতদিন বন্ধ থাকার কারণে তাদের রুটি রুজিতে টান পড়েছে৷

‘বর্ধমান জেলার অন্তর্ভুক্ত পাটুলির দত্ত রাজবংশজাত সাড়াপুলি বা শেওড়াফুলি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা / “ক্ষত্রিয়রাজ” রাজা মনোহর রায়ের পুত্র রাজা / রাজচন্দ্র রায় / রাজচন্দ্রের প্রপৌত্র রাজা হরিশ্চন্দ্র রায় / ১৮২৭ খৃঃ (১২৩৪ সালে জ্যৈষ্ঠ মাসে) গঙ্গার তীরবর্তী তাঁর নিজ রাজ্যে পঞ্চমুণ্ডী আসনে শিবপত্নী দক্ষিণকালিকা শ্রীশ্রী নিস্তারিণী মাতার পাষাণময়ী মূর্তি তথা মন্দির ও সেবা প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত দেবসেবা ও মন্দির পরিচালনার সম্পূর্ণ তত্ত্বাবধায়ক শেওড়াফুলি রাজপরিবার। ‘

আরো পড়ুন –কালী ও জগদ্ধাত্রী পুজোর মতই তান্ত্রিক মতে পুজো হয়ে থাকে অন্নপূর্ণার

এই তথ্য আছে শেওড়াফুলির বিখ্যাত নিস্তারিণী কালিমন্দিরের গায়ে।
প্রতিষ্ঠাতা হরিশচন্দ্র রায়ের নামে প্রচলিত এক অদ্ভুত গল্প আছে। দেবী কালীর ভক্ত মানুষটি নাকি ছিলেন পরম নিষ্ঠাবান। কিন্তু তার গায়ে লেগেছিল স্ত্রী হত্যার কলঙ্ক। সেই কলঙ্কে অনুতপ্ত ও জর্জরিত হয়ে রাজা শেষে এক জঙ্গলে যান। আত্মহত্যা করাই উদ্দেশ্য ছিল তার। দুঃখিত রাজা পথ চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন এক বনের মাঝে। তখন স্বপ্নে দেবী আসেন। জানান যে গঙ্গাতীরে মন্দির ও দক্ষিণা কালীর মূর্তি স্থাপন করতে হবে। যে শিলাখণ্ডে তিনি শুয়ে আছেন সেই শিলাখণ্ড থেকেই তৈরি হবে মন্দিরের কালীমূর্তি।
রাজা ফিরেছিলেন নিজের দরবারে। লোক দিয়ে নিয়েও এসেছিলেন সেই শিলাখণ্ড। জানা যায় আসলে সেই শিলাখণ্ড আসলে কষ্টিপাথর। সেখানেই ইতি নয়। কদিন পরেই আসেন এক ভাস্কর। তিনিও স্বপ্নে দেখেছেন দেবীকে। তিনি মূর্তি গড়তে এসেছেন। এভাবেই তৈরি হল মন্দিরের নিস্তারিণী মূর্তি।

আরো পড়ুন –স্থাপত্য- ভাস্কর্যে সমৃদ্ধ খাজুরাহোর কান্দারিয়া মহাদেব মন্দির

মন্দির তৈরির পর এই মন্দিরের পশ্চিমেই কুটির তৈরি করে থাকতেন রাজা।
রানী রাসমণির সঙ্গেও নাকি দেখা হয়েছিল এই দেবীর। শেওরাফুলি ঘাটের কাছ দিয়ে বজরায় করে যাচ্ছিলেন রানী। ঘাটের কাছাকাছি পৌঁছে দেখলেন এক কিশোরীকে। অপূর্ব সুন্দরী সেই কিশোরী জানালো সে মন্দিরের কাছেই থাকে। রানী মন্ত্রমুগ্ধের মত চলেছিলেন তার পিছু পিছু। মন্দির আসতেই যেন মিলিয়ে গেল মেয়েটি হাওয়ায়। রাসমণি পুজো দিতে গিয়ে নিস্তারিণীর মূর্তির দিকে তাকাতেই দেখলেন সেই একই চোখ, সেই একই হাসি। কিশোরীই যেন বসে আছেন মায়ের আসনে।
নানান জায়গা থেকেই ভক্তরা আসেন মায়ের মহত্ত্বের কথা শুনে। আর প্রতি অমাবস্যায় পুজোয় মা ও ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ন করেন। যারা ভক্ত তারা অনায়াসে খুঁজে চলে আসতে পারেন শেওড়াফুলি। যেখানে মায়ের সদা হাস্যময় মূর্তি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।