TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

আজ শিলচরের মাতৃ ভাষার স্মরনের দিন

আমরা সবাই ২১ শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবস পালন করি । সেই দিন বহু ভারতীও ও বাংলাদেশী ভাই বোন দের আত্মত্যাগের দিন । আমরা সবাই নিজেরদের মত করে এই দিনটি পালন করি । কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এই দিনের তাৎপর্য । আজকের দিনে আসামের শিলচরে মাতৃভাষার জন্য প্রান দেন ১১ জন বাঙালি। আজ থেকে বহু বছর আগে ১৯৫২ সালে পূর্ববঙ্গের ঢাকা শহরে মাতৃভাষার জন্য প্রান দিয়েছিলেন ১১ জন বাঙালি । জাদের মধ্যে ছিলেন সালাম ,রফিক, জব্বার, বরাকতের মত মানুষেরা ।বাংলা ভাষা কে রাষ্ট্রীয় ভাষা করার জন্য লড়তে থাকেন এই তরুণরা। এই আন্দোলন পরবর্তী সময়ে গিয়ে পাকিস্থানের অধীনতা থেকে মুক্ত হবার লড়াই তে পরিণত হয়ে যায় । দীর্ঘদিন এই লড়াই চলতে থাকে । অবশেষে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে ।ঢাকা শহরে এই আন্দোলনের বলিদান এর ৯ বছর পর ভারতে আসাম রাজ্যে আরও একটি আন্দোলন হয় যার কথা আমরা অনেকেই জানি না। সেই আন্দোলনে প্রান হারান ১১ জন বাঙালি।

১৯৪৭ সালে সিলেট কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একভাগ যায় পাকিস্থানে আর একভাগ থাকে আসামে।সেই ভাগে আছে কাছাড় ,করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি জেলা । যাদের নিয়ে তৈরি হয় বারাক উপত্যকা । আসামে বাস করেন প্রচুর বাঙালি। তাই তাদের সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা করা হয় ,যদিও একদল মানুষ চেয়েছিল যে অসমিয়াকেই তাদের সরকারি ভাষা হিসেবে রাখা হবে। কিন্তু বিধানসভায় উত্থাপন করা হয় রাজ্য ভাষা বিল। এবং অনেক আলোচনার পর ঠিক করা হয় যে অসমিয়া হবে আসামের সরকারি ভাষা।এই কথা ঘোষণা করার পর ১৯৬১ সালে গঠন করা হয় কাছাড় গণ পরিষদ।তারা ১৯ শে এপ্রিল পদযাত্রা ও করেন। বাংলা ভাষার জন্য পথে পথে ওপ্রচার চালানো হয়। জারী হয়ে যায় ১৪৪ ধারা। ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় নামেন। বহু মানুষ গ্রেপ্তার হন। সেই দিন শিলচর রেল স্টেশন অবরোধ করেন সত্যাগ্রহীরা ।পুলিশ তাদের পায়ের বুট , লাঠি দিয়ে মেরেছিল ।এর পরেই দুপুর আড়াইতে নাগাদ অবিরাম গুলি বর্ষণ হতে থাকে আন্দোলনকারী দের ওপর । সেদিন ১২ জনের গায়ে গুলি লাগে । তাদের মধ্যে ৯ জন সেদিনই মারা যান ।পরে আর ২ জন । এদের মধ্যে ছিলেন কমলা ভট্টাচার্য ,কানাইলাল নিয়োগী , হিতেশ বিশ্বাস আরও অনেকে। এই ঘটনার পর সরকার বাধ্য হন বাংলা কে অসমের সরকারী ভাষা হিসেবে মেনে নিতে ।তাই আজকের দিন সেই শহীদ দের কথা মনে রেখে অসমে পালন করা হয় মাতৃভাষা দিবস।