মুম্বাই বিখ্যাত তাজ হোটেলে পাকিস্তান থেকে পুনরায় নাশকতাবাদী হামলার হুঁশিয়ারি পেল। এর অব্যবহিত পর থেকেই এই হেরিটেজ হোটেলে ঢোকার এবং বেরোনোর সকল রাস্তায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাত পরিচয় এক পাকিস্তানি ব্যক্তি এই পাঁচতারা হোটেলে আতঙ্কবাদী আক্রমণের হুমকি দেয়। হোটেল আধিকারিকদের তরফে জানানো হচ্ছে সোমবার মাঝরাতে অর্থাৎ দিনের হিসেবে মঙ্গলবার ১২ টা বেজে ১০ মিনিট নাগাদ এই ফোনকল আসে।
টেলিফোনের অপরপ্রান্ত থেকে অপরিচিত কণ্ঠস্বর বলে “সবাই করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ জঙ্গিহানা দেখেছে এবার তারা তাজ হোটেলে আবারও ২৬/১১-র মত নাশকতা দেখবে।”
আরও পড়ুন কাশ্মীরে এনকাউন্টার, মৃত ২ জঙ্গি, পলাতক ১, শিশুহত্যা
আরও একটা থ্রেট কল তাজ হোটেল গ্রুপের অন্য আরেকটি প্রপার্টিতে আসে। ব্যান্ড্রাতে, তাজ ল্যান্ড এন্ড হোটেলের কর্মচারী কলটিও পাকিস্তান থেকেই করা হয়েছে। পুলিশ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিষয়টি অনুসন্ধান করছে, কল রেকর্ড এবং ডিটেইলস ভেরিফাই করা হচ্ছে।
পুলিশ গোটা মুম্বাই জুড়ে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে, মুম্বাইয়ের জল সীমানায় টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, কেবল তাজ হোটেলই নয় শহরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বাড়ানো হয়েছে সুরক্ষা।
২০০৮ সালের ২৬ শে নভেম্বর ছিল এই শহরের একটি কালো দিন, পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রত্যক্ষ পাক মদতে ভারতে অনুপ্রবিষ্ট সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণে হওয়া রক্তপাত আজও ভোলেনি ভারতের বানিজ্য রাজধানী।
৬০ ঘন্টা ব্যাপি সেই আক্রমণে, ১৬৬ জনেরও বেশি মানুষ সেদিন নিহত হয়, ৩০০ জন গুরুতর আহত হয়। ১৬৬ জনের মধ্যে ২৮ জন বিদেশিও মারা পড়ে। এই ঘটনার জন্য পাকিস্তান আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচিত হলেও তারা বিষয়টিতে নিজেদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে।
আরও পড়ুন লাদাখের প্যাংগং অঞ্চলে চীনা ভাষায় হুশিয়ারি বার্তা লালফৌজের
আজমল কাশব একমাত্র সেই জঙ্গি যাকে এই হামলায় জ্যন্ত ধরতে পারা সম্ভব হয়েছিলো। ভারতের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাকে জেরা করে এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে একমত হয়। পুনের ইয়ারোয়াদাতে, ২১ শে সেপ্টেম্বর কাশবের ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডের আগে তার থেকে এই নাশকতার ছক সম্পর্কে শেষ তথ্যটুকুও নিংড়ে নেয় ভারতীয় গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছিল ২৬ শে নভেম্বর ২০০৮ এ পাকিস্তানের করাচি থেকে একটি ছোট মোটর চালিত নৌকায় পাকিস্তানি জঙ্গিরা’ জলপথে ভারতে প্রবেশ করে। হুমকির পর থেকে ছত্রপতি শিবাজী রেল টার্মিনাস, তাজ হোটেল, ট্রিডেন্ট হোটেল, ও জিউইশ সেন্টারে সুরক্ষা সর্বাধিক করা হয়েছে।