TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

শক্তি সত্যি খুঁজতেন অবনীকে, ‘সারা কলকাতার লোক যা পারে’ তাই করতে চাইতেন উত্তমকুমার- জানেন কি?

 

‘দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া
কেবল শুনি রাতের কড়ানাড়া
‘অবনী বাড়ি আছো?’

বেলগাছিয়া ভিলায় ১৯৭৮ সালের জুন মাসে এসে উঠেছিলেন সপরিবারে বিধায়ক ভট্টাচার্য। তাঁর পরিচয় প্রথমে একটু দেওয়া দরকার কারণ বঙ্গসমাজ তাকে ভুলে গেছে অবহেলায়। রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য বিধায়ক ছিলেন নাট্যকার, ঔপন্যাসিক এবং সাংবাদিক। লিখেছেন প্রচুর। নাটক ও চলচ্চিত্রের সংলাপ লিখেছেন অনেক। মৃণাল সেন পরিচালিত ‘অবশেষে’র উকিল, ‘গাঁয়ের মেয়ে’তে কবি, ‘উত্তর মেঘ’–এ উকিল, ‘সুধা’ ছবিতে গগন পাড়াই, ‘অবাক পৃথিবী’র দোকানদার— এমন কত না বর্ণময় চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন! তো সেই বিধায়কবাবুর বাড়ি ছিল ব্লক-জি ফ্ল্যাট-২। একদিন রাত্রের আড্ডা সেরে তাঁর ছেলে বিমোচন এবং তার বন্ধুরা যার মধ্যে ছিলেন তপন দাস( যিনি সেই সময় আনন্দবাজারের ফটোগ্রাফার ছিলেন, পরে আনন্দবাজারের চিফ ফটোগ্রাফারও হন) এরা দেখেন ফ্ল্যাটের দিকে মুখ করে পাজামা পাঞ্জাবি পরে একজন পেচ্ছাপ করছেন। ভদ্রলোককে জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানান আর চাপা যাচ্ছিল না কিছুতেই। রে রে করে তেড়ে উঠতে গেলে তপন বাবু চিনতে পারেন প্রিয় কবিকে। শক্তি চট্টোপাধ্যায়। এই অঞ্চলেই ফ্ল্যাট ব্লক-জি ফ্ল্যাট-১ এ থাকতেন অবনীনাথ ভট্টাচার্য। কবির বন্ধু। যার বাড়ির সামনের ডাক থেকে জন্ম নিয়েছিল সেই বিখ্যাত পংক্তি- ‘অবনী বাড়ি আছো?’

 

এরকমই এক অভূতপূর্ব প্রস্রাব কান্ড ঘটিয়েছিলেন উত্তমকুমার। বিধায়ক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল উত্তম পরিবারের। তিনি , তরুণকুমার আসতেন বিধায়কবাবুর বাড়ি। উত্তম অবশ্যই কম।খ্যাতির বিড়ম্বনা। তবে শ্রদ্ধা করতেন ভীষণ। এরকমই এক আড্ডায় তরুণকুমার এসেছিলেন বিধায়কবাবুর বাড়িতে। সেদিনই বিমোচন (বিধায়কবাবুর পুত্র) শুনেছিলেন এই ঘটনা। রাত বারোটায় সময় বাড়ি এসে তরুণ কুমার, স্ত্রী গৌরী দেবী আর গৌতম কে ঘুম থেকে তুলে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন নায়ক।

 

 

গাড়ি থামে মাঝেরহাট ব্রিজের মধ্যিখানে। দরজা খুলে নেমে রেলিং এর ধারে দাঁড়িয়ে কারো কথা না শুনে প্রস্রাব করার পর বলেছিলেন,‘সারা কলকাতার লোক রাস্তায় হিসি করতে পারে, আর শালা উত্তমকুমার পারে না? তোরা সাক্ষী রইলি উত্তমকুমারও পারে।’ চারপাশের খ্যাতি, মোসায়েব, মুখোশ পড়া লোকদের ভিড় থেকে বেরিয়ে, ক্যামেরা আর আলো ভরা জগৎটা ছেড়ে তিনিও একদিনের জন্য হতে চেয়েছিলেন ‘সারা কলকাতার লোক’…
এরকম নানা ঘটনা থেকেই যায় । মাঝে মধ্যে খুঁজে পেয়ে অবাক হই আমরা। আর একটা বড় শহর তার গল্প বুকে নিয়ে এগিয়ে চলে সময়ের টানে।

 

তথ্যসূত্র- তোমার পরশ আসে- বিমোচন ভট্টাচার্য- সৃষ্টিসুখ