TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

গ্রামের মহিলাদের পটের ছবি আঁকা মাস্ক এখন শহরের অলিগলিতে

বঙ্গ নিউস, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ঃ  করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে সারাদেশ আতঙ্কিত। চলছে বিধি নিষেধ। মানুষ এখন গৃহবন্দী। কাজ হারিয়েছে বহু মানুষ। মানুষ রুটি রুজির জন্য ভিন্ন কাজ বেছে নিয়েছেন। লকডাউনের অন্ধকার দূর করে আলো ফুটেছে পটুয়া পাড়ায়। পটের চিত্র আঁকার অর্ডার আসছে দিল্লি গুজরাট হায়দ্রাবাদ এবং আরও অনেক দেশ থেকে ।ভরসা সোশ্যাল মিডিয়ার যোগাযোগ। ফোন পে মাধ্যমে টাকা মেটালেই পছন্দের পট চিহ্নিত মাক্স ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে শহরের অলিগলিতে।

আরও পড়ুন মায়ের পুজোর আগে রক্ত দিলেন উদ্যোক্তারা

অর্ডারের চাপ সামলাতে এখন না খাওয়া-দাওয়া শিকেয় উঠেছে পটুয়াদের। সংসার সামনে মহিলা পটুয়া শিল্পীরা করোনা যুদ্ধে শামিল।
দিনরাত এক করে পটের ছবি এঁকে সেলাই করে তৈরি করছেন কাপড়ের মাস্ক। পটের মাস্কের হাত ধরেই ঘটেছে লক্ষ্মী লাভ। হাসি ফুটেছে চন্ডিপুরের পটুয়াদের মুখে।

করোনা ও লকডাউনের জন্য মেলা, দোকানপাট সব বন্ধ। ফলে পটের ছবি আঁকা জামাকাপড়, দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্র কিংবা ঘর সাজানো পটের শো-পিসের বিক্রি বন্ধ। জমানো টাকার প্রথমে মাসখানেক সংসার চালানোর পর তাও শেষ ।কোনরকমে রেশনের চাল দিন চলছে। তারপর আম্ফানের ঘর ভেঙে গিয়ে দিশেহারা অবস্থায় ,হবিচক নানকারচকের গরিব পটুয়ারা। বর্ষায় মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুও নেই। হাজার ছোটাছুটি করে আম্ফানের ক্ষতিপূরণ জোটেনি বলে অভিযোগ।

দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষগুলির পাশে দাঁড়িয়ে পথ দেখালেন স্থানীয় এক প্রধান শিক্ষক ।তার পরামর্শেই পটশিল্পী শুরু করেছেন পটের মাস্ক তৈরীর কাজ। মাসখানেকের মধ্যেই আঁকা ডিজাইন এর অর্ডার আসতে শুরু করেছে গুজরাট বাঙালি বাসিন্দাদের কাছ থেকে।
হবিচক নানকারচক লোকশিক্ষা ও শিল্পী পটুয়া সমিতির ছাতার তলায় কাজ হারা পটুয়ারা পটের মাস্ক ঘিরে আশার আলো দেখছেন। সমিতির সম্পাদক আবেদ চিত্রকর বললেন, কিছুদিন আগে কলকাতা একটি সংস্থা ছোট ছোট কাপড়ের শ’খানেক পট এঁকে দেওয়ার অর্ডার দেন। ওই কাপড়ের টুকরো দিয়ে তারা মাস্ক তৈরি করবেন। স্থানীয় প্রধান শিক্ষক অরুণাংশু প্রধান পটুয়াদের পরামর্শ দেন, সমিতির উদ্যোগে মাস্ক তৈরি করে বিক্রি করার জন্য। এক একটি মাক্স এর দাম ধার্য হয়েছে 50 টাকা। তিনি এজন্য সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ তৈরি করে বাহারি মাক্স এর ছবি ও দাম দিয়ে বিজ্ঞাপন দেন। দিল্লি হায়দ্রাবাদ সহ বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যে ক্যুরিয়ারে করে দেড়শোর বেশি পটের মাস্ক পাঠানো হয়েছে।
কলকাতার বিভিন্ন সংগঠন থেকে ৬০০ বেশি অর্ডার এসেছে ।

আরও পড়ুন দুর্গাপুজোয় লাইভে ভরসা বেলুড়মঠের

আলোক পটিদার, সায়েরা, রিজিয়া এইসব শিল্পীরা বলেন কয়েক মাস হাতে কাজ না থাকায় সময় কাটতো না ।আর এখন সকাল থেকেই মাস্ক তৈরীর জন্য পট আকঁতে বসে যাই দলবেঁধে। কাজের ক্লান্তি ভুলতে পট আঁকার সময় একসঙ্গে গলা মিলিয়ে গান গাইছেন। দেড়িয়া মাছের বিয়ে করাতে, যাব লো রঙ্গিলা /পোনা মাছ বলে আমি, পালকি নিয়ে চল রঙ্গিলা’। গানের কথার সঙ্গে সঙ্গে তাদের হাতের ছোঁয়ায় একটু একটু করে মাস্কে ফুটে উঠেছে পটচিত্র ।