Home কলকাতা বারোয়ারি পুজোর ইতিহাসে এই প্রথম মহিলা পুরোহিত করবেন মহামায়ার আরাধনা

বারোয়ারি পুজোর ইতিহাসে এই প্রথম মহিলা পুরোহিত করবেন মহামায়ার আরাধনা

by banganews

শরতের আগমনে জগতের  মঙ্গল কামনায় নারীশক্তি পরমাপ্রকৃতি মহামায়ার আবাহন করা হয়।  চারদিন ধরে চলে তার আরাধনা।অনেক দিন ধরেই প্রতিমা নির্মাণ, মণ্ডপ নির্মাণ করছেন মেয়েরা। এমনকি দুর্গা পুজোর জোগাড় করতেও মহিলারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।  কিন্তু পৌরহিত্যে এতদিন তারা ছিল যেন কিছুটা আড়ালে উপেক্ষিত।  কিন্তু এবার দেবীর আরাধনায় মায়ের মানবী রূপের কন্যাদের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হল কলকাতার ৬৬ পল্লী।

পুজো পাঠ করেই দিন কাটায় শবরী৷ বাড়ির বউ পুজো করবে এ তো পরম আনন্দের৷ কিন্তু এ তো কেবল নিজের কত করে পুজো করা নয়, একেবারে মন্ত্রোচ্চারণ করে পৌরহিত্য করা৷  বিয়ের আগে এই নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না কিন্তু বিয়ে হতেই শ্বশুরবাড়িতে এসে বাধলো বিপত্তি। শ্বশুর বাড়ির পুরোহিতের যুক্তি নারী দেহ অশুচি তাই তার দেবী আরাধনার নেই কোনো অধিকার নেই৷  সেই থেকেই শুরু হল লড়াই সমাজের চিরাচরিত নিয়মের বিরুদ্ধে৷  ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি  সিনেমার কাহিনীতো আমাদের জানা কিন্তু এই বছর দুর্গাপুজোয় সিনেমার পর্দা নয় বাস্তবেই ঘটতে চলেছে এমন ঘটনা৷ ৬৬ পল্লীর শারদোৎসবের দায়িত্ব এবার চার মহিলা পুরোহিতের ওপর৷

এই বছর দুর্গা পুজোয় ৬৬ পল্লী বারোয়ারিতে পৌরোহিত্য করবেন নন্দিনী ভৌমিক এবং তার দলের রুমা সেমন্তীরা৷  ইতিহাসে প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটছে।  নন্দিনীর দলের নাম শুভমস্ত। যার অর্থ সকলের মঙ্গল হোক।

বাঙালির সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গাপুজা৷ ৬৬ পল্লীর  অন্যতম কর্মকর্তা প্রণব মুখোপাধ্যায় বলছেন, সকলের সর্বসম্মতিক্রমে এই বছরের পৌরহিত্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই চার মহিলা পুরোহিতকে।  গতবছর দ্বাদশীর দিন পরলোকগমন করেছেন ৬৬ পল্লীর সাবেক পুরোহিত তরুণ ভট্টাচার্য।

চিরাচরিত ভাবনা ভেঙে এবার তাই নতুন পথে হাঁটা৷ পুজো কমিটির তরফে ডিসেম্বর মাসেই শুভমস্তুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।  বারোয়ারি পুজোর প্রস্তাব পেয়ে এই চার মহিলা পুরোহিত বেশ অবাক এবং জানুয়ারি মাস থেকেই রীতিমতো শুরু হয়ে গিয়েছে তাদের পড়াশুনা।  পুরাণ  উপনিষদ নিয়ে পড়াশুনা  করছেন। দেবী দুর্গার মন্ত্র পাঠের অনুশীলন করছেন৷

সমাজের একাংশ যদি এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাহলে তার উত্তর রয়েছে নন্দিনীদের কাছে। তাদের বক্তব্য দেহ কখনো অশুচি হয়না।  মন অশুচি হয়৷  সময়ের সঙ্গে বদলে যায় নিয়ম সমাজ।  প্রকৃত শিক্ষার অর্থই হল পরিবর্তন। তাই ভাবনায় বদল আসা খুবই স্বাভাবিক।  আগামী 22 অগাস্ট 66 পল্লীর খুঁটিপুজো সেদিন থেকে বিসর্জন পর্যন্ত পূজার পদ্ধতি বা নিয়মে থাকবে অনেক নতুন কিছু  জানিয়েছেন শুভমস্তুর চার সদস্য৷  শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিকভাবেও সমাজের সেরে ওঠার প্রয়োজন রয়েছে তাই শুভমস্তুর কথায় “সর্বে ভবন্তু সুখিনাঃ”

You may also like

Leave a Reply!