TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

সিঙ্গুরের ডাকাতকালী মন্দিরে শূদ্রদের আনা জলে শুরু হয় পুজো

সিঙ্গুরের ডাকাতকালী মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। ৫০০ থেকে ৫৫০ বছরের প্রাচীন সিঙ্গুরের এই ডাকাতকালী মন্দির। বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের পাশে সিঙ্গুরের পুরুষোত্তমপুর এলাকায় অবস্থিত এই ডাকাতকালী মন্দির।

আগে এই এলাকায় সরস্বতী নদীর পাশে জনমানবশূন্য জঙ্গলে ডাকাতরা কুঁড়েঘর বানিয়ে ঘট পুজো করে ডাকাতি করতে যেত। আগে নরবলি হত।

পরে বর্ধমানের রাজার দান করা জমিতে সিঙ্গুর থানার চালকেবাটি গ্রামের মোড়লরা এই মন্দির তৈরি করে সেখানে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। কালীপুজোর দিন মোড়লদের পুজোর পর অন্য ভক্তদের পুজো নেওয়া হয়।

আরো পড়ুন

কেন করা হয় রটন্তী কালী পূজা?

এই মন্দির গড়ে ওঠার পিছনেও ইতিহাস আছে। কথিত আছে, অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দেখতে মা সারদা কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাচ্ছিলেন। পথে রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত মায়ের পথ আটকে দাঁড়ায়। সেই সময়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে ডাকাতরা নাকি রক্তচক্ষু মা কালীর মুখ দেখতে পেয়েছিল! ভুল বুঝতে পেরে মা সারদার কাছে ক্ষমা চায় তারা। ততক্ষণে সন্ধে নেমে যাওয়ায় সেই রাতে ডাকাতদের আস্তানাতেই মা সারদার থাকার ব্যবস্থা হয়। সারদাকে রাতে খেতে দেওয়া হয় চালকড়াই ভাজা। পরদিন সকালে ডাকাতরা মা সারদাকে দক্ষিণেশ্বরে দিয়ে এসে ডাকাতিই ছেড়ে দেয়।

কিন্তু সেই থেকে কালীপুজোর দিনে মায়ের প্রথম নৈবেদ্য প্রসাদ হিসাবে চালকড়াই ভাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়াও লুচি ভোগ, ফল দেওয়া হয়। মন্দিরের কালীপুজোর দিন চার প্রহরে চারবার পুজো ও ছাগ বলি হয়।

পুরুষোত্তমপুর গ্রামে এই ডাকাতকালীর মন্দির থাকায় মল্লিকপুর, জামিনবেড়িয়া ও পুরষোত্তমপুর– এই তিন গ্রামে কোনো বাড়িতে বা বারোয়ারিতে কোনও কালীপুজো হয় না। এমনকি এই এলাকার কোনও বাড়িতে দেওয়ালে টাঙানো থাকে না কালীর ক্যালেন্ডারও।

মা এখানে এতটাই জাগ্রত যে, এই প্রতিমার পুজো ছাড়া অন্য কালী প্রতিমার পুজো করতে সাহস পায় না এলাকার মানুষজন। বছরে একবার কালীপুজোর দিন শূদ্রদের আনা গঙ্গা জলে মন্দিরের দরজা বন্ধ করে ঘটের জল পাল্টানো হয়। সেই সময় কোনও মহিলা মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না।