পটাশপুর,২৯ অগাস্ট, ২০২০ : তিনি কোনও সেলিব্রিটি নন। প্রচারের আলো তাঁদের মত গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের জন্য নয়। ইলেকট্রনিক্স বা সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি হেডলাইন বা ‘ট্রেন্ডিং’ হন না। তবে লাইমলাইট থেকে দূরে থেকেই কয়েকশো মানুষকে রোজ আশার আলো দেখাতে পারেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ২ নং ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকরাপাড়ার বাসিন্দা রতন কুমার সাউ মংরাজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের বই-খাতা-পেন জোগানো থেকে শুরু করে লকডাউনে কাজ হারানোদের খাবার জোগানো, রতনবাবু এখন শুধু তাঁর নিজের গ্রাম বা জেলাই নয়, আশেপাশের জেলার মানুষের কাছেও ঈশ্বরের দূত।
আরও পড়ুন “ছাত্রছাত্রীদের কথা শুনুন” NEET-JEE সমস্যা সমাধানে মমতার সুরেই বললেন সোনিয়া
দু:স্থ পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের আবেদনে তাদের হাতে বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যবই , খাতা-পেন ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেন এই শিক্ষক । ফোনে আবেদন পেলেও সাহায্য করেন অকৃপণ হাতে। এমনকি মাঝেমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে নিজে গিয়ে দিয়ে আসেন বইখাতা। রতনবাবু আজ পর্যন্ত কাউকে খালিহাতে ফেরাননি।
রতন বাবুর বই বিতরণের খবর এখন ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বাইরেও। রতন সাউ জানান, “পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ছাত্র ছাত্রীরাও আমার কাছে ফোন করে বইয়ের আবেদন করে। এই করোনা পরিস্থিতিতে তাদের কাছে বই নিয়ে যেতে না পারলেও তাদের অ্যাকাউন্টে বই কেনার টাকা পাঠিয়েছি।”
আরও পড়ুন রিয়াকে সিবিআই-এর ১০ প্রশ্ন, ৩নম্বরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ
“আমার উদ্দেশ্য কাউকে যেন টাকার অভাবে পড়াশুনা বন্ধ না করতে হয়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন তাই অনেক পরিবারেরই ছেলে মেয়েকে পড়ানোর ক্ষমতা নেই। তাই আমি তাদের হাতে আবেদন মতো বই খাতা পেন তুলে দিই।”
লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রায় ৪০০ পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী ও আমফান ঝড়ে প্রায় ২০০ মানুষের হাতে ত্রিপল তুলে দিয়েছেন শিক্ষক রতন সাউ। এলাকায় সারা বছর আরও অনেক সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকেন রতনবাবু।