Home পৌরাণিক কাহিনী এই অভিশাপের কবল থেকে বাঁচতে পারেননি স্বয়ং কৃষ্ণও… কি সেই অভিশাপ? আসুন জেনে নিই স্যমন্তক এর রহস্য।

এই অভিশাপের কবল থেকে বাঁচতে পারেননি স্বয়ং কৃষ্ণও… কি সেই অভিশাপ? আসুন জেনে নিই স্যমন্তক এর রহস্য।

by banganews

স্যমন্তক আসলে কি জানেন? হিন্দু পুরাণ বলে স্যমন্তক হল সূর্যদেবের কণ্ঠহারের রত্ন। অনেকে মনে করেন , কোহিনূর হিরেই হল পুরাণের স্যমন্তক | যদিও এই মত অগ্রাহ্য করেন বেশিরভাগ পণ্ডিত এবং রত্ন বিশেষজ্ঞ | তাঁরা মনে করেন এই রত্ন ছিল আসলে একটি দুর্লভ চুনী | তর্ক তো চলতেই থাকবে। তবে এই স্যমন্তককে ঘিরে পুরাণে যে গল্প আছে তা খুব আকর্ষণীয়।

শ্রীকৃষ্ণের ও দ্বারকার সাথে জড়িয়ে রয়েছে এই মণির কাহিনী। স্বয়ং কৃষ্ণের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ এনেছিলেন এক সম্ভ্রান্ত যাদববংশোদ্ভূত ব্যাক্তি। তাঁর নাম ছিল সত্রাজিৎ। এর পিছনেও লুকিয়ে আছে এক গল্প। একটি কিংবদন্তী অনুযায়ী , এই দিনে শিব গণেশকে লুকিয়ে কার্তিকেয়কে একটি ফল দিয়েছিলেন। চন্দ্র তা দেখে হেসে ফেলেন বলে শিব চন্দ্রকে অভিশাপ দেন, যে চতুর্থীর দিন চাঁদ কেউ দেখবে না। আবার অন্য একটি কিংবদন্তী বলে যে চন্দ্রকে আসলে অভিশাপ দেন পার্বতী। অতিরিক্ত ভোজনের পর একদিন গণেশ ইঁদুরের পিঠ থেকে ধরাতলে পপাত হন। সেই দৃশ্য দেখে চন্দ্র খুব মজা পান ও হাসেন।

এই অভিশাপের কবল থেকে বাঁচতে পারেননি স্বয়ং কৃষ্ণ ও। ভদ্রপদ চতুর্থীর দিনে দুধের বালতিতে চন্দ্রের প্রতিচ্ছবি দেখে ফেলায় কৃষ্ণ স্যমন্তক মণি চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হন।

সূর্যদেব তাঁর ভক্ত সত্রাজিৎকে খুশি হয়ে স্যমন্তক মণি উপহার দেন। বিষ্ণু পুরাণ এবং মহাভারত অনুযায়ী এই রত্ন নাকি সোনার থেকেও ৮ গুণ বেশি উজ্জ্বল। এই মণি তার অধিকারী ব্যাক্তির জীবনে আনে বিপুল সমৃদ্ধি ও শান্তি। সত্রাজিৎ মণি নিয়ে দ্বারকায় ফিরলে সেখানকার মানুষ তাঁকে সুরজদেব ভেবে ভুল করে। কৃষ্ণ এই মণি রাজা উগ্রসেনকে দিয়ে দেওয়ার জন্য সত্রাজিৎকে অনুরোধ করেন| কিন্তু তাঁর কথা উপেক্ষা করে সত্রাজিত্‍ ওই রত্ন দেন তাঁর ভাই প্রসেনকে | প্রসেন একদিন ঐ রত্ন পরে শিকারে গেলেন বনে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সাপ দেখে চমকে উঠে তাঁর প্রাণ যায়।

ঘটনাক্রমে সেই মণি এসে পড়ে ভাল্লুক রাজ জাম্বুবান এর হাতে। তিনি তা কন্যা জাম্ববতীকে খেলতে দেন। এদিকে ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে সত্রাজিৎ দোষারোপ করেন কৃষ্ণকে। তিনি বলেন মণির লোভে কৃষ্ণ হত্যা করেছেন প্রসেনকে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে কৃষ্ণ যান সেই বনভূমিতে এবং তাঁর সাক্ষাৎ ঘটে ভাল্লুক রাজ জাম্বুবান এর সাথে। দীর্ঘ যুদ্ধে তাকে পরাস্ত করে কৃষ্ণ দ্বারকা ফেরেন স্যমন্তক নিয়ে। নিজের মেয়ে জাম্ববতীকে কৃষ্ণের হাতে তুলে দেন ভাল্লুকরাজ। অনুতপ্ত হয়ে কৃষ্ণকে সত্রাজিত্‍ দেন নিজের তিন মেয়ে সত্যভামা, ব্রতীনি এবং প্রস্ববিনীকে |

বহুবার হাতবদল হয়েও স্যমন্তক ফিরে আসে দ্বারকাতেই। কিন্তু কৃষ্ণের প্রয়াণের পর এই মণির কোনো উল্লেক পাওয়া যায়নি কোনো পৌরাণিক গল্পে।

You may also like

Leave a Reply!