TheBangaNews.com | Read Latest Bengali News | Bangla News | বাংলা খবর | Breaking News in Bangla from West Bengal

অভিনয় থেকে সরে গেলেন আরডি বর্মন, অসাধারণ প্রতিভাকে হারাল ইন্ডাস্ট্রি

আজ রাহুলদেব বর্মনের ৮১তম জন্মদিন। অচেনা মানুষটিকে ফিরে দেখা

এমন মিষ্টি সুর যাঁর, তাঁর কিনা লঙ্কার শখ! হবেই তো। জীবনের একটা মুহূর্তের সঙ্গে আরেকটার কোনও মিল নেই তাঁর, পঞ্চম এমনই। রাহুল দেব বর্মন।
লঙ্কার ব্যাপার টা জানেন না তো? শুধু যে নানান ছন্দ আর মিউজিকের সন্নিবেশ ছিল তাঁর মাথায়, তা নয়, লঙ্কারও ছিল। তাঁর মেরিল্যান্ড অ্যাপার্টমেন্টের বাগানে অন্তত দুশো প্রজাতির লঙ্কার চাষ করতেন রাহুল দেব বর্মন। এত ঝাল যে কোন কাজে লাগত জানা নেই। অবশ্য শুধুই আর কাজের কথা ভেবে জীবনে কোনটা করেছেন তিনি! খেয়ালখুশির মানুষ বরাবরই।

আরও পড়ুন রাধিকা আপ্তে পরিচালিত প্রথম ছবি স্লিপওয়াকার্স জিতে নিল আন্তর্জাতিক পুরস্কার

এই যে, গোপালপুরে বেড়াতে গিয়েছিলেন যেবার। সমুদ্রে স্নানের সময় পায়ে জড়াল এক বিশাল সাপ। জড়াল মানে ভয়ানকভাবে চেপে ধরল। যন্ত্রণা সাংঘাতিক। তবে পঞ্চম কিন্তু নির্বিকার। একবারও চোখের পাতাটাও ফেললেন না। চেঁচামেচি করলেন না। সমস্ত যন্ত্রণা সহ্য করে নিজে হাতেই খুলে ফেললেন সেই সাপের প্যাঁচ। আশপাশের লোক বুঝতেই পারল না, কী হল। অথচ সেই মানুষটিরই টিকটিকিতে কী ভয়! ঘরের দেওয়ালে একটা টিকটিকি মানে তাঁর মৃত্যুর শামিল। শেষদিন অবধি এই ভয়টা ছিল।
ওই যে, ধরাবাঁধা ছকে কোনওদিন মেলানো যাবে না তাঁকে। পাশাপাশি দুটো মুহূর্তের একেবারে মিল নেই!
সাঁতার কাটতে দম লাগে বিস্তর। সেই একই দম প্রয়োজন মাউথ অর্গানের জন্যও। দুটো একসঙ্গে চালাতে পারেন, বিশ্বে এমন কেউ নেই। না না, ছিলেন মাত্র একজন, তিনি রাহুল দেব বর্মন। সাঁতার কাটতে কাটতে বাজিয়েছিলেন মাউথ অর্গান। এক ওয়াটার ব্যালে-তে অংশ নিয়ে জলের ওপর ভেসেছিলেন তখন। হাতদুটো তো ফাঁকা। ও দুটোকেও কাজে লাগানো যাক। যেই না ভাবা, হাতে উঠে এল মাউথ অর্গান। মানুষ তাজ্জব হয়ে দেখল, দুই চূড়ান্ত বিপরীতকে কী অবলীলায় মিলিয়ে দিচ্ছেন তিনি!

আরও পড়ুন লকডাউনের আবহে বিকল্প বাহন হিসাবে বাড়ছে সাইকেলের জনপ্রিয়তা।

শুধু একবারই মেলাতে পারেননি জীবনে। ততদিনে তিনটে ছবিতে তাঁর অভিনয় করা হয়ে গেছে। ভূত বাংলা, পেয়ার কা মৌসম আর বাংলা ছবি গায়ক। সেখানে নিজেই নিজের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এর পরের ছবিটির জন্য কথাবার্তা চূড়ান্ত। পড়োশান ছবিতে সুনীল দত্তের চরিত্রটা করবেন পঞ্চম। শিল্পী নিজেও রাজি। কিন্তু ফতোয়া জারি করলেন বাবা শচিনদেব—যে কোনও একটা বেছে নাও। হয় সঙ্গীত পরিচালনা, নইলে অভিনয়।
ছেলে সরে এলেন শুধুই সঙ্গীতে। অভিনয়টাকে আর তার সঙ্গে মেলাতে পারলেন না। এক অসামান্য অভিনেতাকে হারিয়ে ফেলল ভারতীয় সিনেমা।