Home দেশ হুল দিবস: এক পরিবার থেকেই শুরু হল স্বাধীনতার প্রথম আন্দোলন

হুল দিবস: এক পরিবার থেকেই শুরু হল স্বাধীনতার প্রথম আন্দোলন

by banganews
৩০ শে জুন।  হুল দিবস বা সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস। সঠিক কারণ না জেনে এ দিনকে উৎসব ভেবে ফেলার রীতি অনেকদিনের। তবে আদতে এটি কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রাম। ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। সংগঠিত হয়েছিল ১৮৫৫ সালে ।
এটাই ছিল ইংরেজদের দেশ থেকে বহিষ্কার করার প্রথম আন্দোলন । এক পরিবার থেকে ছয় ভাইবোনের (সিধু, কানু, বিরসা, চাঁদ, ভৈরব,আর দুই বোন ফুলমনি এবং ঝানু মুর্মু ) সংগঠিত আন্দোলন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। এই ছয় ভাইবোনের ডাকে এককাট্টা হয়েছিল চারশো গ্রাম। তবে শুধুই যে সাঁওতাল অধ্যুষিত, তা নয়। অন্যান্য নির্যাতিত মানুষও এর অংশী হয়ে উঠেছিল।
বিপ্লব সংগঠিত করার অপরাধে ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দে ২৩ শে ফেব্রুয়ারি কানু মুর্মুকে ফাঁসি দেওয়া হয়।  তার আগে ওই একই অপরাধের সাজা হিসেবে সিধু মুর্মুর বুকে বুলেট এসে বেঁধে।
ভাইয়ের শোকের চেয়েও কানু মুর্মুর কাছে দেশের পরাধীনতার শোক অতি তীব্র। মৃত্যুর আগের মুহূর্তে চিৎকার করে বলেছিলেন— তোমরা আমায় ফাঁসি দিচ্ছো দাও। আমি ৬ বছর পর আবার ফিরে এসে তোমাদের দেশ ছাড়া করবই ।
শহিদ সিধু-কানুর বোন ফুলমনি। দমানো যায়নি তাঁকেও। ইংরেজদের বিরুদ্ধে একাই লড়াই করতে গেলে ১৮৫৫ সালে জুলাই মাসে তাঁকে ধর্ষণ করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জামসেদপুরে লাইন পাড়ে ফেলে রেখে যায় ব্রিটিশ দুষ্কৃতিরা।
তবে না। এই সমাপ্তি কিন্তু পরাজয়ের নয়। উপজাতি বা জনজাতি আন্দোলনের প্রথম বারুদ এটিই। ৩০ জুন। স্বাধীনতার ডাক। কোনও অঙ্ক কষে নয়। এ ডাক অন্তরের। শুধুমাত্র সাঁওতাল বিদ্রোহ আখ্যায় একে একপেশে করে রাখা অন্যায়। সমগ্র আদিবাসী বা দেশের ভূমিপুত্রদের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত গর্বের।
হুল এখনও সমগ্র আদিবাসী সমাজকে বাঁচার পথ দেখায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামী  হতে আহ্বান জানায়, সকল আদিবাসীকে একত্রিত করে। আজও।

You may also like

Leave a Reply!