TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

সমুদ্রের ভেতরে ঠিক 1.5 কিলোমিটার গেলে দেখা পাওয়া যায় এই মন্দিরের। নিষ্কলঙ্ক মহাদেব মন্দির।

ভারত চিরকালের স্থাপত্য- ভাস্কর্যের রহস্যময়তায় ভরপুর একটি দেশ। এত আশ্চর্য হয়তো সারা পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। সেই সমস্ত আশ্চর্যের মধ্যে হিন্দু দেবদেবীর মন্দিরের উৎপত্তি নিয়ে অনেক আশ্চর্য লোকগাথা ছড়িয়ে আছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। অনেক মন্দিরের কথা শোনা যায় কিন্তু মাঝ সমুদ্রে ডুবে থাকা মন্দিরের রহস্য আজও মানুষকে টানে।এরকম মন্দির দেখতে হলে যেতে হবে গুজরাটে। গুজরাটের ভাবনগর জেলার আরব সাগরের তীরে কোলিয়াক গ্রাম। এখানেই সমুদ্রের ভেতরে ঠিক 1.5 কিলোমিটার গেলে দেখা পাওয়া যায় এই মন্দিরের। অদ্ভুত এই শিবমন্দিরের নাম নিষ্কলঙ্ক মহাদেব মন্দির।

আরো পড়ুন – আগামী ৮ই জুন থেকে অফিস এবং ধর্মীয় স্থানগুলিতে যেসব নিয়ম মেনে চলতে হবে

‘মহাদেবের অদৃশ্য মন্দির’ নামে পরিচিত এই মন্দির টির চারিদিকে শুধুই সমুদ্র আর সমুদ্র। এই মন্দিরটির বিশেষত্ব হল জোয়ারের সময় মন্দিরের শিবলিঙ্গ গুলি বিলুপ্ত হয়ে যায় আবার কেবল ভাটার সময় শিবলিঙ্গ গুলি লক্ষ্য করা যায়। জলে ডুবে থাকা অবস্থায় শুধুমাত্র মন্দিরের 20 ফুট লম্বা পাথরের তৈরি থামটির ওপরের অংশ ও মন্দিরের ধ্বজাটি দেখা যায়। প্রতিদিন দুপুর 1 টার পর মন্দিরের জল নামতে শুরু করে এবং দর্শনার্থীরা একে একে আসতে শুরু করে। আশ্চর্য কারণবশত দুপুর 1 টা থেকে রাত্রি 10 টা পর্যন্ত প্রবেশ পথে সমুদ্রের জল আসে না। এই মন্দিরে মোট পাঁচটি শিবলিঙ্গ আছে। প্রতিটি শিবলিঙ্গের সাথে একটি নন্দীর মূর্তি লক্ষ্য করা যায়। ভক্তগনের হাত পা ধোয়ার জন্য পান্ডব কুন্ড নামে একটি পুকুরও আছে।
নিষ্কলঙ্ক মহাদেব মন্দিরকে ঘিরে লোকমুখে অনেক ইতিহাস প্রচলিত রয়েছে। কথিত আছে যে এই মন্দিরটি পান্ডবদের আমলে তৈরি হয়েছিল। মহাভারতের কুরুক্ষেত্রর যুদ্ধে কৌরবদের এবং অন্যান্য দের হত্যা করার পর পান্ডবরা অনুশোচনায় তপ্ত হয়ে ভগবান কৃষ্ণের কাছে গেলে কৃষ্ণ পান্ডবদের একটি কালো পতাকা এবং কালো গরু দিয়ে বলেন যে যখন এগুলি সাদা হয়ে যাবে তখন পান্ডবরা পাপমুক্ত হবে। কৃষ্ণ তাদের মহাদেবের
কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেন। পান্ডবরা বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করার পর কোলিয়াকে সমুদ্রের তীরে পৌঁছালে সেগুলো সাদা হয়ে যায়। তখন পান্ডবরা শিবের আরাধনার জন্য এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া ভিন্নমতও প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বলেন ভগবান কার্তিক এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারকাসুরকে হত্যার পর কার্তিকের মনে অনুশোচনার জন্ম নিলে তা থেকে মুক্তি পেতে শিবের আরাধনা করার জন্য তিনি এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমায় পুজো দিতে এখানে বহু মানুষের আগমন ঘটে। অনেকেই মৃত আত্মীয়ের অস্থি বিসর্জনও করেন।
সমুদ্রের ঢেউয়ের তীব্রতা সহ্য করার ক্ষমতা সহ এই মন্দিরের নির্মানশৈলী আজও বর্তমান যুগের ইঞ্জিনিয়ারদের অবাক করে।

আরো পড়ুন – মন্দিরটি এমনভাবে বানানো হয়েছিল যাতে সূর্যের প্রথম আলো মন্দিরের গর্ভগৃহে রাখা বিশাল সূর্য দেবতার মূর্তিতে পড়ে।