TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

আমেরিকার জর্জ ফ্লয়েডের আন্দোলনের ঢেউ ব্রিটেনে যেভাবে আঘাত হেনেছে তা স্থানীয় এলিটদের চমকে তুলেছে

প্রায় তিনশ বছর আগে মৃত এডওয়ার্ড ক্লস্টন ব্রিটেনে “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার” আন্দোলনে প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠল। রবিবার ইংল্যান্ডের দক্ষিণের একটি শহর ব্রিস্টলে 1895 খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত ক্লস্টনের 18 ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ব্রোঞ্জ মূর্তিটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ব্রিস্টলের এভন নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোস্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও টি ভাইরাল হতেই নেটিজেনরা বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। এই ফুটেজটিতে দেখা গেছে প্রতিবাদীরা মূর্তিটির সামনে মিনেয়াপোলিসে 25 শে মৃত জর্জ ফ্লয়েডকে স্মরণ করেন এবং তারপরই প্রতিবাদ স্বরূপ মূর্তিটিকে দড়ি দিয়ে টেনে জলে ফেলে দেন। বহুমানুষ এই ঘটনাটি দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করেছেন এবং আনন্দ প্রকাশ করেছেন।

আরো পড়ুন:- জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আমেরিকা জুড়ে সমর্থন করলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলিও

1636 সালে ব্রিটেনের এক ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেওয়া ক্লস্টন এক বিখ্যাত দাস ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি রয়েল আফ্রিকান কোম্পানি নামে একটি দাস বিক্রির ব্যবসা চালাতেন। তথ্যসূত্রে জানা যায় ক্লস্টনের এই রয়েল আফ্রিকান কোম্পানি মাত্র 12 বছরে প্রায় 84 হাজার আফ্রিকান নারী-পুরুষ-শিশুকে কেনাবেচা করেছিল। আফ্রিকার মানুষদের ক্রয়-বিক্রয়ের আগে তাদের শরীরে নির্মমভাবে কোম্পানির আদ্যক্ষরগুলি মোহর মেরে দেয়া হতো সেসময়।সমুদ্র পরিবহনকালেই এসব ক্রয়কৃত মানুষদের অনেকেই মারা যেতেন। মানুষ ছাড়াও আফ্রিকার মূল্যবান অনেক খনিজই সেসময় লুন্ঠন করেছে আরএসি। এছাড়া আরও নানা ব্যবসা ছিল তাঁর। ক্লস্টন ব্রিটেনের এক সময়কার এমপি ছিলেন,প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অনেক
হাসপাতাল,স্কুল-কলেজ,গীর্জা। কিন্তু তাঁর নামের ইতিহাস থেকে দাস ব্যবসার মতো কলঙ্কজনক অধ্যায়টি মোছা যায় নি। ব্রিটেনের ইতিহাসের এই লজ্জার প্রতিমূর্তিটিকে বারবার সরিয়ে ফেলার আর্জি জানানোর পরও মূর্তিটি সরানো হয়নি। তাই এই মূর্তিটি প্রতিবাদের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন:- রাম গোপালের ‘ করোনাভাইরাস ‘ নিয়ে টুই্যট অমিতাভের

আমেরিকার জর্জ ফ্লয়েডের আন্দোলনের ঢেউ ব্রিটেনে যেভাবে আঘাত হেনেছে তা স্থানীয় এলিটদের চমকে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, সঠিক উপায়ে করা বিক্ষোভের মাধ্যম থেকে সরে গিয়ে ধ্বংসের সাহায্যে নিলে প্রকৃত কারণটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়। অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হবে। ব্রিস্টলের মেয়র মারভিন রিস্ বলেছেন, ব্রিস্টলে বহুবছর ধরে স্থাপিত ক্লস্টনের এই মূর্তির ঘটনাটি বিভিন্ন মতামত তৈরি করবে কিন্তু যাঁরা এই মূর্তিটিকে মানবতার অসম্মান বলে মনে করেছেন তাঁদের কথাও শোনা জরুরি। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শুধুমাত্র ব্রিটেন নয় অস্ট্রেলিয়াতে এক মায়ের নেতৃত্বে বিশাল সমাবেশ হয়েছে। বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় লিওপোল্ড এবং ভার্জিনিয়ার রবার্ট এল লি লি এর মূর্তি নিয়েও বিক্ষোভ হয়েছে। এই ঘটনার মাধ্যমে ব্রিস্টলবাসীও নিজেদের মতো করে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর বিরোধিতা করেছেন।