বাড়লো রাজ্যের স্কুল কলেজে লকডাউনের সময়সীমা। এই নিয়ে চতুর্থ দফায় বাড়লো স্কুল কলেজ বন্ধ রাখার মেয়াদ।করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি ও আমফান ঝড়ের তাণ্ডবের জেরে বাংলার সব স্কুল বন্ধ রাখার সময়সীমা বাড়াল রাজ্য সরকার। বুধবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘সব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ৩০ জুন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরেই রাজ্যে প্রথমে ৩১ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপরেই গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয় লকডাউন।
করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলাতে এর পরে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ১৫ এপ্রিল। তৃতীয় দফায় ১০ জুন। আশা করা হয়েছিল এবারে হয়তো নির্ধারিত তারিখে খুললেও খুলতে পারে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। কিন্তু আদতে তা হলো না। এবার স্কুল কলেজগুলির বন্ধের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হল। এদিন তা ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে স্থানীয় শিক্ষকদের দিয়ে কীভাবে পড়ুয়াদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যায় সে ব্যাপারে বিকল্প পথের কথাও স্কুল শিক্ষা দফতর ভাবছে বলে তিনি জানান। নিজের বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে উচ্চশিক্ষা চলবে তা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিজেরা ঠিক করে নেবে।
আরো পড়ুন – রাজ্যকে না জানিয়েই আসছে শ্রমিক স্পেশাল, সরব মমতা!
তাঁর বক্তব্যে থেকে পরিস্কার যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা তো রয়েইছে, তার উপরে ঘূর্ণিঝড় আমফানেও বড় ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের আট জেলার বহু স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত। অন্যান্য জেলাগুলিতেও বহু স্কুলের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। তছাড়াও জেলায় জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের আইসোলেশনে রাখার জন্য স্কুল ব্যবহার করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে সঙ্কট যে বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য। অতএব বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করেই এই ঘোষণা।
তবে উচ্চমাধ্যমিকের বাকি থাকা পরীক্ষাগুলির ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত আট জেলায় মোট উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল ১০৫৮টি। এর মধ্যে ৪৭০টি কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিকল্প কেন্দ্র বাছাইয়ছর সঙ্গে কয়েকটি কলেজকেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।
আরো পড়ুন – লকডাউনের মধ্যে উঠে আসছে নারী নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর তথ্য – নির্যাতন রুখতে রাজ্য সরকারের নতুন পদক্ষেপ
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিকের সেই বাকি থাকা তিনটি পরীক্ষা হবে ২৯ জুন, ২ ও ৬ জুলাই। তবে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র বদল হলেও হতে পারে। তবে তা হলেও পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি যাতে কাছাকাছি হয় সে চেষ্টাও করা হচ্ছে আপ্রাণ। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য পরিবহণের ব্যবস্থাও করা হবে বলে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমফানের তান্ডবে যেসব উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাঁদের বইপত্র ক্ষতি হয়েছে,তারা যাতে সবার আগে বই পায় সেটা দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।