Home পাঁচমিশালি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ওনারা “Homebound: ঘরে ফেরার গান” নামে একটি পত্রিকা বার করেছেন।

মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ওনারা “Homebound: ঘরে ফেরার গান” নামে একটি পত্রিকা বার করেছেন।

by banganews

করোনা সংক্রমণ, লকডাউন, কর্মহীনতায় বিপর্যস্ত রাজ্যের মানুষ। এরই মাঝে আম্ফান বিধ্বংসী ধ্বংসলীলা চালিয়েছে কয়েকদিন হল। তবুও আজও জল থইথই দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবন, গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, বকখালি, হিঙ্গলগঞ্জের বেশ কিছু অঞ্চল। মানুষের অসহায়তার দৃশ্য দেখার নয়। করোনার জন্য কাজ বন্ধ বহুদিন তবুও আশ্রয়টুকু ছিল। কিন্তু আম্ফানের তীব্রতায় তাও হারিয়েছেন অনেক মানুষ। না আছে বাড়ি, না আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার। সাধারণ মানুষ থেকে বুদ্ধিজীবী অনেকেই ত্রাণ নিয়ে পৌঁছেছেন সেই অসহায় মানুষগুলোর কাছে। আরও কিছু মানুষকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রছাত্রী এবং প্রাক্তনীদের দল। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ওনারা “Homebound: ঘরে ফেরার গান” নামে একটি পত্রিকা বার করেছেন। পত্রিকাটির নূন্যতম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে একশো টাকা। এই পত্রিকা বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ ব্যবহৃত হবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যে। এই পত্রিকাটি সংগ্রহ করা যাবে ” Homebound: ঘরে ফেরার গান” এর ফেসবুক পেজ থেকে।

আরো পড়ুন – শুভ দাশগুপ্তের কবিতায় এবার অনন্যা ঋতুপর্ণা

সাহিত্য মানে মানবতার চর্চা। সাহিত্যে মানুষকে ভালোবেসে বেঁধে রাখে। সাহিত্যের মাধ্যমেই মানুষ অবচেতনে তুলে রাখা সমবেদনা, সহানুভূতির বোধ ফুটিয়ে তুলতে পারে। করোনা এবং আম্ফানে বিপর্যস্ত বাংলা। বাংলার এই চরম দুঃসময় শুধু ঘরে বসে সাহিত্যে চর্চার সময় নয়। তাই সাহিত্যেকে মাধ্যম করে এই জনদরদি মানুষ এবং অনেক বুদ্ধিজীবী, লেখকরা নিজেদের লেখার মাধ্যমে এই পত্রিকা এবং অসহায় মানুষদের পাশে থাকতে চেয়েছেন। শুধু রাজ্য নয় বিদেশ থেকেও সহায়তা এসেছে।এই উদ্যোগে পাশে থেকে দেশ এবং বিশ্বকে নিয়ে এই পত্রিকার জন্য সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নোয়াম চমস্কি।লন্ডন স্কুল অফ ইকোনোমিক্সের এর অধ্যাপক মৈত্রীশ ঘটক অর্থনীতি নিয়ে লিখেছেন, নিউইয়র্ক থেকে নবনীতা দেবসেনের মেয়ে নন্দনা দেবসেন পাঠিয়েছেন মায়ের লেখা কবিতার অনুবাদ। সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কবির সুমন, কৌশিক মুখার্জির মতো ব্যক্তিরাও নানান আলোচনার মাধ্যমে পত্রিকাটিতে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও কবিতা, গদ্য, ছবি, কাটুর্ন ইত্যাদি দিয়ে পত্রিকার পাশে থেকেছেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, অর্ক মুখার্জি, অরুণাচল দত্তচৌধুরী, অর্ণা শীল এর মতো ব্যক্তিত্বরা। এই পত্রিকাকে মানুষের সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার উদ্দেশ্যে সমসাময়িক বিষয় থেকে সাধারণ মানুষ সবার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষভাবে সক্ষম মানুষের কথা এই পত্রিকার থাকায় বিশেষভাবে সক্ষম মানুষরাও যাতে এই পত্রিকা পড়তে পারেন তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরো পড়ুন – রহস্যময় কৈলাস মন্দিরের কিছু অজানা কাহিনি

“Homebound: ঘরে ফেরার গান” এর প্রতিনিধি সুমন্ত্র বাবুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের সামাজিক কর্তব্য। অনেক মানুষই ত্রাণ নিয়ে পৌঁছেছেন। আমরাও আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আরও কিছু মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। শুধু পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত অর্থ নয় বহু চেনা অচেনা মানুষ এমনকি ঘরে ফেরার গানের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিদেশ থেকেও অনেক প্রবাসী বাঙ্গালী সাহায্য পাঠিয়েছেন। সুমন্ত্র বাবুরা বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করে স্থানীয় পুলিশ এবং বিডিও এর সহযোগিতায় নিজেরাই প্রায় 500 টি পরিবারের হাতে চাল, ডাল, লবণ, তেল, মুড়ি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলে দিয়েছেন। যদিও পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রিপল না পাওয়ার জন্যে সবাইকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ‘Homebound: ঘরে ফেরার গান” এর সমস্ত উদ্যোক্তারা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে লেখক লেখিকাদের এই মহান কাজে পাশে পেয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং আরও বলেছেন যে কিছুদিনের মধ্যেই মানুষকে সাহায্য করার জন্য একটি মেডিক্যাল ক্যাম্পও তাঁরা করতে চান।
মানুষই মানুষ কে হাত ধরে দাঁড় করাতে পারে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সম্মানের সাথে চলতে শেখাতে পারে। এই আত্মকেন্দ্রিক জীবনধারণের মাঝেও ‘ঘরে ফেরার গান’ এর প্রচেষ্টা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

You may also like

Leave a Reply!