সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মঙ্গলগামী মহাকাশ যানটি লঞ্চ করা হল জাপানের টানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে। ইউএই’র এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষক মহল জানাচ্ছে প্রায় সাত মাসের দীর্ঘ সফরের পরেই লালগ্রহে পৌঁছাতে পারবে এটি। আরবের প্রথম মার্স মিশনটি লঞ্চ হওয়ার কথা ছিলো ১৪ ই জুলাই, কিন্তু খারাপ আবহাওয়াগত কারণে সেটি দু’বার পিছিয়ে যায়। অবশেষে আজকে মঙ্গলের উদ্দেশ্য উড়ান দিলো তাদের মহাকাশযান।
আরও পড়ুন : করোনা মহামারী থেকে এখনো মুক্ত রয়েছে এইসব দেশ
আরব দুনিয়ার প্রথম মঙ্গল যান মহাকাশের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিলো এদিন। এই স্পেস ক্রাফটটির বিশেষত্ব এই যে টেকনোলজিক্যাল এডভান্সমেন্টের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এটির জ্বালানি তেলের প্রতি নির্ভরতা বহুলাংশে কমিয়ে এনেছেন। এই প্রোজেক্টের নাম হল হোপ প্রোব বা আশার প্রদীপ। জাপানের টানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে সোমবার সকাল ৬:৫৮ তে বা গ্রিনিচ মিন টাইমের হিসেবে রবিবার ২১:৫৮ তে সেটি লঞ্চ করা হয়। সুদীর্ঘ ৭ মাসের পর সেটি মঙ্গলে গিয়ে পৌঁছবে এবং একটি নির্দিষ্ট কক্ষ পথ ধরে গ্রহটিকে প্রদক্ষিণ করবে। মঙ্গল সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য এবং সেখানকার আবহাওয়া বিষয়ক পরিসংখ্যান পৃথিবীতে পাঠাতে শুরু করবে। মহাকাশ উৎক্ষেপণের কয়েক ঘন্টা পরে পৃথিবীর আবহাওয়া মন্ডল পেরিয়ে যেতেই সেটি নিজের সোলার প্যানেল বিস্তারিত করে স্বয়ংক্রিয় পাওয়ার সিস্টেম গড়ে তোলে, এবং পৃথিবীর সঙ্গে রেডিওতে সংযোগ স্থাপন করে।
আরও পড়ুন : বলে থুতু, বল স্যানিটাইজ করলেন আম্পায়ার
এখনো পর্যন্ত পৃথিবী প্রেরিত মোট ৮ খানা সক্রিয় উপগ্রহ মঙ্গল গ্রহকে প্রদক্ষিণ করছে। এদের মধ্যে কয়েকটি মহাকাশযান মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠে পদার্পণ করেছে। চীন এবং ইউনাইটেড স্টেটস উভয় এবছর আরও একটি করে উপগ্রহ মঙ্গলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইউনাইটেড আরব এমিরেটস সমগ্র মিশনটির জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। ৯৪ লক্ষ মানুষের দেশ আরব, সেখানকার বহু মানুষ বিদেশে কর্মরত। আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকলেও স্পেস রিসার্চের জন্য প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেস না থাকায় জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় এতদিন পর্যন্ত পিছিয়ে ছিল আরব।
এমিরেটস এবং দুবাই মোহাম্মদ বিন রাশেদ স্পেস সেন্টার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহায়তায় এই উপগ্রহটি নির্মাণ করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে হাজা আল মানসুরি প্রথম আরবের বাসিন্দা হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে অবতীর্ণ হন। দুবাই মারফত জানানো হয়েছে স্পেসক্রাফটটি ৪৯৪ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করবে, এর গড় গতিবেগ ১২১০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।
২০১৭ সাল থেকে প্রথাগতভাবে মহাকাশচর্চা শুরু করা ইয়ুএই বর্তমানে দাঁড়িয়ে ২১১৭ সালের মধ্যে লালগ্রহে মানুষের বসবাসযোগ্য একটি সেটেলমেন্ট তৈরীর স্বপ্ন দেখছে।