বঙ্গ নিউস, ২০ অক্টোবর, ২০২০ঃ ছেলে বেলা থেকেই মেয়েটির গানের সঙ্গে পরিচয়। মা ছিলেন আকাশবাণীর শিল্পী , সেই সূত্রে মায়ের কোলে বসেই প্রথম গান এবং গানের প্রতি ভালোবাসা তৈরি কৌসুমী অধিকারীর। গানের জগতে সবসময় একটু অন্যরকমের কাজ করতে চান কৌসুমী। লোকগীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত অথবা হিন্দী গান। বৈচিত্র্য নিজের গানের জন্য বাড়িয়েই চলেছেন তিনি। গতবছর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটি নতুন সত্ত্বা। গান লেখা শুরু করেছেন তিনি। গানের জগতের সঙ্গে পেশাগতভাবে প্রায় ১২ বছর যুক্ত থাকলেও গান লেখা শুরু গত বছর থেকেই। তার লেখা গান অ্যাঞ্জেল ভিডিও থেকে বেরোনোর পরই বিভিন্ন মানুষ সেই গানের প্রশংসা করেছেন এবং সবথেকে বড় প্রাপ্তি হল মানুষ সেই গানটি কৌসুমীর মুখ থেকে শুন্তেও চেয়েছেন বিভিন্ন জায়গায়। আসলে চিরদিন কুমার শানু, অলকা ইয়াগ্নিক, অনুরাধা পড়োয়াল এদের মত মানুষদের গান শুনতে ভালোবাসতেন কৌসুমী। ৮০ বা ৯০ এর সেই দশকে ঢোলকভিত্তিক এই গানগুলো খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে গাঙ্গুলোর মধ্যে সুর ও তালও ছিল প্রচুর পরিমানে। এই জায়গাটাই আকর্ষিত করতো কৌসুমীকে বেশি। তখনকার সময়ে বাঙ্গালীরা ছেলেমেয়ে হিন্দি গান শুনলেই বখে যাচ্ছে এইরকম একটা ধারণা রাখতেন। তাই বেশি এই ধরণের গান বাড়িতে বসে শোনার অসুবিধা ছিল। তবু এই সব গানের সুর ও তালের মত করে একদিন নিশ্চয়ই গান বানাবেন এইরকম একটা ইচ্ছে মনের ভিতর ছিল কৌসুমীর।
সেই ভাবনা থেকেই লেখার কথা মাথায় আসে। বন্ধু অভিষেক কে জানান একটি রোম্যান্টিক গান তিনি তৈরি করেছেন সেই গানে যদি একসঙ্গে গাওয়া যায় তাহলে খুব ভালো হয়। এগিয়ে আসেন অভিষেক। গানের যাত্রায় এবছরের অবশ্য তৈরি হয়েছিল অনেক প্রতিবন্ধকতা। অতিমারীর কারণে নিজের ভালোবাসার মঞ্চের কাছে যেতে পারছিলেন না কেউই। তখনই মাথায় আসে কেমন হয় সকলে মিলে আনন্দ করে একটা পুজোর গান করলে? অভিষেক প্রথম তোলেন কথাটা। সেই প্রস্তাব ভালো লেগে যায় কৌসুমী আর এই গানের যিনি সঙ্গীত পরিচালক সেই সুরজিৎ ঘোষের। রাতারাতি স্টুডিও ভাড়া নিয়ে গান লেখা সুর করা , গান তৈরি করার কাজ চলে। বাংলা তথা ভারতের লিভিং লেজেন্ড কল্যাণ সেন বরাটের সুযোগ্য পুত্র কৌস্তভ সেন বরাটের স্টুডিওতে গান রেকর্ড করা হয়। কৌসুমীর বড় প্রাপ্তি যে স্বয়ং কল্যাণ সেন বরাট এই গানের প্রশংসা করেছেন। শুধু তাই নয়, অনেকটা তাঁর তত্ত্বাবধানে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি গানটিকে। গান তৈরির পরে আসে মিউজিক ভিডিও তৈরির ব্যাপার। এই যে এতদিন আমরা বদ্ধ হয়ে আছি চার দেওয়ালের মধ্যে সেটা থেকে বেরিয়ে কিছু করার কথা ভাবেন কৌসুমী। দুর্গাপুজো খুশির উৎসব। সেই উৎসব সবাই আনন্দ করে উদযাপন করবেন সেটাই স্বাভাবিক। তাই বাংলার ঐতিহ্য ধুতি পাঞ্জাবী এবং লালপাড় সাদা শাড়িতে আনন্দে ভরা একটি ভিডিও বানানোর কথা ভাবেন তারা। যে ভিডিওতে দেখা যায় সবাই মনের আনন্দে ঢাক বাজাচ্ছেন, নাচছেন। কৌসুমী, অভিষেক এর সঙ্গে গানে যোগ দেন শ্রী পার্থ । অসাধারণ সঙ্গীত পরিচালনায় গানটিকে সাজিয়ে তোলেন সুরজিত ঘোষ। সুরজিৎ এর যোগ্য সহযোগিতা ছাড়া এতদুর পৌছনো কোনভাবেই সম্ভব হত না। জানিয়েছেন কৌসুমী। সহজ কথা, মানুষের মনের কথাকেই গানে ধরতে চান কৌসুমী তাই তার লেখা গান মানুষ সহজেই গুনগুন করতে পারবে, গাইতে পারবে। এটাই ধারণা কৌসুমীর। শুভসুর মিডিয়ার ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশিত জয় মা দুর্গা মানুষের মন জয় করে নেবে সহজেই। আরো অনেক নতুন গান নিয়ে আসবেন কৌসুমী পরবর্তী সময়ে কারণ অন্যরকমের কাজ করা মানুষেরা কখনোই থামতে জানেন না…