হলদিয়া, ৩১ অগাস্ট,২০২০ঃ ঘড়িতে তখন পাঁচটা বেজে ত্রিশ মিনিট। টিভিতে চোখ রাখতেই যেন আকাশ গড়িয়ে এলো মাটিতে। মহিষাদলবাসীর প্রিয় মানুষ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আর নেই। দিল্লির সেনা হাসপাতালে তিনি তাঁর শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। আর এই খবরে একেবারে শোকাহত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলবাসীরা। কারণ এখান থেকেই প্রণববাবুর রাজনীতির হাতেখড়ি। জীবনের একাধিক সময় কাটিয়েছেন এখান থেকেই। ফলে প্রিয় প্রাণের মানুষকে হারিয়ে এখন যেন শোকে বিহ্বল গোটা মহিষাদল।
আরও পড়ুন খবরের আড়ালে রয়ে গেছেন যে প্রণব
মহিষাদলকে এক কথায় প্রণববাবুর দ্বিতীয় বাড়িও বলেন অনেকে। বাড়ি বীরভূমের কীর্ণাহারের হলেও জীবনের একাধিক মুহূর্ত কাটিয়েছেন এই মহিষাদল থেকেই। মহিষাদলের প্রজ্ঞানানন্দ থেকেই প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল কুমার ধাড়ার হাত ধরে প্রণববাবুর রাজনীতির হাতেখড়ি। ইতিহাসবিদরা বলেন, ১৯৬৭ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল কুমার ধাড়া, অজয়বাবু ও সতীশবাবুদের কংগ্রেসের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে তখন তারা বাংলা কংগ্রেস করে। এই সময়ে প্রণব মুখোপাধ্যায় সুশীল কুমার ধাড়ার হাত ধরে বাংলা কংগ্রেসে যোগদান করেন। প্রণব বাবু তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল কুমার ধাড়ার ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ। প্রণব বাবু তিনি তাঁর রাজনৈতিক গুরু হিসেবে মানতেন সুশীল কুমার ধাড়াকে।
আরও পড়ুন রাইসিনা হিলের প্রথম বাঙালি তিনি, কেমন ছিল প্রণব মুখার্জির এই সফর?
২০১১ সালে যখন স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল কুমার ধাড়ার প্রয়াণ ঘটে তখন বিদেশ মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বাতিল করে মহিষাদল এসেছিলেন প্রিয় প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই সব স্মৃতি আজও মহিষাদলের মানুষের কাছে উজ্জ্বল। স্মৃতি উজ্জল থাকলেও সেই প্রিয় মানুষটি আজ আর নেই। প্রিয় মানুষের এভাবে চলে যাওয়াতে কার্যত শোকাহত সকলে। প্রিয় প্রণব মুখোপাধ্যায়কে আরেকবার মহিষাদলে দেখতে চেয়েছিলেন এখানকার মানুষজন। কিন্তু তা আর হলোনা। দিল্লির সেনা হাসপাতাল থেকে প্রণব মুখোপাধ্যায় অমৃতলোকে পাড়ি দিলেন সোমবার।