প্রচণ্ড বৃষ্টিতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এবং কলকাতা পুরসভার।পুজোর আগে এই ব্যাপক বৃষ্টি চিন্তা বাড়াচ্ছে। জমা জলের পরিমাণ বাড়ছে। আর জমা জল মানেই ডেঙ্গি (Dengue) ও ম্যালেরিয়ার (Malaria) প্রকোপ বাড়তে পারে। কোভিডের চিন্তা তো আছেই কিন্তু এখন কোভিড ছাড়াও কলকাতাবাসীকে সতর্ক করছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, জানুয়ারি থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১১২৩ জন। কিন্তু উদ্বেগ বাড়াচ্ছে জমা জল। কারণ শুধু গত সপ্তাহেই আক্রান্ত হয়েছেন ২২২ জন।
কলকাতা ছাড়া অন্যান্য জেলাতেও ডেঙ্গির প্রকোপ চোখে পড়ার মতো। স্বাস্থ্য ভবন সূত্র জানাচ্ছে, গত সাতদিনে কলকাতায় ৫৯, উত্তর ২৪ পরগনায় ৩৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২০, হাওড়ায় ৮, হুগলিতে ১৯, মালদহে ১৪ এবং দার্জিলিঙে ৯ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।
ডেঙ্গির চেয়েও কলকাতায় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ম্যালেরিয়া। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য বিভাগের মিশন ডাইরেক্টর সৌমিত্র মোহন-সহ উচ্চ পর্যায়ের কর্তারা। এই মিটিং এ সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রিক বিষয় যেমন ভ্যাকসিন, ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গি নিয়ে এরকম একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, পয়লা জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ৩৫০০ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতায় এখনও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে আসছে।
সংক্রমণ আটকাতে চেষ্টা করা হচ্ছে পুরসভার পক্ষ থেকেও। সংক্রমণ অবিলম্বে রুখতে কোভিডের ধাঁচে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে। পাশাপাশি মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, ৪, ৫, ৬, ৭; এই চারটি বরোতে ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা সব থেকে বেশি। এই চারটি বরোতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স, মার্কেট এবং পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানান অতীন ঘোষ। ফলত মশা বাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও অনেক বেশি। এই চারটি বরোর মধ্যে ৭ নম্বর বরোতে দিনপিছু গড়ে ১০ থেকে ১২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও তিনি এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন।
আধার কার্ডের নম্বর হারিয়ে গেলেও উদ্ধার করা সম্ভব
এই বৈঠকে তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। মশা বাহিত রোগ প্রতিরোধে কোথায় কোথায় কী ভাবে নজর রাখতে হবে, কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেগুলো তিনি নির্দেশ দেন। তাঁর কথায়, কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সমীক্ষা করে দেখেছে, কলকাতার প্রায় ১৫ শতাংশ বাসিন্দা এখনো করোনার ভ্যাকসিন নেয়নি। শহরে ৯৫ হাজার বাসিন্দাদের ওপর এই সমীক্ষা চালিয়ে ছিল কলকাতা পুরসভা।
সুতরাং, একে কোভিডের সতর্কতা। তার উপরে আবার ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া। পুজোর আগে প্র বল বৃষ্টিতে তাই শহরবাসীর চিন্তা বাড়াচ্ছে।