নয়াদিল্লি, ২ রা আগস্ট,২০২০ : লাদাখের বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে চীনের সামরিক তৎপরতা কমাতে উদ্যোগী ভারত। প্যাংগং লেকের তীরে ফিঙ্গার রিজিয়নে ভারত-চীন কমান্ডার স্তরের পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হয় এদিন। সামরিক বাহিনী অপসারণ সংক্রান্ত এই আলোচনাটি হচ্ছে মল্ডোতে, যা লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের ওপারে চীন অধিকৃত চুশুল অঞ্চলে। গতরাতেই নির্ধারিত হয় বৈঠকের সময় এবং স্থান। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে লেকের আশেপাশের এলাকায় ২৯ জুনের সামরিক বাহিনী অপসারণের পর থেকে অবস্থার কোনওরকম পরিবর্তন হয়নি। জুন মাসের শেষে চীন সেনা ফিঙ্গার ৪ থেকে পিছু হটে ফিঙ্গার ৫-এ অবস্থান করতে শুরু করে। পিপলস লিবারেশন আর্মি এখনও পর্যন্ত ফিঙ্গার ৫ -এর গভীরতর অংশে এবং সম্প্রসারিত ফিঙ্গার ৮ এর ঢালু অঞ্চলে নিজেদের সেনাছাউনি মোতায়েন রেখেছে। এলওসি ৮ নম্বর ফিঙ্গারের কাছে ঐতিহাসিক ফোর্ট খুরনাক পর্যন্ত ভারতের এলাকা। তবে চীন মনে করে ৪ নম্বর ফিঙ্গার পর্যন্ত অঞ্চল তাদের আওতাধীন। গত এপ্রিল মাস থেকে চীন, ভারতীয় পক্ষের টহলদারি সেনাকে ফিঙ্গার ৪-এ ঢুকতে ক্রমাগত বাধা দেয়। এরই ফলশ্রুতিতে গত ১৫ জুন ভারত ও চীনের মধ্যে গত পাঁচ দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘর্ষ বাধে। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে এখনও পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারসেপ্টর বোট প্যাংগং লেকে মোতায়েন রেখেছে লাল ফৌজ। এই অঞ্চলটি ভারতীয় সেনার শিরিজাপ পোস্টের নিকটেই, যেখানে ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধ হয়েছিল।
আরও পড়ুন গুগল ক্রোমকে আরও সুরক্ষিত করতে যুক্ত হল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনার জনসংযোগ আধিকারিকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন অংশে এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ সেনা অপসারণ সম্ভব হয়নি। চিনের দাবি তারা সীমান্তবর্তী বেশিরভাগ অঞ্চল থেকে ফ্রন্টলাইন ফোর্সকে সরিয়ে নিয়েছে। অথচ ডেপসং সমতল ভূমি, গোগ্রা এবং ফিঙ্গার অংশে চীন সেনার অবস্থান এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন ‘জলে যাবে করোনা’, দাবি রুশ বিজ্ঞানীদের
শান্তি ও সমঝোতার চেষ্টা চলাকালীনই লাদাখের প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকতে প্রত্যেক জওয়ানের জন্য পাঠানো হয়েছে শীতবস্ত্র, অত্যাবশ্যকীয় রসদ, জুতো এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী। চারটি বিদেশি ভেন্ডরের থেকে বিপুল পরিমাণ দ্রব্যের যোগান নেওয়া হচ্ছে যা নভেম্বরের মধ্যেই এসে পৌঁছবে। জানা গিয়েছে, রেশন, কেরোসিন, এফ ও এল (ফুয়েল, অয়েল, লুব্রিকেন্ট) জমা করা হচ্ছে এখন থেকেই। লাদাখের ভয়াবহ শৈত্যপ্রবাহে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় বিদেশি সেনার পাশাপাশি প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করতেও প্রস্তুত করা হচ্ছে ভারতীয় সেনাকে।