বঙ্গ নিউস, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ঃ প্রথাগত পটচিত্রের পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ও চাহিদা অনুযায়ী অন্য অনেক জিনিসের ওপর পট চিত্র আঁকতে শুরু করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার নয়া গ্রামের পটশিল্পীরা। আর এই বার নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য পট চিত্র দিয়ে ‘ গ্রিটিংস কার্ড ‘ বানানোর কাজটাও শুরু করে দিলেন শিল্পীরা।
পট চিত্র দিয়ে গ্রিটিংস কার্ড বানিয়েছেন এই গ্রামের সুমন চিত্রকর । তিনি বলেন যে, এই কার্ডের চাহিদা বেশ ভালোই। একশ টাকা থেকে শুরু এই কার্ড শুধুমাত্র শুভেচ্ছা জানিয়েই শেষ হয়ে যাবে না, যাকে দেওয়া হবে তিনি ঘরে এই কার্ড সাজিয়ে রাখতেও পারবেন ।
এখন সোশাল মিডিয়া ও হোয়াটস্ অ্যাপেই নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রায় সকলেই। তবু এরই মাঝে পটচিত্র দিয়ে আঁকা গ্রিটিংস কার্ডের চাহিদা বেশ ভালো বলেই দাবি করেছেন এই গ্রামের চিত্রকররা ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই গ্রাম পটশিল্পীদের গ্রাম বলেও এখন বিশ্বের নানা জায়গাতে পরিচিত । এই গ্রামে বাস করে প্রায় সত্তরটি পরিবার। ছোট থেকে বড়, এমনকি মহিলারাও, সকলেই পট চিত্র আঁকার সাথে জড়িত। এই পটশিল্পীদের অনেকেই তাদের চিত্র ও শিল্প নিয়ে বিভিন্ন শহরে ও দেশ বিদেশে নানা জায়গাতে যান ।
একটা সময় ছিল যখন শুধুমাত্র বড় বড় পটচিত্র এঁকে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পটের গান শুনিয়ে কোনও মতে সংসার চালাতে হত তাদের । এখন অবশ্য পরিবর্তন হয়েছে পট আঁকার ক্ষেত্রে । এখন শুধু মাত্র গতানুগতিক ধারার পটচিত্র না, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তারা এখন বিভিন্ন আঙ্গিকের ওপর পটচিত্র আঁকার কাজ করছেন । বিভিন্ন সামাজিক ও সমসাময়িক নানা বিষয়ের পট চিত্র এঁকে তা নিয়ে গান বাঁধছেন। এখন বড় আকারের পটের চেয়ে ছোট আকারের পটের চাহিদা বেশি । শুধুমাত্র কাগজের ওপর নয় , এখন টি-শার্ট, শাড়ি, ওড়না, ছাতা, পাখা, ঘর সাজানোর নানা ধরনের জিনিসের ওপর পট চিত্র আঁকছেন। তার চাহিদাও বাড়ছে । এখন অনেকেই এই গ্রামে এসে তাদের কাছে এই সব কিনে নিয়ে যায় । এই শিল্পীদের অনেকেই পট চিত্র নিয়ে পাড়ি জমান দেশের নানা প্রান্তের সঙ্গে বিদেশেও। সেখানেও এই পটচিত্রের চাহিদা ও কদর বাড়ছে।
এই গ্রামের পটশিল্পী মনু চিত্রকর, সোনালি চিত্রকররা বলেন, মানুষের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে ও বদলাচ্ছে । আমাদেরকেও তাদের চাহিদা অনুযায়ী পট চিত্র আঁকতে হচ্ছে । গ্রিটিংস কার্ড বানানোর চাহিদা ছিল । তাই এটাও আমরা করছি। এই গ্রামে যত বেশি লোক আসবেন তত বেশি করে তাদের চিত্র ও শিল্প বিক্রি হবে । ফলে লাভবান হবে এই গ্রাম ও পটশিল্প ।