তমলুক, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ : ১১৩৯ বার পুস আপ মেরে ইন্ডিয়ান বুক অব রেকর্ডে নাম তুলল শেখ আজিজুর রহমান। তাঁর বাবা শেখ রুহুল আমিন, পেশায় রাজমিস্ত্রি। ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই তমলুকের কাকগেছিয়া এলাকার বাসিন্দা তারা। বড় ছেলে আজিজুর স্থানীয় স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পঠন-পাঠনের পরই দূর শহর চেন্নাইতে একটি বেসরকারি সংস্থার কাজে যোগ দিয়েছিল। তমলুকের মানিকতলায় প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা অন্তর্গত তিন মাসের একটি মোবাইল রিপেয়ারিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ট্রেনিং শেষে পাড়ি দিয়েছিল চেন্নাইয়ে। সেখানেই মাত্র ৯ হাজার টাকা বেতনের তিন মাস কাজ পরেই কোম্পানির শাটডাউন। ফলে ফের পেশার টানে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ নেয়। এরপর লকডাউন এর আগেই বাড়িতে এসে আর কাজে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই স্কুলেরই এক বন্ধুর পরামর্শে শুরু হয় বাড়িতে শারীরিক কসরত। ট্রেনর তথা বন্ধু সুমন ভক্তার পরামর্শ মেনে বাড়ির পেছনেই বাঁশ, বালি, দড়ি দিয়েই নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয় জিমখানা। আর সেখানেই নিয়মিত অধ্যাবসা চলে তার। এতে করেই মিলেছে অভাবনীয় সাফল্য। মাত্র ৩০ মিনিটে ব্যবধানে পর্যায়ক্রমে ১১৩৯ বার পুশ আপ দিয়ে সারা দেশের মধ্যে রেকর্ড গড়েছে আজিজুর। স্বভাবতই গ্রামের ছেলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন রানির শহরে রক্তাক্ত রাজপথ, আতঙ্ক বার্মিংহামে
২১ বছর বয়সী ব্যায়ামবীরের বাড়িতে ঢুকেই দেখা গেল লোহার পরিবর্তে চিপস সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ওজনের ওয়েট লিফটিং। বাড়ির ঠিক পেছনেই আজিজুরের জিমখানা। আজিজুলের কথায়, সংসারে বড় অভাব। শহরের জিম খানায় গিয়ে প্র্যাকটিস করার সুযোগ নেই। কিন্তু মনের ইচ্ছাটা ছিল প্রবল। এরপর মূলত বন্ধুর যোগানো প্রেরণা থেকেই নিজেকে তৈরি করেছে সে। আজিজুর জানায়, “আমার এই সাফল্যের সমানভাবে ভাগীদার ছোটবেলার বন্ধু কাম ট্রেনার সুমন ভক্তা। তারই নির্দেশে কাজ হারিয়েও মানসিক অবসাদ ঝেড়ে ফেলে দীর্ঘ এই লকডাউনটাকে কাজে লাগাতে পেরেছি। লক্ষ্য তাই এবার গ্রিনিজ ওয়ার্ল্ড কাপ রেকর্ডের দিকেই।”
বন্ধু সুমন ভক্তা বলেন, “একদিন দুজন বাজি ধরে পুশআপ মারছিলাম। আর তখনই ওর এই অসাধারণ প্রতিভা জানতে পারি। টানা আশি বার পুশ আপ মেরে সেদিন ও আমাদের চমকে দিয়েছিল। আর তখন থেকেই বন্ধুকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করি।”
আরও পড়ুন কন্যা খুনে অভিযুক্ত বাবা, কবর থেকে দেহ গেল ময়নাতদন্তে
তিনি আরও বলেন, কিন্তু কীভাবে বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলতে হবে তা জানতাম না। অবশেষে গুগল সার্চ করে এবং ইউটিউব ভিডিও দেখে আমরা আজ এই জায়গায়।
মা আফ্রি জা বিবি বলেন, নিজের চেষ্টায় ছেলের এই অসাধারণ সাফল্যের তারা সকলেই খুশি।