বাংলার যাত্রায় একটা যুগের শেষ। চলে গেলেন যাত্রাসম্রাট ত্রিদিব ঘোষ। সোমবার ভোর ৫টা বেজে ৩০ মিনিটে যাদবপুরে নিজের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। লকডাউনের পরই আবার নতুন করে যাত্রার রিহার্সাল শুরু করার কথা ছিল তাঁর। ছিল যাত্রা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার এবং উন্নতি বিধান করার বিভিন্ন পরিকল্পনা। অন্য বছর এই রথের সময়েই শুরু হয় নতুন যাত্রার মরশুম। আর এ বছর যেন সেই মঞ্চটাই নিভে গেল ত্রিদিব ঘোষের সঙ্গে।
১৯৭৫ সালে চিত্তরঞ্জন অপেরায় আত্মপ্রকাশ করেন ত্রিদিব ঘোষ। অসামান্য অভিনয় দক্ষতায় খুব তাড়াতাড়ি তিনি এ জগতে শ্রেষ্ঠ হয়ে ওঠেন। মূলত খলনায়ক চরিত্রেই জনপ্রিয় ছিলেন ত্রিদিব। একটা সময় সারা বাংলা এই যাত্রা সম্রাটের নামে জনজোয়ারে ভাসত। ৪৫ বছরের যাত্রা জীবনের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন পরিচালনার কাজে।
প্রথমে চিত্তরঞ্জন অপেরা দিয়ে তাঁর যাত্রা জীবন শুরু, এরপর একে একে ‘নট্ট কম্পানি’, ‘ভারতী অপেরা ’, ‘ অগ্রগামী অপেরা ’, ‘লোকনাট্য অপেরা ’, ‘গানবানী অপেরা ’, ‘নটরাজ অপেরা’ সহ বহু বিখ্যাত অপেরায় অভিনয় করেন। তাঁর অভিনিত পালা, ‘মা বিক্রির মামলা’, ‘হাটে বাজারে ’ ‘আজকের মির্জাফর’ , ‘ ভগবানের ছদ্দবেশে’, ‘ সম্রাট ঔরঙ্গজেব’, ‘কাল কেউটের ছোবল’, ‘ বুনো ওল বাঘা তেঁতুল’ সুপার ডুপার হিট। ত্রিদিব ঘোষের অভিনীত শেষ যাত্রা ‘উলঙ্গ সম্রাট’। এছাড়াও টলিউডের সিনেমাতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে ‘আত্মীয় স্বজন’, ‘ আশ্রয়’, ‘বাহাদুর’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’-এর মত হিট ছবিতে।
আরও পড়ুন : আমেরিকার ‘শ্রেয়া ঘোষাল দিবস’ পা দিল দশ বছরে
যাত্রা আর্টিস্ট ইউনিয়ন, সংগ্রামী যাত্রা প্রহরী-র অভিভাবকের দায়িত্বে ছিলেন ত্রিদিব ঘোষ। আজ সকালে তাঁর বাস ভবনে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ অগণিত ভক্তবৃন্দ। পরিবারে রয়েছেন চার ভাই এবং তিন বোনকে। প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের মে মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মারা যান ত্রিদিব ঘোষের একমাত্র ছেলে অরিদীপ্ত ঘোষ।