পূর্ব মেদিনীপুর, ১৬ অক্টোবর, ২০২০ঃ শহরের বড় থিমের পুজো বা শহরতলি ও জেলার পুজোই শুধু নয়, করোনার প্রভাব পড়েছে বনেদি বাড়ির পুজোগুলিতেও। ৪৫০ বছরের প্রাচীন পঁচেটগড় রাজবাড়ির দুর্গাপুজো নিয়ে এবার ভিন্ন ভাবনা পরিবারের সদস্যদের।
করোনা আবহে একাধিক রদবদল হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী পঁচেটগড় রাজবাড়ির ৪৫০ বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজোয়। সরকারি বিধি মেনেই হবে পুজো। সেকালের পুজোর প্রাচীন নিয়ম কানুন মেনেই পুজো হয় প্রতিবছর।
আরও পড়ুন অনেকটাই সুস্থ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় , কথা বলছেন , শুনছেন পছন্দের গানও
ইতিহাসের পাতা ওলটালে দেখা যায় ওড়িশার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালামুরারি দাস মহাপাত্র। জগন্নাথ দেবের সামনে নিত্যদিন সঙ্গীত পরিবেশন করতেন তিনি। সেই সঙ্গীতেই মুগ্ধ হয়ে রাজা তাকে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মন্দিরের পাশে পেয়েছিলেন জমি। পরবর্তী সময় জাহাঙ্গীরের নজরে পড়ে যান। তাঁকে বাংলা, বিহার ও তাম্রলিপ্ত বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেন মোঘল সম্রাট। কাজটি তিনি সূচারুভাবে করেন ও পটাশপুর এলাকার খাঁড়ে বিশাল গড় নির্মাণ করেন তিনি। পরবর্তীকালে সেখান থেকে উদ্ধার হয় একের পর এক শিবলিঙ্গ। সেই শিবলিঙ্গ দিয়েই কালামুরারি দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। ধীরে ধীরে পঞ্চেশ্বর নামটির প্রচার হতে থাকে। এখানেই তিনি তৈরি করেন পঁচেটগড় রাজবাড়ি। তিনিই পরে দুর্গাপুজোও শুরু করেন।
তবে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে এবাড়ির পুজোয়। কয়েক বছর পর রাজপরিবার শৈব থেকে বৈষ্ণব ভক্ত হয়ে যায়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় মূর্তি পুজো। ঘট পূজোর প্রচলন হয়। তবে থাকে চালচিত্রও। প্রতিবছর পূজোর একমাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি একেবারেই অন্যরকম। দু-একজনকে নিয়েই শুরু হয়েছে দুর্গা পূজোর প্রস্তুতি।
আরও পড়ুন নন্দকুমার ব্লুকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পথ অবরোধ গ্রামবাসীদের
প্রতি বছর আত্মীয় স্বজন , এলাকাবাসীর সমাগমে হত বাড়িতে। কিন্তু এবছর কারা আসবেন আর কারা আসবেন না, সেই নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে পূজার জাঁকজমকও। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই সম্পন্ন হবে এবারের পূজো।